Barak UpdatesHappeningsBreaking News
আধার, নাগরিকত্ব নিয়ে চরম দুর্ভোগের জন্য বিজেপিকে আর ভোট নয়, আহ্বান যৌথ মঞ্চের
ওয়েটুবরাক, ৭ এপ্রিল : আধার, নাগরিকত্ব, সিএএ নিয়ে মানুষ চরম হয়রানির শিকার৷ কেন্দ্র-রাজ্যে ক্ষমতাসীন বিজেপিকে এ জন্য দায়ী করলেন ষোল সংগঠনের যৌথ মঞ্চের কর্মকর্তাগণ৷ তাদের সিদ্ধান্ত, বিজেপির আমলে নাগরিকত্বই যখন হুমকির মুখে, তখন কেউ বিজেপিকে ভোট দেবেন না৷
রবিবার সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে অরিন্দম দেব, সুব্রত নাথরা বলেন, মুখ্যমন্ত্রী শিলচরে এসে বললেন, আগামী ছয় মাসের মধ্যে হিন্দু বাঙালিদের এই সব সমস্যার সমাধান করবেন৷ অন্যদিকে, মন্ত্রী পীযূষ হাজরিকা বলেন, ওইসব সুপ্রিম কোর্টের বিষয়৷ দুজনের কথা একসঙ্গে নিলে যা দাঁড়ায়, তা হল, ভোট পেরিয়ে গেলে মানুষ আবার ঠকবেন৷
হিল্লোল ভট্টাচার্য এ প্রসঙ্গে নরেন্দ্র মোদির ২০১৪ সালের শিলচর ভাষণের কথা স্মরণ করান৷ সেখানে তিনি বলেছিলেন, তাঁরা কেন্দ্রে ক্ষমতায় গেলে অর্জুন নমঃশূদ্রের মতো মরতে হবে না কোনও ডি ভোটারকে৷ কিন্তু তাঁর আমলে ২২ জন ডি ভোটারকে রাষ্ট্রহীন থেকে জেলে প্রাণ দিতে হয়েছে৷
যৌথ মঞ্চের নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, ভারতের নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে ২০০৩ সালে অটলবিহারী বাজপেয়ীর সরকার এমন আইনি পরিস্থিতি তৈরি করেছে যেখানে ভারতে জন্মগ্রহণকারী এবং দশকের পর দশক ব্যাপী স্থায়ীভাবে বসবাসকারী বহু মানুষ নাগরিকত্ব হারাচ্ছেন। তাঁদের কথায়, আসামে এনআরসি প্রক্রিয়ার দাবি-আপত্তি পর্যায়ে আসাম সরকার মোট ২৭ লক্ষ লোকের বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ করে তাদের আধার আটকে রেখেছে। ৫ বছর ধরে আধার আটকে থাকা লোকজন নানা সমস্যা ও হেনস্তার সম্মুখীন হয়ে চলেছেন। বিভিন্ন ধরনের সরকারি সুযোগসুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বলা হয়েছিল যাদের নাম এনআরসিতে অন্তর্ভুক্ত হবে তাদের সরাসরি আধার ইস্যু করা হবে। এই ২৭ লক্ষের অধিকাংশের নাম ৩১ আগস্ট ২০১৯-এ প্রকাশিত চূড়ান্ত এনআরসিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু আজও আধার ইস্যু করা হয়নি তাদের নামে।
এছাড়াও, যে ১৯ লক্ষ লোকের নাম প্রকাশিত চূড়ান্ত এনআরসিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, এনআরসির নিয়ম অনুযায়ী তাদের ফরেনার্স ট্রাইবুনালে আপিল করার কথা। কিন্তু আজ সাড়ে চার বছর পরও সেই রিজেকশন স্লিপ প্রদান করা হচ্ছে না। ফলে তাঁরাও আপিল করতে পারছেন না৷
তাঁদের দাবি, এই অবস্থায় আধার আটকে রাখার জন্য সরকারি সুযোগসুবিধা বঞ্চিত ২৭ লক্ষ ও এনআরসি প্রক্রিয়া বন্ধ হওয়ায় ১৯ লক্ষ লোক যেসব সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন সেগুলির অনতিবিলম্বে সমাধান করতে সর্বশেষ সচিত্র ভোটার তালিকাকেই গ্রহণযোগ্য দলিল হিসেবে মান্যতা দিতে হবে, জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের বিধানকে পুনর্বহাল করতে হবে এবং আধার তথা নাগরিকত্ব সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে হবে।
সেই দাবি আদায় করতে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে নাগরিকত্ব নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অপরাধে একটিও ভোট না দেওয়ার আহ্বান জানান তাঁরা।
এ দিনের সাংবাদিক সম্মেলনে ফোরাম ফর সোশ্যাল হারমনির অরিন্দম দেব, এআইইউটিইউসির সুব্রত নাথ, ভাষা আইন সুরক্ষা সমিতির হিল্লোল ভট্টাচার্য ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রফিক আহমেদ (এআইটিইউসি), মিহির নন্দী (টিইউসিসি), জয় দাশগুপ্ত (ভাষা আইন সুরক্ষা সমিতি) ও স্নিগ্ধা নাথ (আসাম মিড ডে মিল ওয়ার্কার্স অ্যাসোসিয়েশন)৷ যৌথমঞ্চে সিআরপিসি, সিআরপিসিসি, এনটিইউআই, এআইসিসিটিইউ, অসম মজুরি শ্রমিক ইউনিয়ন, কোরাস, ফোরাম ফর সিভিল রাইটস্, মার্চ ফর সায়েন্স, ইউনাইটেড আসাম পিপলস ফোরাম এবং সদৌ অসম আশা সংস্থাও রয়েছে বলে তাঁরা জানিয়েছেন৷