Barak UpdatesHappeningsBreaking News
সিএএ-র নামে বাঙালি হিন্দুদের চূড়ান্ত অপমান করছে বিজেপি সরকার, অভিযোগ বিডিএফের
ওয়েটুবরাক, ১ ফেব্রুয়ারি : ২০১৯-র ডিসেম্বর মাসে উভয় সংসদে গৃহীত হয়ে আইনে পরিণত হয়েছিল নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। কিন্তু গত চার বছরে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় বিধি তৈরি করতে সক্ষম হয়নি তথাকথিত হিন্দুদরদী কেন্দ্র সরকার। এখন আবার নির্বাচনের প্রাক্কালে এই ইস্যুতে বিভিন্ন পরস্পরবিরোধী বক্তব্য শোনা যাচ্ছে বিজেপির নেতা মন্ত্রীদের বয়ানে। এই নিয়ে এবার তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করল বরাক ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট।
বিডিএফ মিডিয়া সেলের মুখ্য আহ্বায়ক জয়দীপ ভট্টাচার্য বলেন, যদিও তাঁরা এই আইনকে বিজেপি দলের বিভাজনকামী রাজনীতির হাতিয়ার বলে মনে করেন, তবুও যেভাবে এই ইস্যুতে ছেলেখেলা চলছে, তাঁরা তার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। তিনি বলেন যে, বিজেপি দলের নেতা মন্ত্রীরা যেভাবে এই আইন নিয়ে বয়ান দিচ্ছেন তাতে মনে হচ্ছে দেশভাগের শিকার বাঙালি হিন্দুরা শুধু ভোটের ক্রীড়নক মাত্র। প্রতিবার নির্বাচন আসলেই এই ইস্যুকে সামনে এনে ভোট হাসিল করাই এই দলের অন্যতম উদ্দেশ্য। অন্যথা বিগত চার বছর ধরে এই আইনের সামান্য বিধিনিয়ম তৈরি করা যায় না এটি মোটেই বিশ্বাসযোগ্য নয়। জয়দীপ বলেন, এভাবে দেশভাগের বলি বাঙালি হিন্দুদের চূড়ান্ত অপমান করছে এই সরকার।
তিনি আরও বলেন যে, সম্প্রতি আর এস এস প্রধান মোহন ভাগবতকে সামনে বসিয়ে রাজ্যের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী বললেন যে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন কার্যকর হবার আপাতত কোনও সম্ভবনা নেই৷ কারণ এই ব্যাপারটি সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন রয়েছে। তিনি আরও বলেন যে, এই আইনের আর কোন প্রয়োজনীয়তাও নেই। তাঁর এই বক্তব্যের কোনও প্রতিবাদ কিন্তু আর এস এস প্রধানের মুখে শোনা যায়নি। অথচ আর এস এসকে হিন্দুদের স্বার্থে সর্বদা সোচ্চার থাকতে দেখা যায়। তিনি বলেন, তবে কি বাঙালি হিন্দুদের হিন্দু বলে মনে করে না এই সংগঠন ?
আবার তার পরের দিন বিজেপি দলের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর জনসভায় ঘোষণা করেন যে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এই আইন কার্যকর হবে। জয়দীপ বলেন, এইসব পরস্পর বিরোধী বক্তব্য থেকে এটা স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে যে এসবই ভোটের স্বার্থে করা হচ্ছে। যেহেতু আসামে এই আইনের বিরোধিতা হবে তাই এখানে এটিকে নস্যাৎ করার চেষ্টা চলছে। অপরপক্ষে মতুয়া সম্প্রদায়ের ভোটকে লক্ষ্য করে পশ্চিমবাংলায় সম্পূর্ণ ভিন্ন বক্তব্য রাখা হচ্ছে। জয়দীপ বলেন, এসব থেকে এটা স্পষ্ট যে কেন্দ্র ও রাজ্যের সরকার দেশভাগের শিকার, ছিন্নমূল বাঙালি হিন্দুদের নাগরিকত্ব নিয়ে আদৌ চিন্তিত নয়, শুধু ললিপপ দেখিয়ে বাঙালি হিন্দুদের ভোট আদায়ই তাঁদের একমাত্র উদ্দেশ্য। অথচ আসামে এই দলের উত্থানের পেছনে মূল হোতা ছিলেন বাঙালি হিন্দুরাই।
জয়দীপ বলেন, শাসক দলের এই অপমান ও দ্বিচারিতার জবাব অবশ্যই দিতে হবে। তাই আসন্ন নির্বাচনে রাজ্যের প্রতিজন বাঙালি হিন্দুকে বিজেপি দলকে ভোট না দেবার জোরালো আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।