Barak UpdatesHappeningsBreaking News
কত্থক নৃত্যে রাজ্যসেরা হলেও সঙ্ঘমিত্রা এখন পড়তে চায় অর্থনীতি
ওয়েটুবরাক, ৮ জুন : কত্থক নৃত্য নিয়ে এগিয়ে যাবে, ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছা সংঘমিত্রা দত্তের। মা-বাবাও মেয়ের ইচ্ছা পূরণে চেষ্টায় ত্রুটি করেননি। স্থানীয় বীণাচ্ছন্দম সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়ে দেন। মাধ্যমিকে বসার আগেই কত্থক নৃত্যে সপ্তম বর্ষে উত্তীর্ণ হয় সে। স্নাতক না হলে অষ্টম বর্ষে ভর্তি হওয়া যায় না বলে আর এগোনো যাচ্ছিল না। তাই বলে নৃত্যশিক্ষাকে বাদ দেয়নি সংঘমিত্রা। বরং একে নিজের স্কুলের পড়ার সঙ্গে জড়িয়ে নেয়। একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির সময় কত্থক নৃত্যকেও বিষয় হিসেবে বেছে নেয়। এরই সূত্র ধরে মঙ্গলবার অসম উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা পরিষদ পরিচালিত উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলে বিষয় ভিত্তিক রাজ্য সেরাদের তালিকায় স্থান করে নেয় শিলচরের রামানুজ গুপ্ত জুনিয়র কলেজের ছাত্রী সংঘমিত্রা। কিন্তু ফের মুশকিল। আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পারফর্মিং আর্টস বিভাগে কত্থক নৃত্য নেই। এ নিয়ে আরও পড়াশোনা করতে হলে তাকে বাইরে যেতে হবে। বাবার অসুস্থতার দরুন এ আবার সম্ভব নয়। অধরচাঁদ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অঙ্কের শিক্ষক নিলয় দত্ত বেশ কিছুদিন ধরে হৃদযন্ত্রের সমস্যায় ভুগছেন। আছে ডায়াবেটিসও। এই অবস্থায় মেয়েকে ভিন রাজ্যে পাঠাতে রাজি নন কেউ। শেষপর্যন্ত ফল প্রকাশের পরই সিদ্ধান্ত, অর্থবিদ্যায় অনার্স নিয়ে সে শিলচরেরই কোনও কলেজে ভর্তি হবে।
তবে কত্থক থেকে সরতে নারাজ সংঘমিত্রা। তার কথায়, একে বিষয় হিসেবে রাখতে গিয়ে নিজে তো বটেই, মা-বাবাও কম খাটেননি। সিলেবাস পেয়ে সবাই চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন। এইসব নৃত্যতত্ত্ব শেখার জন্য বই কোথায়! শেষপর্যন্ত দেবতোষ নাথের লেখা ‘নটবরী নৃত্যতত্ত্ব’ বই সংগ্রহ করা হয়। কিন্তু সে তো বাংলা পড়তে পারে না। সহায়ক হলেন মা সঙ্গীতা দত্ত। বাবা বাংলা পড়ে মাকে শুনিয়েছেন। কত্থকের বিন্দুবিসর্গ না জানলেও ইংরেজি মাধ্যমে পড়ার সুবাদে দেবতোষবাবুর বইয়ের অনেকটাই তিনি মেয়েকে অনুবাদ করে দিয়েছেন। ওই অনুবাদ পড়েই মেয়ে এ বার কত্থকে রাজ্যসেরা। তাই আপাতত অর্থনীতিতে এখন স্নাতক করলেও সংঘমিত্রার ইচ্ছা, ডিগ্রিটা নিয়েই কত্থক নৃত্যের অষ্টম বর্ষে ভর্তি হবে। মাঝে যাই পড়ুক না কেন, শেষে হবে কত্থক নৃত্যের শিক্ষিকা।