Barak UpdatesHappeningsBreaking News
সুশান্ত ভট্টাচার্য স্মরণে : জীবন যেন এক মহাকাব্যিক আখ্যান, লিখেছেন দীপক সেনগুপ্ত
//দীপক সেনগুপ্ত//
জীবন আর মহাজীবনের মোহনায় পৌঁছে সুশান্তদা শুয়ে আছেন প্রাণহীন দেহে। সুশান্ত ভট্টাচার্য সম্পর্কে বলতে গিয়ে যে কথাটা মনে এল তা হল তিনি ছিলেন ‘কুটিল সংসারে শিশু ভোলানাথ’। তাঁর এই শিশু মনের সরলতা কোন নির্বোধের সরলতা নয় এই সরলতায় জ্ঞানের প্রকাশ। সুশান্তদার স্নাতকোত্তর উপাধির সঠিক সংখ্যা নিয়ে মতবিরোধ আছে তবে আসাম বিশ্ববিদ্যালয় সহ একাধিক জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর উপাধি আছে এটা নিশ্চিত। সুশান্তদার প্রাথমিক পরিচয় তিনি কবি। পৈতৃক ব্যবসার উত্তরাধিকার নিয়ে তিনি বিত্তের পেছনে না গিয়ে চিত্ত প্রসারণের কাজই করে গেছেন। অনেক কবিতা সংকলন গ্রন্থের প্রকাশ থেকে শুরু করে যে কোন সাহিত্য বিষয়ক আলোচনায় সুশান্তদার উৎসাহব্যঞ্জক উদ্যোগ ও উপস্থিতি অনুজদের অনুপ্রাণিত করত। উন্নত জীবনবোধ ও মানবতাবোধের আদর্শকে নিজের কবিতায় তুলে ধরেছিলেন। ‘সত্যম, শিবম সুন্দরম’ সত্য এবং সুন্দরকে কবিতায় ব্যক্ত করেছেন। অত্যন্ত সমাজ সচেতন এবং রাজনৈতিক চেতনার অধিকারী সুশান্তদা নিজেকে ক্লেদাক্ত রাজনীতির ছোঁয়া থেকে বাঁচিয়ে রাখতেন। মেধা ও প্রজ্ঞা ছিল তাঁর ব্যক্তিত্বের অলংকার। সারস্বত সমাজে এমন একজন ব্যক্তির বৌদ্ধিক দ্যুতিতে অনেকেই আকৃষ্ট হতেন আর তখন সুশান্তদা তাঁর সহজাত ক্ষমতায় কাছে টেনে নিতেন এবং সাবলীল মেলামেশায় সকলের আপনজন হয়ে উঠতেন। সাংস্কৃতিক মহলে তাঁর সপ্রতিভ বিচরণে অনেকেই উৎসাহিত হতেন। সহজ মনের মন ভুলানো হাসিতে তাঁর সুদর্শন মুখমণ্ডল যেন পূর্ণিমার চাঁদ হয়ে আলোর বন্যায় ভাসিয়ে দিত। সুশান্তদা চলে গেছেন , আর আসবেন না এই চলমান সংসারে কিন্তু তাঁর স্মৃতি অবচেতন মনের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে প্রদীপ হয়ে জ্বলবে। মৃত্যুকে জয় করে অমরত্বের সন্ধানে অনন্তকাল পথ হাঁটবেন যেমন হাঁটতেন এই শহরের অলিগলি রাজপথে।