Barak UpdatesHappeningsBreaking News
আড়াই মাস পর স্থায়ী জামিন পেলেন প্রদীপ দত্তরায়
ওয়েটুবরাক, ৬ মার্চ : আড়াই মাস পর স্থায়ী জামিন পেলেন বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায়। ফ্রন্টের মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক হৃষীকেশ দে এই সংবাদ জানিয়ে বলেন, “আমাদের বিচার ব্যাবস্থার উপর সম্পূর্ণ আস্থা রয়েছে । তাই এই রায় প্রত্যাশিত ছিল। আমরা একশ শতাংশ নিশ্চিত, আগামীতেও বিচার প্রক্রিয়ায় প্রদীপ দত্তরায় নির্দোষ প্রমাণিত হবেন।” তাঁর কথায়, জামিন শুনানির শেষে বিচারক স্পষ্ট বলেছেন, দেশদ্রোহিতা বা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের ব্যাপারে অভিযুক্তের জড়িত থাকার কোনও প্রমাণ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
বিচারক আরও বলেছেন, সরকারের কোনও পদক্ষেপকে সমালোচনা বা তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সাব্যস্ত করা নাগরিকদের সংবিধানসম্মত অধিকার৷ যতক্ষণ অবধি না সরকারের বিরুদ্ধে কোনও হিংসাত্মক কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়ার প্ররোচনা দেওয়া হচ্ছে বা সে রকম কোনও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, ততক্ষণ তা বেআইনি নয়৷ তেমনি যতক্ষণ অব্দি কার্যক্ষেত্রে কোনও পদক্ষেপ না নেওয়া হচ্ছে ততক্ষণ কোনও মৌখিক বা লৈখিক সমালোচনা আইনতঃ দণ্ডনীয় হতে পারে না।
হৃষীকেশ দে বলেন, এর থেকে স্পষ্ট, বিডিএফের মুখ্য আহ্বায়ক বিগত দিনে যে সব কথা বলেছেন তা সম্পূর্ণ সংবিধানসম্মত এবং এর প্রতিক্রিয়ায় সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় তার গ্রেফতার সহ যেসব দমনমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা সম্পূর্ণ অনৈতিক, অসাংবিধানিক ও ধিক্কারযোগ্য। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী সহ পুলিশ প্রশাসনের তরফে এই ব্যাপারে যে প্রতিস্পৃহামূলক আচরণ দেখা গেছে, তা কোনভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। হৃষীকেশ আরও বলেন, “আমরা এটা আবারও স্পষ্ট করে দিতে চাই, আমরা কোনও জাতিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নই। রাজ্যের সমস্ত জাতিগোষ্ঠীর ভাষা সহ কৃষ্টি সংস্কৃতি আমাদের কাছে অত্যন্ত আদরণীয় ,সম্মানীয়। কিন্তু তা বলে কারও নায্য অধিকারে হস্তক্ষেপ করলে তা আমরা মানি না এবং ভবিষ্যতেও মানব না। তাই বরাক তথা এই রাজ্যের বাঙালি সহ কোনও জনগোষ্ঠীর অধিকার সুরক্ষায় আমরা সর্বদাই সোচ্চার থাকব।”
বিডিএফ মিডিয়া সেলের আরেক আহ্বায়ক জয়দীপ ভট্টাচার্য বলেন, প্রদীপবাবুর এই জামিনে আবার সত্যের জয় সূচিত হল। তিনি বলেন “আমরা নিশ্চিত, আগামীতেও তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হবেন।” তাঁর কথায়, এই ব্যাপারে শিলচরের সাংবাদিক অনির্বাণ রায়চৌধুরীর বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রনোদিত হয়ে ভুয়ো মামলা করেছিল প্রশাসন। এইসব দমন পীড়ন করে গণতান্ত্রিক আওয়াজকে কখনও রুদ্ধ করা যায় না, ভবিষ্যতেও যাবে না। এটা সরকার যত শীঘ্র বুঝতে পারে ততই মঙ্গল। তিনি আরও বলেন, এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার কিছু উগ্র জাতীয়তাবাদী সংগঠনের নেতারা যেভাবে সাম্প্রদায়িক বিবৃতি সহ বিভিন্ন বাঙালি প্রতিষ্ঠানের উপর চড়াও হয়েছিলেন তা নিঃসন্দেহে অসাংবিধানিক ও শাস্তিযোগ্য। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাদের বিরুদ্ধে সরকারি তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা পক্ষপাতদুষ্ট এবং রাজধর্ম পালনে ব্যর্থ হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
জয়দীপ সংশ্লিষ্ট ব্যাপারে আইনজীবী সৌমেন চৌধুরী ও বিচারককে এই রায়ের জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।