Barak UpdatesHappeningsBreaking News
ওষুধ নিয়ে ফেরার পথে বাইক চেকিঙের নামে পুলিশি হয়রানি, ঘরে মৃত্যু শিশুপুত্রের
ওয়ে টু বরাক, ১ জানুয়ারি : মুখ্যমন্ত্রী পুলিশকে মানবিক হতে বলেন, জনতার বন্ধু হওয়ার বার্তা দেন। কিন্তু বাস্তবে একাংশ পুলিশকর্মী যে কতটা নিষ্ঠুর ও অমানবিক হতে পারেন, করিমগঞ্জের একটি গ্রামের ঘটনা তা সামনে নিয়ে এসেছে। দেড় মাসের ছেলের জন্য ওষুধ নিয়ে ফেরার সময় এক ব্যক্তির বাইক আটকে দেন জনৈক পুলিশ কর্মী। অনেক কাকুতিমিনতি ও প্রমাণ দেওয়ার পরও দু’ঘণ্টা থানায় বসে থেকে যখন তিনি ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফিরলেন, তখন আর শিশুপুত্রটি বেঁচে নেই।
ঘটনাটি রাতাবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের পলডহর জিপির টঙ্গিবাড়ি গ্রামের। পেশায় কাঠমিস্ত্রি হিফজুর রহমান কাজিরবাজারের চিকিতসক শওকত আহমেদের কাছ থেকে অসুস্থ ছেলের জন্য ওষুধ নিয়ে ফিরছিলেন। তখনই কাজিরবাজারে কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিক রঞ্জিত সিনহা বাইক সহ হিফজুরকে আটক করেন। অসুস্থ শিশুর কথা বলার পরও পুলিশ কর্তা তাঁকে কলার ধরে টেনে নিয়ে থানায় দু’ঘণ্টা আটকে রাখেন বলে অভিযোগ। এমনকি হিফজুরের বাড়ি থেকে বার বার ফোন এলেও তিনি তাঁকে ছাড়েননি।
হিফজুর সরকারি নিয়ম অনুসারে ফাইন রেখে তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার আবেদন জানালেও পুলিশ কর্তা রাজি হননি। টঙ্গিবাড়ি গ্রামের এক ব্যক্তিকে ফোন করে থানায় নিয়ে এসে হিফজুরের বক্তব্যের সমর্থনে যুক্তি দিলেও কোনও কাজ হয়নি। দু’ঘণ্টা পর পুলিশের ঘেরাটোপ থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়ি এসে দেখেন ছেলের অবস্থা খুব খারাপ হয়ে পড়েছে। সঙ্গে সঙ্গে তাকে মাকুন্দা মিশনারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিতসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। এরপর মৃত ছেলের দেহ টঙ্গিবাড়ি গ্রামে নিয়ে আসার পর এক শোকাবহ পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
এ ঘটনায় অনেকেই পুলিশের অমানবিক ব্যবহারে নিন্দা জানিয়েছেন। কোনও বাইক আরোহীর নথিপত্র পুলিশ তো সরকারি নিয়ম মেনে যাচাই করবেই। কিন্তু যেখানে একটি শিশুর জীবন মরণের সমস্যা জড়িত থাকে, সেখানে পুলিশকে এতোটা অমানবিক হওয়া উচিত নয়। এ বার কি পুলিশ হিফজুরকে তাঁর শিশুপুত্রের জীবন ফিরিয়ে দিতে পারবে ?