Barak UpdatesHappeningsBreaking News
আরোগ্য সেতুর প্রধান রূপকার বিকল্প সাহনিই শিলচর এনআইটির সমাবর্তনে প্রধান আকর্ষণ
ওযেটুবরাক, 4 নভেম্বরঃ শুধু শিখলেই হবে না, আমার শিক্ষা সমাজে কোনও প্রভাব ফেলছে কিনা, তাও ভেবে দেখতে হবে। সঙ্গে থাকবে উপার্জনের কথা। তবে নিজে এগোনো যাবে, অন্যকে এগিয়ে দেওয়া যাবে। শুক্রবার শিলচর এনআইটি-র 20-তম সমাবর্তনে সদ্য ডিগ্রিপ্রাপকদের সামনে এই কথাই গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরলেন এই প্রতিষ্ঠানেরই প্রাক্তনী বিকল্প সাহনি। এ বারের সমাবর্তনের ন্যাশনাল বোর্ড অব অ্যাক্রেডিটেশনের চেয়ারম্যান কেকে আগরওয়াল দীক্ষান্ত ভাষণ দিলেও আরোগ্য সেতুর মুখ্য রূপকার বিকল্প সাহনিই ছিলেন কেন্দ্রীয় চরিত্র।
সমাবর্তনের শুরুতেই তাঁকে বিশেষ প্রাক্তনী হিসেবে সংবর্ধিত করা হয়। বিকল্প জানান, তিনি শিলচর এনআইটিতে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়েছিলেন। কিন্তু প্রোগ্রামার হওয়ার স্বপ্ন থেকে নিজের আগ্রহে ওই বিষয়ে জ্ঞান আহরণ করেছিলেন। পরবর্তী সময়ে ওই জ্ঞানই তাঁকে আজকের অবস্থানে পৌঁছে দেয়। কোভিডের সময় আরোগ্য সেতু অ্যাপ তৈরিতেও এই জ্ঞানই কাজে আসে।
মুখ্য অতিথি কেকে আগরওয়ালও সাহনিকেই উদাহরণ হিসাবে তুলে ধরেন। বলেন, একটি বিষয়ে জ্ঞান আহরণই এখন যথেষ্ট নয়, বিবিধ বিষয়ে পাঠ গ্রহণ করতে হবে। তাঁর কথায়, বিশ্ব জুড়ে এখন জ্ঞানের বহর বাড়ছে, এর সঙ্গে তাল মেলাতে না পারলেই মুশকিল।
কোভিডের দরুন দুই বছর অনলাইনে সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এ বারই কোভিড-উত্তর প্রথম অফলাইন কনভোকেশন। বোর্ড অব গভর্নরসের চেয়ারম্যান গৌতম এন মেহরা অবশ্য পর্দাতেই বক্তৃতা করেন।
ডিরেক্টর শিবাজি বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর রিপোর্টে শিলচর এনআইটির বিভিন্ন অগ্রগতির কথা বিস্তারিত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শিলচর এনআইটির ঝুলিতে একটিই পেটেন্ট ছিল, গত পাঁচ বছরে সেই সংখ্যাটি 55-তে পৌঁছেছে। একই ভাবে 10টি রিসার্চ প্রজেক্ট বেড়ে হয়েছে 119। এই সময়ে 23 কোটি টাকার 89টি স্পনসর্ড প্রজেক্ট চলছে। এর মধ্যে 31টির কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। ড্রোনের ওপরও একটি প্রজেক্ট পাওয়া গিয়েছে বলে ডিরেক্টর জানান। বলেন, এখানে মেডিক্যাল টেকনোলজির ওপর পিএইচডি কোর্স রয়েছে।চলতি বছরে 908জন বিটেক, 219জন এমটেক, 70জন এমএসসি, 52জন এমবিএ এবং 317জন পিএইচডি কোর্সে ভর্তি হয়েছেন। এ দিনের সমাবর্তনে 668জন বিটেক ডিগ্রি নিচ্ছেন, 248জন এমটেক, 44জন এমএসসি, 44জন এমবিএ এবং 84জন পিএইচডি ডিগ্রি গ্রহণ করেছেন। তাঁদের মধ্যে ক্যাম্পাস ইন্টারভ্যুতে 91 শতাংশেরই চাকরি হয়ে গিয়েছে।
এ বারের বিভিন্ন পদকজয়ীরা হলেন বিটেক কোর্সে সব বিভাগে সেরা হয়ে স্বর্ণপদক পেলেন কম্প্যুটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র উজ্জ্বল জৈন। নিজ নিজ বিভাগে সেরা হয়ে রৌপ্যপদক পেয়েছেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে সুরজ সিং, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে অঙ্কিতা কর, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে প্রীতম রাজ, ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড কম্যুনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিক্রম কুমার এবং ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড ইনস্ট্রুমেন্টেশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে প্রা্ন্তিক সরকার। এমটেক কোর্সে স্বর্ণপদক লাভ করলেন জিওটেকনিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের আদিল নাজির, ট্রান্সপোর্টেশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের থুঙ্গা বিষ্ণুবর্ধন রেড্ডি, কম্যুনিকেশন অ্যান্ড সিগন্যাল প্রসেসিং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের জ্যোতস্না রানি এবং অ্যাপ্লায়েড কেমিস্ট্রির প্রেরণা রায়। রৌপ্যপদক পেয়েছেন চৌহান রুদ্র অপূর্ব বর্ষা, নাফিসা নাজনিন চৌধুরী, জৈমিনি কুমার দেবলস্কর, বার্মা বিবেক, অনুরাগ শর্মা রায়, নবেন্দু দাস, অমিতাভ মণ্ডল, মৈত্রেয়ী দাস, নবীন ভাট, অসীমজ্যোতি নাথ, কাব্যা পিভি, গীতাঞ্জলি, নয়নমণি বর্মন ও দীপু গোস্বামী। এ ছাড়াও অল রাউন্ড গ্র্যাজুয়েট অ্যাওয়ার্ড জিতলেন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের গীতাক্ষী তেলি। সেরা ডক্টরাল অ্যাওয়ার্ড পেলেন ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের আব্দুল লতিফ।
কালীকৃষ্ণ মৃণালিনী ক্রৌড়ি স্বর্ণপদক পেয়েছেন কম্প্যুটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের রাহুলকুমার গুপ্ত, শাশ্বত পুরকায়স্থ মেমোরিয়াল অ্যাওয়ার্ড পেলেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অরিন্দম খারগরিয়া, শুভঙ্কর পণ্ডিত মেমোরিয়াল অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রীতম রাজ।
ফ্যাকাল্টি অ্যাওয়ার্ডে সম্মানিত হয়েছেন ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড কম্যুনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ড. প্রবীণা পট্টনায়ক।