CultureBreaking News
আলোর মালায় সাজল শিলচর
৬ নভেম্বর : চেনা শহরটাই যেন এক নতুন সাজে। সড়কের পাশের ভবনগুলো গায়ে আলোর চাদর জড়িয়ে মোহমeয়ী সাজে। লিংক রোড থেকে মালুগ্রাম, পুরোটা রাস্তাই আলোকময়। মূল সড়কেই বিশাল বিশাল তোরণ। বিশেষ করে মঙ্গলবার সন্ধ্যেয় পুজো দেখতে যারাই বেরিয়েছেন, শহর শিলচরকে দেখেছেন উৎসবের মেজাজে। আকাশভেদী বাজিগুলোর রোশনাইয়ে অন্ধকার উধাও। আলোর উৎসব দীপাবলি সত্যিই সব অন্ধকারকে দূরে সরিয়ে প্রতিটি মানুষের জীবনকে আলোয় ভরিয়ে দেয়।
পঞ্জিকার তিথি অনুযায়ী মঙ্গলবার রাত ১০টা ১ মিনিটের পর অমাবস্যা শুরু। ফলে মঙ্গলবার নিশা রাত কালীপুজো হলেও সন্ধ্যেটা দীপান্বিতা কৃত্য ছিল না। এ দিন কার্তিক মাসের কৃষ্ণা চতুর্দশী তিথিতে সন্ধ্যায় হিন্দুরা শাস্ত্রীয় আচার মেনে চৌদ্দ পুরুষের উদ্দেশে বাতি দিয়েছেন। পুকুর, অন্য জলাশয়,এমনকি বরাক নদীতেও কলা গাছের খোলে বাতি জ্বালিয়ে পূর্বপুরুষদের উদ্দেশে নিবেদন করার রেওয়াজ রয়েছে। অনেকে আবার বাড়িতেই চৌদ্দ বাতি প্রজ্বলন করেছেন।
একটু রাত হতেই মণ্ডপে মণ্ডপে শুরু হয়ে যায় শ্যামা মায়ের পুজোর প্রস্তুতি। একদিকে মণ্ডপ সাজানোর ব্যস্ততা, অন্যদিকে পুজোর উপকরণ ও অন্যান্য সরঞ্জামের ব্যবস্থা করা। দুয়ে মিলে পুজো কমিটির কর্মকর্তাদের শ্বাস ফেলার জো নেই। শহরের বেশ কয়েকটি বড় বাজেটের পুজো আবার এ দিনই উদ্বোধন হয়েছে।
এর মধ্যে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল জানিগঞ্জের পুজো। বিশেষ করে জানিগঞ্জের পুরো রাস্তা জুড়ে কয়েকটি বিশাল মাপের আলোর তোরণ দর্শনার্থীদের টেনে নিয়ে গিয়েছে সেখানে। এ দিন সন্ধ্যায় জানিগঞ্জের পুজো উদ্বোধনে শহরের বিশিষ্টজনদের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো। মণ্ডপ উদ্বোধন করেন রামকৃষ্ণ মিশনের স্বামী বৈকুণ্ঠানন্দজি মহারাজ। অন্যদের মধ্যে ছিলেন সাংসদ সুস্মিতা দেব, প্রাক্তন মন্ত্রী কবীন্দ্র পুরকায়স্থ, বিধায়ক দিলীপ কুমার পাল, বিধায়ক আমিনুল হক লস্কর সহ আরও অনেকে।
উদ্বোধনের পর সবাই আবার চোখে ফোর ডি চশমা লাগিয়ে আলো ও শব্দের খেলা প্রত্যক্ষ করেন। মালুগ্রাম অ্যাপোসলস ক্লাবের পুজোতেও সন্ধ্যে থেকে দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়তে থাকে। তবে সবচেয়ে বেশি ভিড় এ দিন ছিল শ্মশানঘাটে। দেবীর উদ্দেশে ভোগ নিবেদনের জন্য প্রচুর সংখ্যায় ভক্তরা হাজির ছিলেন।
শিলচর শহরের ঘনিয়ালার ভ্যানগার্ড ক্লাব, সোনাই রোডের কল্লোল সংঘ, বিলপারের মন্দির দিঘিরপার পুজো কমিটি বা হাসপাতাল রোডের জিরো বয়েজের পুজো দর্শনার্থীদের টানতে সক্ষম হয়েছে।
কোনও কোনও পুজো কমিটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করে। বুধবার সন্ধ্যায় দীপাবলির পার্বণের পর আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে শহরের রাস্তায় দর্শনার্থীদের ভিড় যে বাড়বে, তা স্পষ্টই অনুমান করা যাচ্ছে। এ দিকে সুপ্রিম কোর্ট রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত বাজি ফোটানোর যে সময়সীমা ঠিক করে দিয়েছে, উৎসবের আনন্দে তার কতটা পালন হয়, তাও দেখার বিষয়। কারণ মঙ্গলবারও শহর জুড়েই সেই নিয়ম লঙ্ঘন হয়েছে।