Barak UpdatesHappenings
এয়ারপোর্ট থেকে লিংক রোড ট্যাক্সিভাড়া ১২০০ টাকা! দায়সারা তদন্ত পরিবহন বিভাগের
১৩ অক্টোবরঃ শিলচরের কুম্ভীরগ্রাম বিমানবন্দর থেকে লিংক রোডের দূরত্ব মাত্র ২৩ কিলোমিটার৷ বিমানযাত্রীদের ওইটুকু পথের জন্য ট্যাক্সিভাড়া গুনতে হয় ১ হাজার ২০০ টাকা৷ অর্থাৎ কিলোমিটার প্রতি ৫০ টাকা৷ কোভিড তাই বিমানবন্দরের ট্যাক্সিচালকদের কাছে আশীর্বাদ হিসাবেই উপস্থিত হয়েছে৷ পরিবহন বিভাগ পর্যন্ত তাদের ছুঁতে পারে না৷
অতিরিক্ত ট্যাক্সিভাড়া নিয়ে জেলাশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলেন লিংক রোডের বাসিন্দা অমিতাভ দত্ত৷ গত ২১ সেপ্টেম্বর তাঁর কন্যা মুম্বাই থেকে বিমানে কুম্ভীরগ্রামে অবতরণ করেন৷ শুরুতেই আসে প্রটোকল মেনে করোনা টেস্টের ব্যাপার৷ সেখানে নির্দেশ, আগে ট্যাক্সি বুক করে পরে টেস্টের জন্য নাম লেখাতে হবে৷ অমিতাভবাবুর কন্যাও তা-ই করেন৷ কিন্তু ট্যাক্সিচালকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বিস্মিত তিনি! লিংকরোডে ফেরার জন্য ১ হাজার ২০০ টাকা ভাড়া দাবি করা হয়৷ সব চালকের এককথা, ওই ভাড়াই দিতে হবে৷ এর কমে কেউ যাবেন না৷ মুম্বাইয়ে প্রথম ১০ কিলোমিটার ২০৭ টাকা৷ পরের প্রতি কিলোমিটার ১৯ টাকা৷ অর্থাত ওইটুকু দূরত্বে সেখানে তাঁকে দিতে হয় ৪৫৪ টাকা৷ শিলচরে প্রায় তিনগুণ টাকা দাবি করায় তিনি অমিতাভবাবুকে ফোন করেন৷ অমিতাভবাবু তাদের সঙ্গে কথা বললে জানিয়ে দেওয়া হয়, এটাই তাদের রেট৷ পরে এরা এমন এক পরিস্থিতির সৃষ্টি করে যে, ১ হাজার ২০০ টাকা দিয়েও তারা তাকে আনবে না বলে জানিয়ে দেয়৷ শেষে অনুনয়-বিনয় করেই আসতে হয় তাকে৷
জেলাশাসককে চিঠি লিখে অমিতাভবাবু বলেন, ইউনিয়ন একটা দর ঠিক করলেই জনতাকে তা মেনে নিতে হবে? প্রশাসন সেদিকে খেয়াল রাখবে না? পর্যাপ্ত পরিমাণে এএসটিসি-র এসি বাস ওই রুটে চালানোর জন্য তিনি আর্জি জানান৷ অভিযোগ পেয়ে জেলাশাসকের নির্দেশে অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার কে চাংসান জেলা পরিবহন অফিসারকে বিষয়টি তদন্ত করে ১০ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে নির্দেশ দেন৷ জেলা পরিবহন অফিসার এনফোর্সমেন্ট ইন্সপেক্টর ওমপ্রকাশ উপাধ্যায়কে তদন্তের দায়িত্ব দেন৷ উপাধ্যায় তদন্তক্রমে জানান, কুম্ভীরগ্রামে ট্যাক্সি ড্রাইভারদের কোনও ইউনিয়নই নেই৷ ফলে ইউনিয়ন ভাড়া ঠিক করার কথা ঠিক নয়৷ অমিতাভবাবু নির্দিষ্ট ট্যাক্সির নম্বর দিতে না পারায় দোষী চালককে শনাক্ত করা যায়নি৷ তৃতীয়ত, ট্যাক্সিচালকরা অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন৷ উপসংহারে উপাধ্যায় জানান, তিনি তাদের বলে এসেছেন, অতিরিক্ত ভাড়া নিলে এমভি আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷
এখন প্রশ্ন হল, কতটা ভাড়া নিলে যথার্থ, তা কি পরিবহন বিভাগ স্থির করে দিয়েছে? তাহলে কীসের নিরিখে চালকরা বলছেন, অতিরিক্ত নেন না৷ আসলে কুম্ভীরগ্রাম থেকে লিংক রোড আসতে কত টাকা তাঁরা নেন, তদন্ত রিপোর্টে এর উ্ল্লেখ নেই৷ কিন্তু যাত্রীরা ট্যাক্সিচালকদের কাছে কথা বলতে গেলেই তারা যে নিজস্ব ভাড়া চার্ট দেখায়, তাতে উ্ল্লেখ রয়েছে, রাঙ্গিরখাড়ি পর্যন্ত ১ হাজার টাকা৷ লিংক রোড১ হাজার ২০০ টাকা৷ মাসিমপুর ১ হাজার ৩০০ টাকা৷ মেডিক্যাল 1১হাজার ৩০০ টাকা৷ সোনাবাড়িঘাট দেড় হাজার টাকা৷ ধলাই ১ হাজার ৮০০ টাকা, ভাগা ২ হাজার এবং রানিঘাট ১ হাজার ৮০০ টাকা৷ তবে কি উপাধ্যায়বাবুদের কাছে এটাই ন্যায্য ভাড়া? কে দেবে সে সব প্রশ্নের উত্তর! এএসটিসি বাস চালানোর ব্যাপারেও কর্তৃপক্ষ নীরব৷