Barak UpdatesHappeningsBreaking News

সুপারি ব্যবসা বন্ধ করে সরকার বরাকের গ্রামীণ অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দিতে চাইছে, অভিযোগ কংগ্রেসের

ওয়েটুবরাক, ১৬ নভেম্বর : গত দুবছর থেকেই সাংঘাতিক বিপাকের মধ্যে রয়েছেন স্থানীয় সুপারি ব্যবসায়ীরা। বার্মিজ সুপারির ব্যবসা বন্ধ করার নামে বরাক উপত্যকার সুপারি ব্যবসায়ীদের চরম হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ শিলচর জেলা কংগ্রেস কমিটির। সভাপতি তমালকান্তি বণিক বলেন, স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সুপারি তাঁরা বিক্রি করতে পারছেন না। আর এই সমস্যা সমাধানের জন্য সরকারের কাছে বার বার আবেদন জানিয়েও সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণে ব্যর্থ হয়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীকুল। সরকার অজুহাত হিসাবে দেখাচ্ছে যে, মিজোরাম বরাক উপত্যকাকে বার্মিজ সুপারি পাচারের করিডোর হিসাবে ব্যবহার করছে, আর এর জন্য গত ২১ অক্টোবর মিজোরামের কলাশিব জেলা প্রশাসনকে নিয়মাবলি দর্শিয়ে চিঠি দিয়েছেন কাছাড়ের জেলাশাসক। কিন্তু সমস্যা যে তিমিরে সেই তিমিরেই রয়ে গেছে।

তমালের কথায়,  লোক দেখানো চিঠি চালাচালি করেই সরকার দায় ঝেড়ে ফেলতে চাইছে৷ সমস্যা সমাধানের কোনও সদর্থক ভূমিকা গ্রহণ না করে বরাকের গ্রামীণ অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দিতে চাইছে। বরাকের প্রতি সরকারি বৈষম্যের নজির তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর চাকরির ক্ষেত্রে ইতিমধ্যেই প্রমাণ হয়ে গেছে। বর্তমান সরকার যে বরাক উপত্যকার প্রতি বৈমাতৃ সুলভ মনোভাব পোষণ করে সেটা আজ দিনের আলোর মতো স্পষ্ট।

কংগ্রেস সভাপতি বলেন, বরাক উপত্যকায় উৎপাদিত সুপারি ও রটা বা প্রসেসড্ সুপারির ভালো চাহিদা ও বাজার রয়েছে বহি:রাজ্যে। করিমগঞ্জের ভাঙ্গা ও কাছাড়ের ভাগা বাজারে রটা প্রসেসিং করা হয়। এই উদ্যোগের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন বহু বহু মানুষ। কাছাড়,  করিমগঞ্জের গ্রামে গ্রামে রয়েছে বড় বড় সুপারি বাগান৷ সাধারণ মানুষ ব্যাঙ্কঋণ নিয়ে লগ্নি করেন ওই সব বাগানে। বর্তমানে তাঁরা সুপারি বিক্রি করতে পারছেন না৷ গুদামে, বাড়িতে থেকে নষ্ট হচ্ছে সেগুলি৷ অপরদিকে ব্যাঙ্কঋণ পরিশোধ করার নিয়মিত তাগাদা তাঁদেরকে জীবন্ত অবস্থায় মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে৷ কিন্তু সরকার নির্বিকার। গ্রামীণ গৃহস্থ বাড়িতে স্বল্প আয়ের সীমায় থাকা মানুষেরা তাঁদের বাড়িতে অল্প মাত্রায় হলেও করে থাকেন সুপারির চাষ৷ কারণ এই অঞ্চলের সুপারির বাজার দর ভালো৷ আর ওই সব মানুষেরা বাড়িতে ফলানো সুপারি বিক্রি করে কেউ ঘরবাড়ি মেরামত করেন , মেয়ের বিয়ের পয়সা জমান৷ কেউ-বা গবাদি পশু ক্রয় করেন। মোদ্দা কথা, এটাই তাঁদের নিজস্ব উদ্যোগে বাৎসরিক রোজগারের একটি বিশ্বাসযাগ্য পথ। সরকারের দুরভিসন্ধিতে আজ সে পথ বন্ধ বলে মন্তব্য করেন তমালকান্তি। তাঁর অভিযোগ, মুখে উন্নয়নের বুলি আওড়ানো সরকারের সমস্যা সমাধানের অপারগতার জন্য সংকটে বরাকের গ্রামীণ অর্থনীতি। মানুষের দুর্দশায়, দুর্দিনে মানুষের পাশে দাঁড়ানো জাতীয় কংগ্রেসের ভাবনা ও আদর্শ বলে মন্তব্য করে তিনি সরকারকে হুঁশিয়ার করে দেন, অবিলম্বে  সরকার কোনও সদর্থক ভূমিকা গ্রহণ না করলে এবং স্থানীয় সুপারি চাষী ও ব্যবসায়ীদের কথা চিন্তা না করে তবে কাছাড়ে কংগ্রেস সরকারের এই অবহেলার বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলবে।


সঙ্গে শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সাংবাদিক নিগ্রহের ঘটনারও নিন্দা, ধিক্কার জানায় শিলচর জেলা কংগ্রেস কমিটি। ওই ঘটনায় জড়িত প্রত্যেক দোষী ব্যক্তির কঠোর শাস্তির দাবি জানান তাঁরা। তমাল বলেন, কংগ্রেস সরকারের আমলে গড়ে ওঠা শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বরাক উপত্যকা সহ পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলির জন্যও একমাত্র বৃহৎ সরকারি হাসপাতাল। তাই সেখানে রোগী ও সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা জরুরি৷ এই ব্যাপারে কোনোও গাফিলতি সহ্য করা হবে না বলেও তমালকান্তি বণিক হুঁশিয়ারি দেন৷

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker