Barak UpdatesHappenings
শিলচর উইমেন্স কলেজে আন্তর্জাতিক নারী দিবস
ওয়ে টু বরাক, ১০ মার্চ ঃ বিভিন্ন কার্যসূচির মাধ্যমে শিলচর উইমেন্স কলেজে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে শিলচর উইমেন্স কলেজের এনএসএস শাখার উদ্যোগে বৃহস্পতিবার এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি বুদ্ধদেব চৌধুরী এবং কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষা ডঃ সুস্পিতা দাসের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত সভায় ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন শিলচর মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক তনুশ্রী দেবগুপ্ত এবং আইনজীবী স্বর্ণালী ঘোষ।
স্বাগত বক্তব্য রাখতে গিয়ে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষা ডঃ সুস্পিতা দাস মহিলাদের নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেন। মহিলাদের ওপর নির্যাতন, হিংসার কথা তুলে ধরার পাশাপাশি মহিলাদের বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক রোগের বিষয়ে চর্চা ও আলোকপাত করে সেইসব সমস্যা থেকে উত্তরণের পথ খোঁজার চেষ্টার উদ্দেশ্যেই উইমেন্স কলেজে আয়োজিত হচ্ছে এই অনুষ্ঠান বলে মন্তব্য করেন তিনি। কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি বুদ্ধদেব চৌধুরী বলেন, বিগত দিনের তুলনায় বর্তমানে মহিলাদের বিভিন্ন বিষয়ে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। মহিলাদের নানা ধরনের সরকারি সুযোগ-সুবিধা প্রদানের কথাও ব্যক্ত করেন তিনি।
বর্তমানে অন্যতম চর্চিত বিষয় বাল্যবিবাহের আইনি খুঁটিনাটি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আইনজীবী স্বর্ণালী ঘোষ বলেন, ভারতবর্ষে এই আইন প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে রাজা রামমোহন রায়ের প্রচেষ্টায় ১৯২৯ সালে শুরু হয়েছিল। পরবর্তীতে এই আইন অনেকবার সংশোধিত হয়েছে। স্বর্ণালী বলেন, বাল্যবিবাহের প্রধান কারণ দেশের দারিদ্রতা, যৌতুক প্রথা ও সামাজিক নিরাপত্তার অভাব। তিনি আরও বলেন, প্রকৃত শিক্ষাই চিন্তাশক্তির গর্ভগৃহ এবং সঠিক শিক্ষার মাধ্যমে আমাদের পারিপার্শ্বিক এবং সামাজিক বিষয়বস্তুর মূল্যবোধ গঠন হয়।
অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত বক্তা ডাঃ তনুশ্রী দেবগুপ্ত মেয়েদের মানসিক সুস্থতার কথা তুলে ধরে বলেন, ন্যূনতম আঠারো বছরের নিচের মেয়েদের বিয়ে হলে তাদের শারীরিক এবং মানসিক গঠন অপূর্ণ থেকে যায়। এছাড়াও এই পরিস্থিতিতে মেয়েদের শিক্ষাও অসম্পূর্ণ থেকে যায়। নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা যেমন ডিপ্রেসিভ ডিসঅর্ডার, এঙ্গজাইটি ও প্যানিক অ্যাটাকের মতো সমস্যায় ভুগতে হয় মেয়েদের যা তাদের কর্মক্ষমতা, সাধারণ জীবনশৈলী নিয়ে নানা ধরনের সমস্যার সৃষ্টি করে। ডাঃ দেবগুপ্ত আরও বলেন, মেয়েদের অসম্পূর্ণ শিক্ষা তাদের শারীরিক ও মানসিকভাবে অনগ্রসর করে তোলে, যা দেশের সর্বাঙ্গীন অর্থ সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে। সমাজের স্বার্থে মেয়েদের শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রেরণা দেওয়া এবং সেই শিক্ষা কর্মক্ষেত্রে বাস্তবায়িত করে অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ্যময়তা উপভোগ করার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন তিনি। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এনএসএস শাখার কো- অর্ডিনেটর ড. সংঘমিত্রা দেবনাথ। লাইব্রেরিয়ান ড. সরিতা ভট্টাচার্য ধন্যবাদ সূচক বক্তব্য রাখেন।