Barak UpdatesHappeningsBreaking News
আসাম বিশ্ববিদ্যালয় ও স্বাস্থ্য বিভাগের মধ্যে স্বাক্ষরিত হল মউ
ওয়েটুবরাক, ৯ আগস্ট: জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন স্তরে উৎকর্ষতার মাপকাঠিতে উত্তীর্ণ হওয়া স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও স্বাস্থ্য পরিসেবায়
নানাভাবে সহযোগিতার জন্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানসমূহকে সম্মানিত করল কাছাড় জেলা প্রশাসন। শুক্রবার শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রেক্ষাগৃহে এক জাঁকজমক অনুষ্ঠানে এই সম্মাননা প্রদান করা হয়। পাশাপাশি স্বাস্থ্য বিভাগ ও আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এক মউ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে স্বাক্ষর করেন ভারপ্রাপ্ত নিবন্ধক মনোজ কুমার দে ও জেলা স্বাস্থ্য সমিতির চেয়ারম্যান তথা জোলাশাসক রোহন কুমার ঝাঁ। চুক্তি অনুযায়ী যৌথভাবে রক্ত দান, স্বাস্থ্য সহায়ক ‘আভা কার্ড’ ও মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা ইত্যাদি বিষয়ে উভয়ে যুগ্মভাবে কাজ করবে। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রোহান কুমার ঝাঁ বলেন, তিনটি ক্ষেত্রে জাতীয় পর্যায়ে কাছাড় জেলার স্বাস্থ্য বিভাগ উল্লেখ্যযোগ্য ছাপ রাখতে সক্ষম হয়েছে। যা প্রকৃত প্রশংসনীয়। তিনি উল্লেখ করে বলেন, ন্যাশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সার্টিফিকেশন (এনকোয়াস) পেয়েছে কাছাড় জেলার ৬টি প্রতিষ্ঠান। সারা আসামে এর সংখ্যা ৪১টি। লেবার রুম কোয়ালিটি ইমপ্রোভমেন্ট ইনিশিয়েটিভ বিভাগের গুনগত মানদন্ড সফলতার সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছে কাছাড় জেলার অসামরিক হাসপাতাল। অসমের মধ্যে এই মানদন্ড ছুঁয়েছে ২২টি। এছাড়া অসামরিক হাসপাতালের রক্ত কেন্দ্রের সফলতা নিয়ে গর্ববোধ করে জেলাশাসক বলেন, উত্তরপূর্ব রাজ্যগুলোর মধ্যে প্রথম এবং একমাত্র সরকারি রক্ত কেন্দ্র হিসেবে শিলচর সিভিল হাসপাতালের ব্লাড সেন্টার ন্যাশনাল এক্রিডিয়েশন বোর্ড ফর হসপিটালস এন্ড হেল্থ কেয়ার সংশাপত্র আদায় করে নিতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়াও তিনি উল্লেখ করে বলেন, জেলার ১০০টি হাসপাতাল কায়াকল্প প্রকল্প লাভ করেছে। যা স্বাস্থ্য কর্মীদের নিরলস পরিশ্রমের জন্যই এই সফলতা এসেছে। এরজন্য সংশ্লিষ্টদের সবাইকে ধন্যবাদ জানান এবং এই উৎকৃষ্ট পরিষেবার ধারা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান রোহন কুমার ঝাঁ। এছাড়াও গত স্বাস্থ্য উৎসবে কাছাড় জেলা রাজ্যসেরা হওয়ার ব্যাপারটিও বক্তব্যে উল্লেখ করেন জেলাশাসক। এদিনের অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলার যুগ্ম স্বাস্থ্য সঞ্চালক ডাঃ আশুতোষ বর্মণ। সভার উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করেন জেলা এন এইচ এমের কর্মসূচি প্রবন্ধক রাহুল ঘোষ। প্রাসঙ্গিক বক্তব্য উপস্থাপন করেন জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক (স্বাস্থ্য) ড০ খালেদা সুলতানা আহমেদ। তিনি বিভাগীয় কর্মী, আধিকারিকদের এজন্য উষ্ণ অভিনন্দন জানান। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডাঃ ভাস্কর গুপ্ত, আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত নিবন্ধক মনোজ কুমার দে, বিশ্ববিদ্যালয়ের এন এস এস কর্মসূচি সংযোজক এম গঙ্গাভুষন, সোনাই মাধব চন্দ্র দাস কলেজের অধ্যক্ষ ড০ বাহারুল ইসলাম লস্কর, আসাম ক্যান্সার কেয়ার ফাউন্ডেশন পরিচালিত ক্যান্সার কেয়ার হাসপাতালের অধিক্ষক ডাঃ বিশ্বজিৎ ঘোষ, শিলচর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিভাগের প্রধান ডাঃ প্রণয় নাথ চৌধুরী, মেডিক্যাল কলেজের এসএনসিইউ-র নোডাল অফিসার ডাঃ পিনাকী চক্রবর্তী, সিআরপিএফ-র দয়াপুর ছাউনির ডিআইজি, বিএসএফএ-র মাসিমপুর মেডিক্যাল এফটিআর হসপিটালের ডিআইজি প্রমুখ। বিশিষ্টজনদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড০ রাজীব মোহন পন্থ, এন এস এস ইউনিটের কর্মসূচি আধিকারিক ড০ শুভদীপ রায় চৌধুরী, জেলা হাসপাতাল সুপার ডাঃ অরুপ কুমার পাটোয়া, ৬২ আসাম এনসিসি গার্লস কমান্ডেন্ট মুজাম্মেল আলি প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে এনকোয়াস প্রাপ্ত জেলার একমাত্র খন্ড প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র হরিনগর, ৫টি আয়ুষ্মান আরোগ্য মন্দির (উপর স্বাস্থ্য কেন্দ্র), লেবার রুম ইমপ্রোভমেন্ট ইনিশিয়েটিভ মানদন্ডে উৎকর্ষতার জন্য সিভিল হাসপাতাল এবং একই হাসপাতালের ব্লাড সেন্টার, কায়াকল্পে উৎকর্ষতার জন্য জেলার ১০০ টি হাসপাতাল, রক্তদানে জড়িত ৮টি সংগঠন সহ বিএসএফের ডিআইজি, দয়াপুর সিআরপিএফের ডিআইজি, যক্ষ্মা রোগীদের সহায়তাকারী ১৩টি “নিশ্চয় মিত্র” সংগঠন, কার্যক্ষেত্রে জেলার সেরা ৯ আশাকর্মীদের এদিন সম্মাননা প্রদান করা হয়। তাছাড়া রাজ্য স্তরে নুট্রিশন, ন্যাশনাল প্রোগ্রাম ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ এন্ড হিউম্যান হেল্থ, ন্যাশনাল লেপরোসি ইরাডিকেশন প্রোগ্রাম এবং ইন্টিগ্রেটেড ডিজিজ সার্ভাইলেন্স প্রোগ্রাম -এ প্রাপ্ত পুরস্কার এদিন সংশ্লিষ্টদের হাতে তুলে দেয়া হয়। এদিন অনুষ্ঠানের শুরুতে অসম সঙ্গীত পরিবেশন করেন ডিডিএসএম জাকির হোসেন ও সিএইচও লীনা নাথ। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদসুচক বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিক সহকারী আয়ুক্ত জুনালি দেবী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেলা সংযোজক ইকবাল বাহার লস্কর।