Barak UpdatesHappeningsBreaking News
হিমন্ত এসে ভুল তথ্য দিয়ে গেলেন, ক্ষিপ্ত সুস্মিতা
ওয়েটুবরাক, ২৮ আগস্ট : তিনদিনের বরাক উপত্যকা সফরে এসে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এই অঞ্চলের মানুষকে ভুল তথ্য দিয়ে চলে গিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন তৃণমূল সাংসদ সুস্মিতা দেব৷ মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যকে নানাদিক থেকে বিশ্লেষণ করেন তিনি৷
পুরসভা নির্বাচন: ২০২৩ সালের ২৯ মে হাই কোর্ট শিলচরকে পুর নিগম ঘোষণার ওপর স্থগিতাদেশ জারি করে৷ ওই নির্দেশে বলা হয়, নিগম করার বিজ্ঞপ্তিটি রাজ্যপালের সম্মতিতে হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত ভাবে আদালতকে জানাতে হবে৷ এর আগে পুরনিগমের বিজ্ঞপ্তি কার্যকর হবে না৷ তাঁর মানে পুরনিগম হয়নি, শিলচরে পুরসভাই বহাল রয়েছে৷ তাই যদি হয়, তাহলে শিলচরে পুরসভা নির্বাচনে আপত্তি কোথায়! পুরনিগম যখন হচ্ছে না, তখন পুরসভা কেন গঠন কেন হচ্ছে না? তাতে তো কোর্টের স্থগিতাদেশ নেই! শিলচরের নাগরিককে মুখ্যমন্ত্রী ভুল তথ্য দিয়ে গেলেন৷ আসলে পুরসভায় এখন সিন্ডিকেট চলছে যে! দুই-তিনজন রাজনীতিবিদের নিয়ন্ত্রণে গোটা পুরসভা৷
রাস্তাঘাট: পূজার সময় রাস্তাঘাট ঠিক হবে, কী অদ্ভুত যুক্তি! আমাদের ভালো রাস্তায় হাঁটার অধিকার কি শুধুই পূজার কয়দিন? বর্ষার সময় রাস্তা বানালে শুধু ঠিকাদাররাই ধনী হবেন, এ কী কথা! তাঁর আমলে কি ঠিকাদাররা গরিব নাকি?
ফ্লাইওভার: শিলচরের মানুষ চাইলেই ফ্লাইওভার হবে, এমন কথা একেবারেই যুক্তিহীন৷ আসলে ফ্লাইওভার করতে গেলে কিছু উচ্ছেদ করতেই হবে৷ তখন কিছু লোক আপত্তি জানাবেন৷ হিমন্ত তখনই কাজকর্ম গুটিয়ে বলে দেবেন, আমি ১২০০ কোটি টাকা মঞ্জুর করেছিলাম, কিন্তূ শিলচরের মানুষ উড়ালপুল চাইল না৷ এ ছাড়া, ফ্লাইওভারের কাজ নির্ভেজাল ভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলেও পূরসভার নির্বাচন চাই৷
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ কাণ্ড : এই ঘটনাটিকে ঘিরে রাজনীতি করা হচ্ছে৷ বিজেপিই মঙ্গলবার ছাত্রসমাজের নামে আন্দোলন করল, আজ বুধবার বনধ ডাকল৷ মানুষ অবশ্য বনধ ব্যর্থ করে জবাব দিয়েছে৷ মহিলাদের নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে কারও আপত্তি থাকার কথাই নেই৷ কিন্তু মানুষের ক্ষোভ জন্মেছে অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে চাকরিতে বহাল রাখায়৷ তৃণমূল কংগ্রেস এখন বিষয়টি বুঝতে পেরেছে৷ তবে অপরাধীকে গ্রেফতারে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে৷
ধিংয়ের ঘটনা: আরজি কাণ্ডে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে নিয়েছে৷ সিবিআই তদন্তে নামলেও আর কাউকে ধরতে পারেনি৷ কিন্তু ধিংয়ে চারজন দোষী হলেও হিমন্ত বিশ্ব শর্মা একজনকেই গ্রেফতার করেছেন৷ বাকিদের কেন গ্রেফতার করতে পারছেন না?
মিঞাঁ হটাও অভিযান : বিজেপি যখনই পরাজয়ের আশঙ্কায় ভুগে, তখনই হিন্দু-মুসলমানে বিভাজন ঘটায়৷ ২০২৬-র বিপদের গন্ধ পেয়েই হিমন্ত এই সব করছেন৷
মারোয়াড়ি সমাজ: মারোয়াড়িদের নিয়ে কী করলেন তাঁরা! একজন মন্ত্রীর উপস্থিতিতে সবাইকে হাঁটু মুড়ে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হল৷ আলফা যখন আত্মসমর্পণ করে, তখন মানুষ মারার জন্য তাদের হাঁটু মুড়ে ক্ষমাপ্রার্থনা করানো উচিত৷ হিমন্তের সরকার তা না করে একজনের দোষের জন্য শিবসাগরের সকল মারোয়াড়িদের ক্ষমা চাওয়ালেন, এ নিন্দনীয়৷
আলফা স্বাধীন : মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা আলফা স্বাধীনের সুপ্রিমো পরেশ বরুয়ার কথা বলতে গেলেই তাঁকে “ডাঙরিয়া” (বাংলায় মহাশয়) বলে সম্বোধন করেন৷ একজন মুখ্যমন্ত্রী এক জঙ্গিনেতার নাম উল্লেখ করতে গিয়ে “মহাশয়” “মহাশয়” বলছেন, এ কেমন কথা! তাঁর হাতে আবার কিনা রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরও!
কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিংহ একবার “বিন লাদেনজি” বলে ফেলায় বিজেপি তীব্র প্রতিবাদ করেছিল, পরেশ বরুয়াকে মুখ্যমন্ত্রীর “ডাঙরিয়া” বলাটা কি এর কম কিছু?