Barak Updates
হাতির হামলা ঠেকাতে পাথারকান্দিতে কাঁটাতার বরাবর লাগানো হচ্ছে লেবুর চারা
৩০ সেপ্টেম্বরঃ লোকালয়ে হাতি ঢুকে নষ্ট করে দিচ্ছে পাকা ফসল। গুঁড়িয়ে দিচ্ছে বাড়িঘর। তাদের ঠেকাতে এ বার নতুন দাওয়াই। আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবর লাগানো হচ্ছে লেবু ও মরিচের গাছ। করিমগঞ্জ জেলা প্রশাসন প্রাথমিক পর্যায়ে দশ হাজার লেবুর চারা সংগ্রহ করেছে। সেগুলি লাগানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জেলার বনকর্তাদের।
করিমগঞ্জ জেলার পাথারিয়া ফরেস্ট রেঞ্জ এলাকায় বহু বছর থেকেই ১৮ হাতির একটি দল ঘোরাফেরা করছিল। দেশভাগের সময় ভাগ হয়েছে করিমগঞ্জের বনাঞ্চলও। কিন্তু হাতি কি আর অতশত বোঝে! তাই তার চলাচলের কোনও সীমানা নেই। কাঁটাতারের বেড়া বসানোর সময়ে অবশ্য তাদের জন্য ৩০০ মিটার এলাকা ছেড়ে দেওয়া হয়। আগে ওই পথেই সীমান্ত ডিঙাত এরা। বেড়া বসানোর পরে করিডরে সন্তুষ্ট নয়। বিভিন্ন জায়গায় কাঁটাতার ভেঙে ঢুকে পড়ছে। এখন দলটিতে মাত্র ৬টি হাতি রয়েছে। এরাই সভ্যতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তছনছ করে দিচ্ছে খেতের জমি, মানুষের বাড়িঘর। বিশেষ করে, পুতনি চা বাগানের শ্রমিকরা প্রচণ্ড ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। প্রাণহানির ভয়ে সিঁটিয়ে থাকেন তাঁরা।
অভিযোগ পেয়ে জেলাশাসক প্রদীপকুমার তালুকদার ওই এলাকা ঘুরে আসেন। পরে বনকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন। সেখানেই স্থির হয়, কাঁটাতার বরাবর লেবু ও মরিচগাছ লাগানো হবে। হাতি কাঁটাতার ভেঙে ফেললেও লেবুবাগানে ঢুকবে না। একইভাবে মরিচগাছ মাড়িয়ে এগোনোও তাদের পক্ষে মুশকিল হবে। প্রদীপবাবু জানান, বনবিভাগ কাজ শুরু করে দিয়েছে। ভারত-ভুটান সীমান্তেও লেবুগাছ লাগিয়ে হাতির উপদ্রব ঠেকানো সম্ভব হয়েছিল।
কিন্তু যে হাতির অনুপ্রবেশ ঠেকাতে এতসব ব্যবস্থা, সেগুলি আসলে কার? প্রদীপবাবুর বক্তব্য, দুই দেশে অবাধে চলাচলের জন্য সেগুলির মালিকানা চূড়ান্ত হয়নি। যখন যে দেশে থাকে, তখন সে দেশের। তবে পরিবেশপ্রেমীরা জেলা প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের কথায়, এই করে ভারতের হাতিগুলিকে সোজা বাংলাদেশের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। বরং তাদের লোকালয়ে আসা ঠেকাতে বনাঞ্চলের সীমা চূড়ান্ত করা হোক। সেখানে বেশি করে গাছ লাগানো হোক। তাই বলে হাতি ঠেকাতে কোনওমতেই লেবু বা মরিচের চারা নয়।