Barak UpdatesHappeningsBreaking News

এত সিআরপি-পুলিশ! তাঁদের মণিপুরে কাজে লাগানো যেত, লিখেছেন অধ্যাপক দিলীপকুমার দে

//অধ্যাপক দিলীপকুমার দে//

আসামের বরাক উপত্যকার জেলাগুলি প্রধানতঃ বাংলা ভাষাভাষী ( ৮৯℅)। ডিলিমিটেশন কমিশন বসিয়ে এই উপত্যকা সহ বাংলাভাষী প্রধান বিধানসভা আসনের সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছে ‘ডবল ইঞ্জিন’ সরকার। কেবল বিরোধী দল নয়, বাঙালি বিজেপি নেতারাও ক্ষুব্ধ, অসন্তুষ্ট।বিজেপির বাঙালি সাংসদ, মন্ত্রী, নেতারা গুয়াহাটি গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার সঙ্গে দেখা করে আর্জি জানাতে। তাঁদের ধমক দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বের করে দিয়েছেন বলে আজ, ২৭ জুন, গুয়াহাটির টিভি চ্যানেলগুলো সম্প্রচার করছে।


এ দিকে, বরাক উপত্যকার জেলাগুলোতে অবিজেপি দল-সংগঠন গুলো ধর্ম, ভাষা, জাতপাতের ঊর্ধ্বে উঠে সর্বাত্মক বন্ধ পালন করছেন। উপরের নির্দেশ সত্ত্বেও বিজেপি রাস্তায় নেমে বাধা দিচ্ছে না। শত শত সশস্ত্র সিআরপি/পুলিশ গত তিন দিন ধরে শান্তিপূর্ণ উপত্যকায় রোড মার্চ করেছে। অথচ এই উপত্যকার লাগোয়া মণিপুর রাজ্য জ্বলছে মে মাসের তিন তারিখ থেকে। সেখানে এদের কাজে লাগালে আইন শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার সহায়তা হতো।
বাঙালিদের প্রতি বৈষম্য, বঞ্চনা আসামে চৌদ্দ পুরুষ, এমনকি শত শত বৎসর ধরে বসবাস করা বাঙালি হাড়ে হাড়ে বোঝে।


ইংরেজ সরকার ১৮৭৪ খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি থেকে বাংলা ভাষাভাষী কয়েকটি জেলা/অঞ্চল আসামের সাথে জুড়ে দেয় অর্থনৈতিক কারণে। বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির সেই অঞ্চলের মানুষদের এখন নানা অভিধা দেওয়া হয়।
বাংলা দুভাগ হয়নি, তিন ভাগ হয়েছিল, সে কথা পশ্চিমবঙ্গের আধুনিক বাঙালির অনেকে জানেন না। আর এই অংশে আছেন চা-বাগিচার শ্রমিকরা, যাদের পূর্বপুরুষরা এসেছিলেন বাংলা, বিহার, উৎকল অঞ্চল থেকে।


দিল্লির সংসদে ও আসামের বিধানসভায় বেশি সংখ্যায় শাসক দলীয় সদস্য চাই। তাই মূখ্যতঃ বাঙালি অধ্যুষিত অঞ্চল থেকে অংশ কেটে, বিধানসভা আসন নিশ্চিহ্ন করে উগ্র অসমীয়া জাতীয়তাবাদীদের বোঝানো হচ্ছে যে, বিজেপি তাদের স্বার্থ রক্ষা করতেই বাঙালিদের জেতা আসন কমিয়ে দিচ্ছে। জনগণনা, সংখ্যাতত্ত্ব, ভৌগোলিক অবস্থান, যোগাযোগ ব্যবস্থা ইত্যাদিকে পাত্তা না দিয়ে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের ‘ডিলিমিটেশন কমিটি’ দিয়ে এই অপকর্ম করেছে। তাই সব বিরোধী দল, সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন একযোগে এর বিরোধিতা করছে। আজকের (২৭ জুনের) বনধ বরাক উপত্যকায় সম্পূর্ণ সফল।


আমরা আসামের বরাক উপত্যকাবাসীরা ঘৃণা নয়, সৌহার্দ্য চাই, অত্যাচার নয়, শান্তি চাই, বঞ্চনা নয়, সমমর্যাদা নিয়ে বাঁচতে চাই।

(অধ্যাপক দিলীপকুমার দে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সমাজকর্মী, শিলচর টিটি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ৷ সংবাদের সঙ্গের ছবি দুটি তাঁরই তোলা৷)

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker