Barak UpdatesIndia & World UpdatesHappeningsAnalyticsCultureBusinessTourismBreaking News
উনিশের প্রেক্ষিতে বাংলা ও বাঙালির ভবিষ্যৎ- বাস্তবের আয়নায়, লিখেছেন দেবযানী চৌধুরী
বাংলা ও বাঙালির ভবিষ্যৎ কী? ইংরেজির সঙ্গে যুদ্ধ করে কি টিকে থাকতে পারবে বাংলা? —-বিশ্বায়নের যুগে উনিশ-একুশের উত্তরাধিকারীদের এই প্রশ্নগুলো আমাদের ভাবায়। আমরা উৎকন্ঠিত হই। কিন্তু অতীত ইতিহাসে ফিরে তাকালে দেখবো, ১২০৩ সাল থেকে১৮৩৭ সাল অব্দি বৃহত্তর বাংলার রাষ্ট্রভাষা ছিল ফারসি। ১৭৫৭ সালে ব্রিটিশ শাসনের সূত্রপাত বাংলায়। এরপরও দীর্ঘ আশি বছর সরকারি ভাষা ছিল ফার্সি। অভিজাত বাঙালিরা তখন নাকি বাংলা ভাষার চর্চা করতেন । তারপরও বাংলা ভাষার মৃত্যু ঘটেনি। কারণ বাংলা ছিল সাধারণ মানুষের জীবন চর্যার ভাষা। এই সাধারণ অন্ত্যজ শ্রেনীর মানুষই বাংলা ভাষার অন্যতম প্রতিনিধি। তারা তখনও বাংলাকে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন। ভবিষ্যতের পৃথিবীতেও রাখবেন। তারাই বাঙালি ও বাংলা ভাষার প্রকৃত উত্তরাধিকারী।
বিশ্ব দরবারের দিকে তাকালে এখনো আমরা দেখছি, মাতৃভাষা হিসেবে বিশ্ব তালিকায় বাংলার স্থান পঞ্চম। চার মহাদেশে ত্রিশ দেশের শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষা, সাহিত্য-সংস্কৃতি নিয়ে গবেষণা হচ্ছে। গবেষকদের মতে, বাংলার ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোন কারণ নেই। ত্রিশ কোটি মানুষের ভাষা হারিয়ে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। বিশ্বায়ন, প্রযুক্তির বিকাশ , মুক্ত বাজার, আন্তর্জাল সংস্কৃতি ইত্যাদির কারণে আমাদের সামনে অনেক নতুন শব্দ চলে আসছে। একটি ভাষার শব্দ ভান্ডারে অনেক শব্দ হারিয়ে যাবে , আবার অনেক নতুন শব্দ সংযোজিত হবে, এটাই স্বাভাবিক। এর জন্য যে বাংলা বিলুপ্ত হয়ে যাবে, তা ভাবার কারণ নেই।
এই বরাক বাংলায় এবারের উনিশে আমাদের প্রাপ্তি– আসামের অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডারে উনিশ স্থান পেয়েছে উদযাপন দিবস হিসেবে । এই প্রাপ্তিও এসেছে আন্দোলনের পথ ধরে। বাঙালি হিসেবে এই আন্দোলনের সামান্য একজন অংশীদার ছিলাম আমিও। আমাদের উচ্চতর মাধ্যমিক সংগঠন ছিল এই আন্দোলনের হোতা। সঙ্গে ছিল বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন, আকসা সহ অনেক সংগঠন। ২০১৭ সালের ঘটনা। আসামের অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার তৈরি করে আসাম উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা পরিষদ, সেবা ও এসসিইআরটি৷ ক্যালেন্ডারের খসড়া তৈরির পর সেটি পাঠানো হয় শিক্ষক সংস্থাগুলোর কর্মকর্তাদের কাছে অনুমতি স্বাক্ষরের জন্য। আমি সংগঠনের একজন সাধারণ সদস্য হয়েও সম্পাদকের কাছে প্রথম প্রশ্ন রেখেছিলাম — উনিশ কেন অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডারে স্থান পেল না? কেন রবীন্দ্র জয়ন্তী অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডারে উদযাপন দিবস থেকে উঠে গেল? কেন পুজোর ছুটি কমে চারদিন হয়ে গেল? নির্বিবাদে কেন আমরা এই অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডারকে মেনে নেব? প্রতিবাদে মুখরিত হয় আমাদের সংগঠন পাশে দাঁড়ায় বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন, আকসা, ভাষা আইন সুরক্ষা সমিতি, রাজ্য কর্মচারী পরিষদের মত সংগঠনগুলো।
সেসময় শিলচরের জনপ্রতিনিধিও বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করলেন এ নিয়ে। তাঁর কথায়, উনিশের ছুটি মানে বিনোদনের জন্য ছুটি চাওয়া। তাঁর মন্তব্যে শোরগোল পড়ে গেল বরাক বাংলায়। আমরা অনেকেই তখন ফেসবুকে লিখেছি এ নিয়ে। একজন জনপ্রতিনিধি যখন এরকম মন্তব্য করেছিলেন, তখন কিন্তু কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ, কৃষ্ণেন্দু পাল, পরিমল শুক্লবৈদ্যরা আমাদের সংগঠনের দাবির সমর্থনে ছিলেন। এরই ফলশ্রুতিতে পরের বছর বরাকের জন্য পৃথকভাবে উনিশে মে আর রবীন্দ্র জয়ন্তীকে উদযাপন দিবস হিসেবে অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডারে স্থান দেওয়া হয়। নতুন বছরের অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডারে তো উনিশে মে ভাষা শহিদ দিবস হিসেবে স্থান পেয়েছে । সম্মিলিত আন্দোলনের পথ ধরেই দাবি পূরনের সাফল্য আসে। আগামী দিনেও হয়ত এরকম কোন সরকারি চাপ এলে আমরা সম্মিলিতভাবে মুক্তির পথ খুঁজে নেব।
কিন্তু আমাদের চারপাশে বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা যারা বাংলা ভাষার ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন, তারা কি সমস্যার গোড়ায় পৌঁছতে পারছি? আমরা এরজন্য বাংলা মাধ্যম স্কুলের বেহাল অবস্থা, ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের প্রসার, বর্তমান প্রজন্মের আন্তর্জাল প্রীতি, প্রযুক্তি আসক্তি- এসবকে দোষী ঠাউরাচ্ছি। কটন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক স্তর থেকে বাংলা তুলে দেওয়ায় আমরা উদ্বেগে আকুল হয়ে আমরা একে অপরের দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলছি। কিন্তু বাস্তবের ছবিটা আমরা কেউ বোঝার চেষ্টা করছি না। আমার রাজ্য কিংবা আমার ঈশান বাংলার কথাই ধরা যাক। প্রাইভেট ইংরেজি মিডিয়াম থেকে সরকারি বাংলা মাধ্যম স্কুলের সংখ্যা আমার বরাক বাংলায় অনেক বেশি। সরকারি স্কুলগুলোতে ছাত্রসংখ্যাও অনেক বেশি প্রাইভেট স্কুলগুলোর থেকে। প্রচুর ছাত্র-ছাত্রী প্রতি বছর এসব সরকারি স্কুলগুলো থেকে পাশ করে বেরোচ্ছে। প্রচুর সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী ভাল রেজাল্টও করছে। তার মানে কি যারা সরকারি বাংলা মাধ্যম স্কুলগুলোতেই পড়ছে, তারাই বাংলাকে জানছে। তারাই বাংলার ধারক-বাহক।
আর ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়ছে যারা, তাদের মাতৃভাষা বিমুখতার জন্যই বাংলা আজ বিপন্নের মুখে। একদম না। বাংলা স্কুলে পড়লেই বাংলাকে জানা হয় না। বাংলা হোক কিংবা ইংরেজি, কোন মাধ্যম স্কুলে পড়ার সঙ্গে ভাষা-সাহিত্য-সংস্কৃতি-সংস্কৃতি প্রীতির কোন যোগ নেই । বাংলা আজ অব্দি অর্থকরী ভাষায় পরিণত হতে পারেনি। তাই ছেলেমেয়েদের প্রতিষ্টার লড়াইয়ে কোন মাতৃভাষা সাহিত্য জ্ঞান কোনো কাজে আসছে না। সেখানে ইংরেজি দরকার। সব ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎ কেরিয়ার তো আর বাংলা ভাষা-সাহিত্য হতে পারে না। উচ্চ মাধ্যমিক ফাইনাল পরীক্ষার উত্তরপত্র নিরীক্ষণ করতে গিয়ে যে অভিজ্ঞতা হচ্ছে, এতে দেখলাম জোনে সবচেয়ে বেশি বাংলা আর অ্যাডভান্স বাংলার উত্তরপত্র পরীক্ষণের জন্য আসছে। এই উত্তরপত্রগুলোর নব্বুই শতাংশ ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার। এরমধ্যে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের পড়ুয়াদের বাংলা উত্তরপত্রও প্রচুর রয়েছে। কারণ আসাম বোর্ডের দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণি অব্দি মাতৃভাষা পড়ার সুযোগ রয়েছে।
এখন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র যেভাবে তৈরি হয়, আর যেভাবে উদারতার সঙ্গে পরীক্ষকেরা উত্তরপত্র নিরীক্ষণ করেন, তাতে নম্বর তোলা এখন আর আগের মত কঠিন থাকেনি। সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরাও সহজে ভাল নম্বর তুলতে পারছে। এই ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে সামান্য একটা অংশ স্নাতক স্তরে গিয়ে বাংলা ভাষা-সাহিত্যকে অনার্স হিসেবে রাখছে। ব্রিলিয়ান্টরা সাধারণত মাতৃভাষাকে উচ্চ শিক্ষার বিষয় হিসেবে বেছে নেয় না। তাই দেখা যায়, সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের জন্যই বাংলা ভাষা সাহিত্যটা বরাদ্দটা থাকে। তাছাড়া সব ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎ লক্ষ্য তো আর বাংলা ভাষা সাহিত্যের শিক্ষকতা বা গবেষণা হতে পারে না। হয়ত এসব কারণের জন্যই কটন বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতক স্তরে বাংলা অনার্সের ছাত্র-ছাত্রী পায়নি। যার দরুন বন্ধ করে দিতে হলো বিভাগটি।
টেট পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্রচলনের পর থেকে দেখা যাচ্ছে, বাংলা ওখানে মার খাচ্ছে বাংলা বিষয় শিক্ষকের টেট পরীক্ষার্থীরা। বাংলা ভাষা সাহিত্যের উপর শুধু ভিত্তি করে টেট পরীক্ষাটা হলে হয়ত আমরা কিছু টেট উত্তীর্ন কিছু ভবিষ্যতের বাংলা শিক্ষক পেতাম। আমার তো মনে হয় , শুধু বাংলা নয়, হুমকির মুখে অসমিয়া-মনিপুরি-বড়ো- খাসির মতো সব মাতৃভাষাগুলো। রাজ্যভাষা অসমিয়া হোক, কিংবা বরাকের সরকারি ভাষা বাংলা হোক, আমরা যাদের একটু সামর্থ্য আছে, তারা ছেলেমেয়েকে প্রাইভেট স্কুলে ভর্তি করাতে বাধ্য। সরকারি স্কুলগুলোর বেহাল অবস্থার দায় শুধু শিক্ষকের নয়। সরকারি অব্যবস্থার। পরিকাঠামো নেই, শ্রেনী কক্ষ নেই, ডেস্ক-বেঞ্চ নেই, এক ক্লাসে শখানেক শিক্ষার্থীর ভিড়। ছাত্র আছে তো শিক্ষক নেই। শিক্ষক আছে তো ছাত্র নেই। পরীক্ষা কাঠামো ঠিক নয়। যে পরিপার্শ্ব থেকে সরকারি স্কুলে শিক্ষার্থীরা আসছে, সেই পারিপার্শ্বিকে পড়াশোনার পরিবেশ নেই। নেই তাদের শিক্ষা নিয়ে কোন সচেতনতা। ছেলে-মেয়েকে স্কুলে পাঠিয়েই সেসব অভিভাবকদের দায়িত্বের ইতি। সেখানে কোন সামর্থ্য থাকা অভিভাবক চাইবেন, ছেলেমেয়েকে চাইবেন সরকারি স্কুলে পাঠাতে ? ইংরেজি যেখানে কেরিয়ার গড়ার জন্য , একান্ত জরুরি, সেখানে অভিভাবকরা তো চাইবেনই, তাদের ছেলেমেয়ে ইংরেজি স্কুলে পড়ুক। তাই সামর্থ্যবান অসমিয়া ছেলেমেয়েদের অভিভাবকরাও তাদের ছেলেমেয়েকে অসমিয়া মাধ্যম সরকারি স্কুলে না পাঠিয়ে ইংরেজি মাধ্যম প্রাইভেট স্কুলে পাঠাচ্ছে।
ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়াশোনা করলে মাতৃভাষা -সংস্কৃতি প্রীতি থাকবে না, সেটা কোন যুক্তি হতে পারে না। যদি এটা বলা যায়, মাতৃভাষা সাহিত্য -সংস্কৃতি চর্চার আসক্তি কমছে আজকের ছেলেমেয়ের। তা সে কোন কালে একশ শতাংশ ছেলেমেয়ে মাতৃভাষা সাহিত্য সংস্কৃতি চর্চা করেছে। যখন প্রাইভেট ইংরেজি মাধ্যম স্কুল ছিল না, তখনও করেনি। এখনও করছে না। সেকালেও একাংশ করেছে, একালেও একাংশই করছে। যারা করছে না, তাদের আসক্তি হয়ত অন্য কোন ক্ষেত্রে। অন্য কোন পরিসরে। জ্ঞানচর্চার পরিধিটা তো বিশাল। সেই ক্ষেত্রটাকে , সেই পরিসরটাকে তো আমরা আর ছোট করে দেখতে পারি না। আমরা যারা বরাক বাংলা, পশ্চিমবাংলা কিংবা ত্রিপুরার বাঙালি, আমাদের ছেলেমেয়েরা যে পরিপার্শ্বে জন্মগ্রহণ করছে, বেড়ে উঠছে, তাদের মন- মননে, অস্তিত্বে বাঙালিয়ানা। সংস্কৃতিতে বাঙালিয়ানা। তাই তারা বাংলা সাহিত্য হয়ত তেমন পড়েনি, কিন্তু রবীন্দ্রনাথকে চেনে। এক কলি হলেও রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইতে পারে।
বাঙালিরা ছড়িয়ে আছেন বিশ্বের নানা প্রান্তে। তারা যেখানেই গেছেন বাংলা ভাষাকেই ছড়িয়ে দিয়েছেন। আমাদের ছেলেমেয়েরা যারা প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে ছড়িয়ে পড়ছে দেশ- বিদেশে , তারাও বাংলাকে বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠিত করতে অংশীদার হবে। গর্বিত বাঙালি হিসেবে নিজেকে পরিচিত করব। আমরা যাদের অন্ত্যজ শ্রেণির বলি, আমাদের ছেলেমেয়েদের চাইতে তাদের ছেলেমেয়েরা আরো অনেক বেশি বাঙালি । অনেক বেশি শেকড়ের সঙ্গে, সংস্কৃতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। আমাদের আত্মপরিচয় মূলত তারাই। তাই ৬১ এর আন্দোলনের ইতিহাস ঘাঁটালে দেখবো, এই আন্দোলনে সত্যাগ্রহীদের যারা শহিদ হয়েছিলেন, তাদের অনেকেই শ্রমিক শ্রেনীর। কিন্তু উনিশ এলে আমরাই শুধু উনিশের ধারক-বাহক হিসেবে নিজেদের পরিচিত করে গর্বিত বোধ করি। ওরা কিন্তু কখনওই বাঙালিত্বের পরিচয়ের লড়াইয়ে নেই।
উনিশ এলে, একুশ এলে বাংলার ভবিষ্যত নিয়ে আমরা যারা উৎকন্ঠিত, তাদের বলবো, বিভাজনের নীতিতে জড়িয়ে , সব দোষ নন্দ ঘোষ, সেই সরকারের উপর সব দায়ভার চাপিয়ে দিয়ে আত্মতুষ্টিতে ভোগাটা বোকামি বৈ কিছু নয়। আমাদের ছেলেমেয়েরা পড়ছে ইংরেজি স্কুলে, সেই আমরাই আঙ্গুল তুলছি অন্যজনের দিকে। আমি বাংলার গান গাই, বাংলায় গান গাই ‘– এর সুরে সুরে আন্দোলিত হয়ে শহিদ বেদিতে মাল্যদান করে , বক্তৃতায়-গানে-নাচে-কবিতায়-নাচে উনিশের উত্তরাধিকার হিসেবে জাহির করতে গিয়ে অন্ত্যজ শ্রেণীকে ব্রাত্য করে রাখছি। ওদের ছেলেমেয়েদের মধ্যেও প্রচুর প্রতিভা লুকিয়ে আছে। আমরা শুধু সেই আমাদের ছেলেমেয়েদের উনিশের অনুষ্টানের অংশীদার করছি। ওদেরকে ছেলেমেয়েকে দূরে সরিয়ে রাখছি। আমাদের ছেলেমেয়েদের বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতির চর্চা করাচ্ছি বলে আমরা আহ্লাদিত। আমরা গর্বিত শুধু এই ভেবে যে , আমাদের ছেলেমেয়েরাই শুধু উনিশ-একুশের উত্তরাধিকার। বাংলা আর বাঙালির ভবিষ্যৎ শুধু আমাদের ছেলেমেয়ে নিয়ে নয়। অন্ত্যজ ছেলেমেয়েদের মধ্যেও বেঁচে থাকবে উনিশ । বেঁচে থাকবে বাঙালি।