NE UpdatesHappeningsBreaking News

অসম সাহিত্য সভার অধিবেশনে বাংলা সাহিত্য সভাকে বিশেষ‌‌ সংবর্ধনা

গুয়াহাটি, ১ ফেব্রুয়ারি : অসম সাহিত্য সভার অধিবেশন মানে যেন সাহিত্য ও সংস্কৃতির অন্য এক পূর্ণ কুম্ভমেলা। এবারে সপ্তসপ্ততিতম দ্বিবার্ষিক অধিবেশন হচ্ছে পাঠশালার বজালিতে; “ভট্টদেব ক্ষেত্র” নামাঙ্কিত বিরাট কৃষিক্ষেত্র মাঠে।‌ অন্তত দশ লক্ষ মানুষের সমাবেশে পাঁচ দিনব্যাপী এই সাহিত্য‌ সমারোহ হচ্ছে।‌ অসম সাহিত্য সভার দ্বিতীয়‌ দিন মূল মঞ্চে গ্রন্থ উন্মোচনী পর্ব ও অসমের বিভিন্ন সাহিত্য সভার প্রতিনিধি সম্মেলন ছিল। সেখানে বাংলা সাহিত্য সভার বিশেষ আমন্ত্রণ ছিল। বাংলা সাহিত্য সভার রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ড. প্রশান্ত চক্রবর্তীকে অসম সাহিত্য সভার মূল মঞ্চে বিশেষ‌‌ সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। এই পর্বে সভাপতিত্ব করেন অসম সাহিত্য সভার বিদায়ী সভাপতি পদ্মশ্রী সূর্য হাজরিকা। তিনি বিশেষভাবে ড. প্রশান্ত চক্রবর্তীকে‌ উপস্থিত হাজার মানুষের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন।

উল্লেখ্য, অসম সাহিত্য সভার একশ সাত বছরের (প্রতিষ্ঠা : ১৯১৭) ইতিহাসে এই প্রথম‌ অসমের দুই উপত্যকার কোনো বাঙালি সাহিত্য সংগঠনকে এভাবে সম্মাননা প্রদান করল অসম সাহিত্য সভা। এ দিন অসম সাহিত্য সভার চতুর্থ সভাপতি পণ্ডিত হেমচন্দ্র গোস্বামীর রচনা‌ সংকলন উদ্বোধন করার জন্য ড. প্রশান্ত চক্রবর্তীকে আহ্বান জানান অসম সাহিত্য সভার বিদায়ী সভাপতি। এই পর্বে উপস্থিত ছিলেন পণ্ডিত হেমচন্দ্র গোস্বামীর পৌত্র আমেরিকা প্রবাসী ডাঃ নব গোস্বামী। তিনি পঞ্চাশ বছর ধরে আমেরিকায় আছেন এবং আমেরিকার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ছিলেন। অসমে তাঁর পিতামহের নামে অনেক মঙ্গলকর্ম করে চলেছেন।

তিনি জানান, বাংলা সাহিত্য সভার সঙ্গে যৌথভাবে তিনি কিছু সাহিত্যমূলক কাজ করতে আগ্রহী।‌ বিশেষ অতিথির ভাষণে ড. প্রশান্ত চক্রবর্তী বলেন, “হেমচন্দ্র গোস্বামীকে সঙ্গে নিয়ে অসমিয়া ভাষাকে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তদানীন্তন উপাচার্য‌ স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়।‌ তাই অসম সাহিত্য‌ সভার কার্যালয়ে এই অসমবন্ধুর একটি প্রতিকৃতি যেন স্থান লাভ করে।”

তিনি আরও বলেন, “অসমিয়া ও বাংলা ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা পেয়েছে। এতে দুটি ভাষিক গোষ্ঠীর মধ্যে নৈকট্য আরও বৃদ্ধি পাবে।” তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্তবিশ্ব শর্মা অসম প্রকাশন পরিষদকে লিখিত নির্দেশ দিয়েছেন, বাংলা সাহিত্য সভার সঙ্গে মিলে অসমিয়া-বাংলা‌ অনুবাদ কার্যসূচি বাস্তবায়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করতে। আমরা চাই, অসম সাহিত্য সভাও এই কাজে আমাদের সঙ্গে এগিয়ে আসুক। অসম সাহিত্য সভার পাঠশালা অধিবেশন থেকে অসমের অসমিয়া-বাঙালির, বরাক-ব্রহ্মপুত্রের প্রীতি সৌহার্দ্য ও সমতার নতুন যুগের সূচনা হল।”

ড. চক্রবর্তী জানান, আতিথেয়তারও কোনও তুলনা ছিল না। অসমিয়া পিঠাপুলির সঙ্গে স্থানীয় আহার দিয়ে বাংলা সাহিত্য‌ সভার প্রতিনিধিদের আপ্যায়ন করা হয়।‌ অভ্যর্থনা সমিতি সহ সকলেই অসম্ভব আন্তরিক ছিলেন। ড. চক্রবর্তীর সঙ্গে তাঁর পত্নী সুলেখিকা রুনুমি শর্মা ও পুুত্র প্রমিথিউস অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এদিন। তাছাড়া বাংলা সাহিত্য‌ সভার অন্যতম পৃষ্ঠপোষক তথা অসম সরকারের উন্নয়ন পর্ষদের মুখ্য কার্যকরী সদস্য তুহিন কাশ্যপ দেব এবং বাংলা সাহিত্য সভার বিলাসীপাড়া শাখার সাধারণ সম্পাদক নিকিতা সাহাও বাংলা সাহিত্য সভার পক্ষে অতিথি প্রতিনিধি রূপে উপস্থিত ছিলেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker