Barak UpdatesHappeningsBreaking News
উবাদিয়ার বক্তব্যের প্রেক্ষিতে রাঙ্গিরখাড়িতে বিভিন্ন সংগঠনের যৌথ প্রতিবাদী সভা
ওয়েটুবরাক, ৭ ফেব্রুয়ারি : বরাক উপত্যকার বাঙালিদের ‘বাংলাদেশি’ তকমা দিয়ে রোজকান্দি চা-বাগানের সিনিওর ম্যানেজার ঈশ্বরভাই উবাদিয়ার বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আজ শিলচরের রাঙ্গিরখাড়িতে বিভিন্ন সংগঠনের যৌথ প্রতিবাদী সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার শুরুতে ফোরাম ফর সোশ্যাল হারমনির পক্ষে সভার উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করেন অরিন্দম দেব। সিআরপিসিসি-র সভাপতি ড. তপোধীর ভট্টাচার্যের লিখিত বার্তা পড়ে শোনানো হয় সভায়। এর পর একে একে বক্তব্য রাখেন সমাজকর্মী আশু পাল, উত্তরপূর্ব বাংলা সাহিত্য সভার পক্ষে মিহির নন্দী, ভাষা আইন সুরক্ষা সমিতির পক্ষে হিল্লোল ভট্টাচার্য, উনিশে মে উদযাপন কমিটির পক্ষে সাধন পুরকায়স্থ, পিপলস সায়েন্স ফোরামের পক্ষে কৃষাণু ভট্টাচার্য, মার্চ ফোর সায়েন্সের পক্ষে কমল চক্রবর্তী, বিডিএফ-এর পক্ষে জয়দীপ ভট্টাচার্য, সমাজকর্মী সীমান্ত ভট্টাচার্য, সাংবাদিক ও সমাজকর্মী দিলীপ সিংহ এবং হিউম্যান সায়েন্স ফোরাম, নারী মুক্তি সংস্থা, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক মঞ্চ সহ বিভিন্ন সামাজিক সংস্থার প্রতিনিধি ও অন্যান্য সমাজকর্মীরা বক্তব্য রাখেন৷ সভা পরিচালনা ও ধন্যবাদসূচক বক্তব্য রাখেন সভার অন্যতম আহ্বায়ক কোরাস-এর বিশ্বজিৎ দাস। সমাজকর্মী শিক্ষক মন্মথ নাথ আজ প্রয়াত হয়েছেন, তার প্রয়াণে শোক প্রস্তাবও গৃহীত হয়।
বরাকবাসীকে ‘বাংলাদেশি’ হিসাবে অভিহিত করার উভাদিয়ার বক্তব্যের পেছনে এক গভীর রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক স্বার্থ রয়েছে বলে সভা মত ব্যক্ত করে৷ যখন চা-বাগান শ্রমিকরা ন্যূনতম মজুরি, সামাজিক সুবিধা ও বাসস্থানের জমির পাট্টা থেকে বঞ্চিত, যখন বরাকবাসী চাকরির সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত, যখন পেপার মিল ও ডলু চা-বাগানের মতো শিল্পকে ধ্বংস করা হচ্ছে, যখন বাঙালিদের নাগরিকত্বকে পরিকল্পিতভাবে বিপন্ন করে তোলা হচ্ছে, তখন উভাদিয়ার এই বক্তব্যের পেছনে জনগোষ্ঠীগত বিদ্বেষ, স্থায়ী বাসিন্দাদের উচ্ছেদ এবং জমি রাজনেতা, ভূমাফিয়া ও কর্পোরেটদের হাতে তুলে দেওয়ার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার অবৈধ ব্যবসার অভিপ্রায় রয়েছে।
আজকের সভায় প্রত্যেক বক্তাই দাবি করেন যে উভাদিয়াকে বরাকবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়ে তার সামাজিক বিভাজনকারী বক্তব্য নিঃশর্তভাবে তুলে নিতে হবে, অন্যথায় প্রশাসনকে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। উপস্থিত প্রতিটি সংগঠন তাদের এই দাবি আদায়ে প্রয়োজনে বৃহত্তর যৌথ আন্দোলন গড়ে তোলার ঘোষণা করেন এবং উভাদিয়ার এই সামাজিক ও আইনি অপরাধের বিরুদ্ধে যৌথভাবে জেলা আয়ুক্ত ও পুলিশ সুপারকে স্মারকপত্রও প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় উপস্থিত ছিলেন সুরজিৎ সোম, বাহার আহমেদ চৌধুরী, হারাধন দত্ত, হৃষিকেশ দত্ত, অজয় কুমার রায় , ফারুক লস্কর, স্নিগ্ধা নাথ, সুকল্পা দত্ত, আদিমা মজুমদার , রূমা দেবনাথ, খাদেজা বেগম, মৃণাল কান্তি সোম, অরূপ বৈশ্য, মানস দাস,সৌরভ রায় , বিকি লস্কর, নীলু দাস, অভীক দাস, তমোজিৎ সাহা, সমীরণ চৌধুরী প্রমুখ।