Barak UpdatesHappeningsBreaking News
আন্তরিক শ্রদ্ধা জানিয়ে পীযূষ দাসের মুখাগ্নিতে অংশ নিলেন জাকিরও
২৮ মেঃ সাংবাদিক-সমাজকর্মী পীযূষকান্তি দাসের মৃতদেহ বৃহস্পতিবার সকালে গুয়াহাটি থেকে শিলচরে এসে পৌঁছায়৷ পথে কাটিগড়ার রাজ্যেশ্বরপুরের বাড়িতে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়৷ সেখানেই শৈশব-কৈশোর কেটেছে পীযূষবাবুর৷ পরে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয় অম্বিকাপট্টিস্থিত নিজস্ব আবাসনে৷ কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু হলে তাড়াতাড়ি বাড়ি তৈরির কাজ সারেন৷ এ দিন ওই বাড়ি থেকে শবযাত্রা এগোয় শিলচর প্রেস ক্লাবের উদ্দেশে৷ বিকাশ চক্রবর্তী, শঙ্কর দে সহ প্রেস ক্লাবের কর্মকর্তারা সেখানে তাঁকে শ্রদ্ধা জানান৷ জেলাশাসকের অফিসের সামনে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করে জেলা প্রশাসন কর্মচারী সংস্থা৷
বঙ্গভবনে বরাক উপত্যকা বঙ্গসাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের পক্ষ থেকে জেলা সম্পাদক ড. জয়ন্ত দেবরায় ও সহসভাপতি দীপক সেনগুপ্ত পীযূষবাবুর মৃতদেহ সংগঠনের পতাকায় মুড়ে দেন৷ তিনি দীর্ঘদিন এই সংগঠনের শিলচর আঞ্চলিক সমিতির কার্যবাহী সদস্য ছিলেন৷ তিনি ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে ছিলেন নেতাজি ছাত্র-যুব সংস্থার সঙ্গেও৷ মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয় তাদের অম্বিকাপট্টিস্থিত কার্যালযেও৷ ফুলের মালা ও ফুল ছড়িয়ে তাঁর প্রতি শেষশ্রদ্ধা জানান সম্মিলিত সাংস্কৃতিক মঞ্চ, কোরাস সহ বিভিন্ন সংস্থা-সংগঠনের কর্মকর্তারা৷
গান্ধীবাগে তাঁর মৃতদেহে ফুলের মালা দিয়ে ডিআইজি দিলীপকুমার দে বলেন, শিলচর একজন ভাল সাংবাদিকই হারাল না, হারিয়েছে একজন ভাল মানুষকে৷ কায়ানট, ছন্দনীড়, শিলচর সঙ্গীত বিদ্যালয় কত সাংস্কৃতিক-সামাজিক সংগঠন যে তাঁদের সঙ্গে তাঁর জড়িয়ে থাকার কথা স্মরণ করেছে৷ জেলা কংগ্রেস কমিটির পক্ষ থেকেও শেষশ্রদ্ধা জানানো হয় পীযূষকান্তি দাসকে৷ শ্মশানে দীর্ঘসময় উপস্থিত ছিলেন সাংসদ ডা. রাজদীপ রায়, উপাধ্যক্ষ আমিনুল হক লস্কর, বিধায়ক দিলীপকুমার পাল, বিজেপির জেলা সভাপতি কৌশিক রাই, মুখ্যমন্ত্রীর ওএসডি শেখর দে, প্রাক্তন পুরপ্রধান তমালকান্তি বণিক, রেডক্রশ সোসাইটির চেয়ারম্যান দীপায়ন চক্রবর্তী প্রমুখ৷
তবে সকলের উপস্থিতির মধ্যেও এ দিন চর্চার কেন্দ্রে ছিলেন ইয়াহিয়া লস্কর ওরফে জাকির৷ সম্প্রীতির নিদর্শন হয়ে থাকলেন তিনি৷ পীযূষবাবুর একমাত্র কন্যা সিঞ্জিনী সৌহার্দ্য মুখাগ্নি করবেন, এ পাকাই ছিল৷ সঙ্গে কারা থাকবেন, এ নিয়ে চর্চা শুরু হতেই জাকির তার আগ্রহ প্রকাশ করেন৷ পরিবারের সবাই সায় দিলে সিঞ্জিনী এবং তার কাকাদের সঙ্গে মুখাগ্নিতে সামিল হন জাকির লস্করও৷ তিনি বলেন, ২০০২ সালে আমি যখন সোনার কাছাড় পত্রিকায় কাজে আসি, বড়দা (পীযূষ দাস) প্রথম দিন আমাকে স্নেহে বেঁধে নেন৷ পরে বৈদ্যুতিন মাধ্যমে পুরোপুরি চলে এলে আমাকেও সঙ্গে রাখেন৷ কাজ শিখিয়ে ক্যামেরাম্যান করেন আমাকে৷ তাই আমি তাঁকে আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা জানাতেই মুখাগ্নির সিদ্ধান্ত নিই৷
কিন্তু ইসলাম ধর্মাবলম্বী কেউ কি মুখাগ্নি করতে পারেন? জাকির লস্কর বলেন, ইসলাম ধর্মে মানুষকে অকপট ভালবাসার কথা বলা হয়েছে৷ আমি তা-ই করেছি৷ পীষূষবাবুর ভাই-শ্যালকরাও বলেন, তিনি অসুস্থ হওয়ার পর জাকির পরিবারের সদস্যের মতই পাশে থেকেছে৷ গুয়াহাটিতেও সঙ্গে গিয়েছে৷ ফলে তার সে অধিকার রয়েছেই৷