Barak UpdatesHappeningsBreaking News

১৪ মে বরাকের সমস্ত জনগোষ্ঠীকে একমঞ্চে এনে ‘ বরাক সংহতি উৎসব’

ওয়েটুবরাক, ৪ মে : আগামী ১৪ মে শিলচর গান্ধীভবন প্রেক্ষাগৃহে সারাদিন ব্যাপী ‘বরাক সংহতি উৎসব’ পালিত হবে। বৃহস্পতিবার শিলচর পেনশনার্স ভবনে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে ‘পূর্বাচল জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটির’ সভাপতি জয়দীপ ভট্টাচার্য বলেন, বিভিন্ন সময়ে সামাজিক, ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক কারণে বরাক উপত্যকায় বিভিন্ন জনগোষ্ঠী এসেছে এবং আবহমান কাল ধরে বসবাস করে আসছে। এইসব জনগোষ্ঠীর মধ্যে কখনোই তেমন বিভেদ, বিভাজনের প্রসঙ্গ আসেনি বরং পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও নির্ভরতার মধ্য দিয়ে সম্প্রীতি আরও নিবিড় হয়েছে। কিন্তু ইদানীং রাজনীতির কারবারিরা নিজেদের ন্যস্ত স্বার্থে সুকৌশলে এই উপত্যকার ভাষিক ও ধর্মীয় গোষ্ঠীর মধ্যে বিভাজনের বীজ বপন করার চেষ্টা করছে। একে প্রতিরোধ করতে হলে সবাইকে আবার এক মঞ্চে আসতে হবে, হাতে হাত ধরে চলতে হবে। বরাকের এই ঐক্যের ঐতিহ্যকে আগলে রাখার জন্যই ‘ বরাক সংহতি উৎসব’ পালনের সিদ্ধান্ত।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাধন পুরকায়স্থ বলেন, জনবিন্যাসের সামূহিক বৈচিত্র্যের নিরিখে বরাক উপত্যকাকে ‘মিনি ভারত’ বলা যেতে পারে। কুকি,নাগা,কোচ, মণিপুরি, ডিমাসা, বিষ্ণুপ্রিয়া, খাসি সহ প্রায় ১৮টি জনগোষ্ঠীর বাসভূমি এই উপত্যকা৷ প্রতিটি জনগোষ্ঠীর সমৃদ্ধ কৃষ্টি, সংস্কৃতির সমন্বয়ে এই উপত্যকার স্বকীয় বহুমুখী সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। আগামী ১৪ মের অনুষ্ঠানে এই সমস্ত জনগোষ্ঠী তাদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করবে বলে সাধনবাবু জানান। সে দিনের উৎসবকে একটি সাংস্কৃতিক সমারোহ বলে উল্লেখ করেন তিনি৷ পারস্পরিক ঐক্য ও সম্প্রীতির যে দীর্ঘ ঐতিহ্য এই উপত্যকাতে রয়েছে, এদিনের উৎসবে তা আরও সুদৃঢ় হবে বলে তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস।

পূর্বাচল জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটির সহ সভাপতি কৃশানু ভট্টাচার্য এদিন উৎসবের রূপরেখা জানাতে গিয়ে বলেন, বিশিষ্ট জনের উপস্থিতিতে উদ্বোধনের পর অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হবে। বিকেলে থাকবে মত বিনিময় সভা ৷ বিষয় –  ‘আধিপত্যবাদের প্রতিরোধে ঐক্যবদ্ধ বহুভাষিক বরাক উপত্যকার ভূমিকা—অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ’৷ তাতে অংশ নেবেন বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা। সন্ধ্যার দ্বিতীয় পর্বের অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন উপত্যাকার বিশিষ্ট নবীন ও প্রবীণ শিল্পীরা। কৃশানু আরও বলেন, ১৯ মের প্রাক্কালে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে উনিশের মাতৃভাষা আন্দোলনের বহুভাষিক ঐতিহ্যকে সম্মান জানাতে। তিনি এতে সবার সহযোগিতা ও অংশগ্রহণের আবেদন জানিয়েছেন।

বিষ্ণুপ্রিয়া ও বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরি সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে দিলীপ সিনহা ও খাইদেম কান্ত সিং বহুভাষিক বরাকের ঐক্য ও সংহতির ইতিহাস তুলে ধরে এদিনের অনুষ্ঠানে সবাইকে অংশগ্রহণ ও উপস্থিত থাকতে অনুরোধ জানিয়েছেন। এছাড়া সংগঠনের আরেক প্রবীণ সদস্য তথা সমাজকর্মী আইনুল হক মজুমদার বলেন, এই উৎসবের সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগাযোগ নেই। তাই তিনি দলমত নির্বিশেষে সবাইকে এই উৎসব উপভোগ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হৃষীকেশ দে, গোরা চক্রবর্তী, দেবায়ন দেব, নবারুণ দে চৌধুরী প্রমুখ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker