Barak UpdatesHappeningsBreaking News

৩০ জুন বরাক বনধ ডাকল বিডিএফ

ওয়েটুবরাক, ২৩ জুন : অসমে লোকসভা ও বিধানসভা আসনের সীমা পুনর্বিন্যাসের খসড়ায় বরাক উপত্যকার দুটি বিধানসভা আসন কমানোর প্রস্তাবের প্রতিবাদে ৩০ জুন বরাক বনধের ডাক দিল বরাক ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (বিডিএফ)৷ ডিলিমিটেশন করে বরাক তথা বাঙালিদের রাজনৈতিক ক্ষমতা কেড়ে নেবার প্রতিবাদে শুক্রবার সকাল পাঁচটা থেকে বিকেল পাঁচটা অব্দি বরাক উপত্যকা ব্যাপী সর্বাত্মক বনধ পালনের আহ্বান জানান তাঁরা। বিডিএফ আশাবাদী, বরাকের সমস্ত দল, সংগঠন ও আপামর জনসাধারণ এই বনধ কর্মসূচিকে সমর্থন করবেন ও সক্রিয় সহযোগিতার মাধ্যমে এই কর্মসূচিকে সফল করবেন।

মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় বলেন, এই ডিলিমিটেশনের মাধ্যমে বরাক সহ অসমের বাঙালিদের নিঃশেষ করার চক্রান্ত চলছে এবং এতে হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে বাঙালিরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। প্রতিবাদে বিডিএফ বরাকের বিধায়কদের একযোগে পদত্যাগ করারও আহ্বান জানিয়েছে৷

ডিলিমিটেশনে বরাক বঞ্চনার পরিপ্রেক্ষিতে বরাক বিজেপির নেতারা বৃহস্পতিবার শিলচরে যে সভায় মিলিত হয়ে যৌথ প্রতিবাদ জানিয়েছেন, এর জন্য তাঁদের ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি সমগ্র ঘটনাক্রম নিয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেন বিডিএফ মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায়।

প্রদীপ বাবু বলেন, বরাক তথা বাঙালিদের স্বার্থে এখন সবার একজোট হবার সময় এসেছে। বিজেপির স্থানীয় নেতারা যে এটি অনুধাবন করেছেন এবং এগিয়ে এসেছেন এটি শুভ লক্ষণ। বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট গত তিন বছর ধরে বরাকের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। আগেও বিভিন্ন ইস্যুতে বরাক বঞ্চনা করা হয়েছে। বরাকের ভাষা আইন রক্ষার দাবিতে আন্দোলনের জন্য তাঁকে জেলে পাঠানো হয়েছে। বরাকের ছেলেমেয়েদের সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে চূড়ান্ত বঞ্চনা করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার ও রেলদপ্তরের অনুমোদন থাকা সত্ত্বেও ভাষা শহিদ স্টেশন নামকরণ ইচ্ছাকৃতভাবে আটকে রাখা হয়েছে। কিন্তু এতদিন বরাক বিজেপির নেতারা এসব নিয়ে নীরব থেকেছেন।

বরাকের ভোটারদের প্রতি দায়বদ্ধতা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের প্রাথমিকতা হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন দত্তরায়৷  তিনি বিজেপি নেতাদের মনে করিয়ে দেন, শুধু প্রতিবাদ করলেই চলবে না। এই ব্যাপারে বরাকের উজ্জ্বল ঐতিহ্য রয়েছে। ১৯৬১ এর ভাষা আন্দোলনের পর তৎকালীন বিধায়ক মহীতোষ পুরকায়স্থ আসাম বিধানসভায় বরাকের স্বার্থে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন, যার জন্য তাঁকে বিধানসভা থেকে বহিস্কার করা হয়েছিল। তৎকালীন বিধায়ক নন্দ কুমার সিংহ প্রতিবাদে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। বরাকের বিধায়কদের সেই ঐতিহ্যের অনুসারী হয়ে এই ডিলিমিটেশন প্রক্রিয়ার প্রতিবাদে একযোগে পদত্যাগ করতে বলেন বিডিএফ নেতা৷

বিডিএফ আশাবাদী, বরাকের বাকি সমস্ত জ্বলন্ত সমস্যা নিয়েও অবিলম্বে বরাক বিজেপি একই ভাবে মুখ খুলবে এবং এ সবের সমাধানে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করবে।

বিডিএফ মিডিয়া সেলের মুখ্য আহ্বায়ক জয়দীপ ভট্টাচার্য এদিন বলেন, মুখ্যমন্ত্রী বলছেন যে, এই ডিলিমিটেশনের মাধ্যমে খিলঞ্জিয়াদের স্বার্থ সুরক্ষিত হবে।  এন আর সি এবং আসাম চুক্তি করে যে লক্ষ্য পূরণ হয়নি তা এবার ডিলিমিটেশনের মাধ্যমে পূরণ হবে। জয়দীপ বলেন যে, প্রথম কথা আসামে কারা খিলঞ্জিয়া সেই সংজ্ঞাই নির্ধারণ করতে পারেনি সরকার। দ্বিতীয়ত মুখ্যমন্ত্রী একটি সাংবিধানিক পদ এবং সংবিধান অনুযায়ী রাজ্যের সমস্ত জাতি জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্বের শপথ নিয়েছেন তিনি। কিন্তু এই ধরনের বক্তব্যের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী কিছু জনগোষ্ঠীর প্রতি যে ঘৃণা উগড়ে দিচ্ছেন তা দুর্ভাগ্যজনক এবং অসাংবিধানিক। জয়দীপ আরও বলেন, আগামী ১৪ জুলাইর মধ্যে নির্বাচন আয়োগে তাঁরা অবশ্যই আপত্তি পত্র পেশ করবেন ৷

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker