NE UpdatesHappeningsBreaking News

উত্তর-পূর্ব জুড়ে বন্যা, মেঘালয়ে মৃত ৫

ওয়েটুবরাক, ১৯ জুন : উত্তর-পূর্বের রাজ্যসমূহে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ ৷ এই সময়ে অসমের ১৩ জেলা প্লাবিত৷ মেঘালয়ে হড়পা বান ও ধসে ৫ জনের প্রাণহানি ঘটে৷ সিকিমে বন্যা ও ভূমিধসে বহু পর্যটক আটকে পড়েছিলেন৷ তাঁদের উদ্ধারে সেনা অভিযান চলছে৷ এই ধরনের বৃষ্টিপাত আরও দুই-একদিন হবে বলে আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাসে মানুষের উৎকণ্ঠা বেড়ে গিয়েছে৷
অসমে যোরহাটে ব্রহ্মপুত্র নদী বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে৷ রাজ্যের অন্যান্য নদনদী, শাখানদী, উপনদীগুলিও জলে টইটুম্বুর৷ কপিলি নদীর জলে নগাঁও জেলার কামপুর প্লাবিত৷ কামরূপ জেলার বিভিন্ন এলাকায় পুটিমারির জল ঢুকে পড়েছে৷
রাজ্য দুর্যোগ মোকাবিলা কর্তৃপক্ষ জানায়, অসমের ১৩ জেলার ৪৩ হাজার মানুষ বন্যাক্রান্ত৷ শনিবার গুয়াহাটিতে ধসচাপায় একজনের মৃত্যু হয়েছে৷

গুয়াহাটিতে ভরলুর গার্ডওয়াল ভেঙেছে৷ কিছুদিন আগেই সেটি নির্মাণ করা হয়েছিল৷ পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী অশোক সিংঘল এ দিন অনিলনগরে গিয়ে ভাঙনস্থল পরিদর্শন করেন৷ তিনি দ্রুত গার্ডওয়াল পুনর্নির্মাণ হবে বলে আতঙ্কিত এলাকাবাসীকে আশ্বস্ত করেন৷ রাজ্যের বহু জায়গায় নদীবাঁধে ফাটল ধরেছে৷ কিছু কিছু স্থানে বাঁধ ভেঙে নদী গ্রামের পর গ্রাম ভাসিয়ে এগিয়ে চলেছে৷ বহু সড়ক-সেতু প্লাবিত হওয়ায় এলাকাবাসী যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন৷

মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা গত সপ্তাহেই পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে জেলাশাসকদের বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য তৈরি থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন৷ পার্শ্ববর্তী রাজ্যের জলস্রোতের দিকেও নজর রাখতে বলেছেন৷ এর পরই বিভিন্ন জেলায় সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী, রাজ্য দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীকে সতর্ক করে দেওয়া হয়৷
মেঘালয়ের পশ্চিম খাসি পাহাড়ে হড়পা বান ও ধসে মারা গেল ২ নাবালক-সহ ৫ জন। পুলিশ জানায়, পিনডেনগ্রেই এলাকা ধসে বাড়ি চাপা পড়ে ১০ ও ১৫ বছরের দুই ভাইবোন মারা যায়। পরে ধস সরিয়ে তাদের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ওয়াহ ব্লেই নদীতে বৃষ্টির মধ্যে মাছ ধরতে গিয়ে জলের তোড়ে ভেসে যান তিনজন। তাদের দেহের সন্ধান চলছে। এ ছাড়া অন্য একটি ঘটনায় পূর্ব খাসি হিলের মৌসিনরামে পাহাড় থেকে খাদে পড়ে যায় একটি ট্রাক। উদ্ধার অভিযান চালিয়ে চারটি দেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

মেঘালয়ের সোনাপুরে জাতীয় সড়কের ওপর দিয়ে ধসস্রোত অব্যাহত থাকায় বেশ কিছুদিন ধরে ওই পথে যান চলাচল প্রায় বন্ধ রয়েছে৷ ধস সরিয়ে কখনও রাস্তা খোলা সম্ভব হলেও পরক্ষণেই পাহাড় থেকে জল-মাটি-কাদা ছুটে চলে সড়কের ওপর দিয়ে৷ এর দরুন বরাক উপত্যকা, ত্রিপুরা ও মিজোরাম সড়কপথে বাইরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন৷ ফলে রাজ্যগুলিতে পণ্যমূল্য ক্রমে বাড়ছে৷

সিকিমে বন্যা ও ধসে আটকে পড়া পর্যটকদের উদ্ধার অভিযান রবিবারও অব্যাহত রয়েছে৷ সেনাবাহিনীর ত্রিশক্তি কোর এ দিন উত্তর সিকিমের চুংথাং এলাকা থেকে ৩০০ জনকে তুলে আনে৷ তাদের খাবারের ব্যবস্থা করে৷ পরে গ্যাংটকের দিকে রওয়ানা করায়৷ সে সময় একজন অসুস্থ হয়ে পড়লে জওয়ানরাই অ্যাম্বুলেন্স ডেকে সেনা হাসপাতালে নিয়ে যান৷ শুক্রবার আচমকা বন্যায় ৩৫০০ পর্যটক উত্তর সিকিমের বিভিন্ন অংশে আটকে পড়েছিলেন৷ নদীর জল উপচে পশ্চিম সিকিমেরও বহু এলাকা প্লাবিত৷ ২৬টি সেতুর ওপর দিয়ে জল প্রবাহিত হচ্ছে৷ প্রাকৃতিক দুর্যোগের দরুন বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডার প্রস্তাবিত সিকিম সফর বাতিল করা হয়েছে৷

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker