Barak UpdatesBreaking News
আহত মহিলাও নিগ্রিমসে, রাঙ্গিরখাড়ির ‘দুর্ঘটনার’ সিসিটিভি ফুটেজ পুলিশের হাতে
১৩ নভেম্বর : গত ৫ নভেম্বর দুর্ঘটনায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী সুজিত দাসের মৃত্যুর তদন্তে নেমে পুলিশের হাতে যেমন নতুন সূত্র এসেছে, তেমনি পুরো ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনীতির জল ক্রমশ ঘোলা হচ্ছে। পুলিশের হাতে হঠাৎ করেই দুর্ঘটনার একটি সিসিটিভি ফুটেজ এসেছে। এই ফুটেজের সূত্র ধরেই পুলিশ জানিয়েছে, ওইদিনের দুর্ঘটনায় তরণী রোডের বাসিন্দা বাইক চালক সুজিত দাসকে কেউ মারধর করেনি। বরং দুর্ঘটনার পরই একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে সুজিতকে শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। দুর্ঘটনায় আহত অন্য বাইক আরোহী অভিজিত পাল ও তার স্ত্রী রূপা পালকে একটি অটোরিকশা করে মেডিক্যাল পাঠানো হয়। প্রসঙ্গত, দুর্ঘটনার পর জখম সুজিতকে শিলচর থেকে শিলংয়ের নিগ্রিমসে পাঠানো হলে সেখানে ৭ নভেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়। এদিকে, সোমবার সন্ধ্যায় আহত রূপা পালের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকেও শিলংয়ের নিগ্রিমসে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে, ৫ নভেম্বরের দুর্ঘটনা ও এর দু’দিনের মাথায় সুজিতের মৃত্যুর পর তাঁর মরদেহ নিয়ে রাঙ্গিরখাড়িতে অবরোধের ঘটনায় তরণী রোড ও শিব কলোনির বাসিন্দাদের অভিযোগ ও পালটা অভিযোগে রাজনৈতিক হাওয়াও গরম হতে শুরু করেছে। আর এতে বিষয়টি ক্রমশ জটিল হচ্ছে। অভিজিৎ পালের বাইকে সুজিত দাসের বাইকের ধাক্কা লাগার পর শিব কলোনির বাসিন্দারা সুজিতকে মারধর করেছেন বলে যে মামলা দায়ের করা হয়েছে, তা খণ্ডন করেন শিব কলোনির মানুষ। তাঁরা বলেছেন, দুর্ঘটনাটি রাঙ্গিরখাড়ি ইন্ডাসইন্ড ব্যাংকের সামনে হয়েছে, শিব কলোনিতে নয়। তখন সেখানে বহু মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
তাদের কথায়, দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে আশপাশের মানুষ দৌড়ে সেখানে যান। ছুটে যান ২০ নং ওয়ার্ডের পুর সদস্য সজল বণিকও। সবার সাহায্যেই একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে সুজিতকে মেডিক্যালে পাঠানো হয়। তাঁরা বলেন, তখন কাউকে মারধরের পরিস্থিতি ছিল না।
তারা আরও বলেন, মৃত সুজিতের পরিবারের পক্ষ থেকে যে মামলা দায়ের করা হয়েছে, তাতে বলা হয়, বাইকের ধাক্কায় আহত রূপা পালের ভাই ও তার সঙ্গীরা সুজিতকে মারধর করেছেন। কিন্তু এলাকার বাসিন্দারা বলেন, রূপা পালের কোনও ভাই নেই। এতেও পরিস্থিতি অনেকটা জটিল হয়ে উঠেছে। তাদের কথায়, ৭ নভেম্বর মৃতদেহ নিয়ে সড়ক অবরোধের সময়ও প্রতিবাদকারীরা পুর সদস্য ও শিব কলোনির বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়েছেন। এতেও রাজনীতির প্রভাব দেখছেন তারা।
বিপরীতে তরণী রোডের বাসিন্দাদের অভিযোগ, দুর্ঘটনাটি হয়েছে শিব কলোনিতে। অভিজিত পালের বাইকে ধাক্কা লাগায় সুজিতকে মারধর করেছেন শিব কলোনির কিছু বাসিন্দা। বিজেপি ১১০ নং বুথ সভাপতি রাজা দত্ত অভিযোগ করেন, পুর সদস্য সজল বণিক এই মৃত্যুকে রাজনীতিকরণ করেছেন। পাশাপাশি এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে একে অন্যের বিরুদ্ধে বিরূপ মনোভাবের সৃষ্টি করছেন। সজল বণিকও একই অভিযোগ এনে বলেন, কিছু সংখ্যক লোক বিষয়টি নিয়ে নোংরা রাজনীতি করছে। তিনি জানান, পুলিশের সঙ্গে কথা বলে তিনি পুরো ঘটনার উপযুক্ত তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। আবার একাংশ মানুষ মনে করছেন, ময়না তদন্ত হলেই পুরো ঘটনার সত্যতা বেরিয়ে আসবে।