NE UpdatesHappeningsBreaking News
অসমের কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী সুদক্ষিণা শর্মা প্রয়াত
গুয়াহাটি, ৩ জুলাই ঃ আসামের সঙ্গীত জগতে আরও এক নক্ষত্র পতন। দীর্ঘ বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার কারণে সোমবার গুয়াহাটিতে প্রয়াত হয়েছেন সুদক্ষিণা শর্মা। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। বর্তমানে গায়িকার পরিবারে রয়েছেন তাঁর গায়ক স্বামী দিলীপ শর্মা ও এক মেয়ে। তাঁর দুই ছেলে ছিল, তাঁরাও প্রয়াত। সবাইকে ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন প্রবীণ গায়িকা। সূত্রের খবর, শর্মাকে গত ২৩ জুন গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর তাঁর শারীরিক অবনতির কারণেই আইসিইউতে ভর্তি করানো হয়েছিল। তিনি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন।
এরপর তাঁর অবস্থার উন্নতি হলেও গতকাল রাতে ফের অবনতি শুরু হয়। আর শেষ রক্ষা হয়নি, সোমবার সকাল ৮.২৫ নাগাদ মারা যান বিশিষ্ট গায়িকা। জানা গিয়েছে, প্রখ্যাত গায়িকা চিকিৎসায় গবেষণার জন্য তাঁর চোখ ও শরীর দান করে গিয়েছেন। শেষকৃত্যের আগে পরিবার ও শুভানুধ্যায়ীদের শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্যে তাঁকে নিজের বাসভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা বলেছেন, “তিনি রাজ্যের সাংস্কৃতিক জগতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তাঁর কিছু স্মরণীয় পরিবেশনা দিয়ে সঙ্গীত জগতকে সমৃদ্ধ করেছেন আজীবন এবং তাঁর মৃত্যু রাষ্ট্রের সাংস্কৃতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রের জন্য একটি বিশাল ক্ষতি।”
আসামের সংগীত-খ্যাত হাজরিকা পরিবারের চতুর্থ সন্তান ছিলেন সুদক্ষিণা শর্মা। বড় ভাই ভূপেন হাজরিকার সঙ্গে ছোট থেকেই গান গাওয়া শুরু করেন তিনি। মাত্র নয় বছর বয়সে আসামের কিংবদন্তি সাংস্কৃতিক কর্মী বিষ্ণু রাভার তত্ত্বাবধানে কলকাতায় গ্রামোফোন রেকর্ডের জন্য চারটি গান রেকর্ড করেছিলেন তিনি। এছাড়াও তিনি ১৯৪৬ সালে মহাত্মা গান্ধীর শেষ সফরের সময় “ই জয় রঘুর নন্দন” গেয়েছিলেন। খোদ মহাত্মা গান্ধী তাঁকে বলে গিয়েছিলেন, তিনি যেন কখনও গান বন্ধ না করেন। তিনি ‘মণিরাম দেওয়ান’, ‘চিকমিক বিজুলি’, ‘পরঘাট’, ‘অবুজ বেদোনা’ এবং ‘হেপাহ’ সহ বেশ কয়েকটি অসমীয়া চলচ্চিত্রেও প্লেব্যাক কণ্ঠ দিয়েছেন। কলকাতার বিশিষ্ট গায়ক দিলীপ শর্মার স্ত্রী তিনি। রবীন্দ্র সঙ্গীত, লোকজ, শাস্ত্রীয়, হালকা শাস্ত্রীয় এবং আধুনিক সহ একাধিক গানে তিনি খ্যাতনামা। এই দম্পতি ২০০২ সালে যৌথভাবে সঙ্গীত নাটক আকাদেমি পুরস্কারে ভূষিত হন।