Barak UpdatesHappeningsBreaking News
শিলচরে আজাদ হিন্দ সরকারের প্রতিষ্ঠা দিবস পালিত
ওয়েটুবরাক, ২৫ অক্টোবর : গত ২১ অক্টোবর শনিবার নেতাজি সুভাষ ফাউন্ডেশন, কাছাড়, শিলচর-এর উদ্যোগে বিভিন্ন কার্যসূচির মাধ্যমে আজাদ হিন্দ সরকারের প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করা হয়। সকাল ১০টায় অম্বিকাপট্টিস্থিত ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে প্রথমে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি নীহার রঞ্জন পাল, মহাসচিব প্রণব রায় চৌধুরী, স্বদেশ বিশ্বাস, সাধন পুরকায়স্থ, হিল্লোল ভট্টাচার্য, মিহির নন্দী, দীপক সেনগুপ্ত, মৃদুলা ভট্টাচার্য, বেঙ্গলি ফরোয়ার্ড ক্লাবের সভাপতি সুশীল কুমার কর, সম্পাদক বিশ্বজিৎ দেব প্রমুখ। উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন বাপী রায় ও দিবাকর দাস। বাদ্যযন্ত্রে ছিলেন সন্তোষ চন্দ।
সাড়ে দশটায় আইএনএ-র ব্যাঘ্র শোভিত পতাকা উত্তোলন করেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি নীহার রঞ্জন। তিনি বলেন, ১৯৪৩ সালের ২১ অক্টোবর দিনটিতেই ভারতবর্ষের স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু সিঙ্গাপুরে অস্থায়ী আজাদ হিন্দ সরকার গঠন করেছিলেন। আজাদ হিন্দ সরকারের রাষ্ট্রপ্রধান রূপে সেদিন নেতাজি ভারতবর্ষের প্রতি আনুগত্যের যে শপথ গ্রহণ করেছিলেন, সেই শপথবাক্যও পাঠ করে শোনান তিনি । আজাদ হিন্দ সরকারের ঘোষণাপত্র পাঠ করেন সংস্থার সহ-সভাপতি দীপক সেনগুপ্ত।
ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে একুশে অক্টোবর দিনটির গুরুত্ব ও তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে একে একে বক্তব্য রাখেন শিক্ষাবিদ সুব্রত নাথ, দীপঙ্কর চন্দ, সাধন পুরকায়স্থ, অশোক কুমার দেব, হিল্লোল ভট্টাচার্য, ডা: রূপাঞ্জলি গুপ্ত, রসরাজ দাস, সুব্রত ভট্টাচার্য প্রমুখ। বক্তারা সকলেই মত ব্যক্ত করেন যে, নেতাজির নেতৃত্বে আজাদ হিন্দ সরকারের পরিচালনায় আজাদ হিন্দ ফৌজের ব্রিটিশ বিরোধী যুদ্ধের পরিণতিতেই ভারতের স্বাধীনতা ত্বরান্বিত হয়।প্রারম্ভিক বক্তব্যে সুব্রত নাথ বলেন, নেতাজি প্রতিষ্ঠিত আজাদ হিন্দ সরকারকে জাপান, জার্মানি, ইটালি, বার্মা, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, ইন্দোচিন, মাঞ্চুরিয়া ও ক্রোয়েশিয়ার মতো বিশ্বের নয়টি স্বাধীন রাষ্ট্র স্বীকৃতি প্রদান করেছিল।
সভাপতির ভাষণে নীহার রঞ্জন পাল আজাদ হিন্দ ফৌজ ও আজাদ হিন্দ সরকার গঠনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন।তিনি বলেন,নেতাজির নেতৃত্বে আজ থেকে আট দশক আগে শুধুমাত্র মহিলাদের নিয়ে একটি সম্পূর্ণ রেজিমেন্ট গড়ে উঠেছিল আজাদ হিন্দ ফৌজের মধ্যে। নেতাজি যার নামকরণ করেছিলেন- “ঝাঁসির রানি রেজিমেন্ট”। ইতিহাসের সেই গৌরবময় অধ্যায়কে নতুন প্রজন্মের কাছে উদ্ভাসিত করে তুলতে নেতাজির আত্মত্যাগ ও সংগ্রামী জীবনগাথার ব্যাপক চর্চা একান্ত আবশ্যক বলে তিনি মত ব্যক্ত করেন।
এদিন নীহারবাবু বলেন,নেতাজি সম্পর্কিত গোপন ফাইল প্রকাশের পর একথা সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত যে, ১৯৪৫ সালের ১৮ আগস্ট তাইহোকুতে (বর্তমান তাইপে) বিমান দুর্ঘটনাতেই সুভাষচন্দ্র শহিদের মৃত্যু বরণ করেন।
সবশেষে ধন্যবাদসূচক বক্তব্য পেশ করেন ফাউন্ডেশনের সহ-সম্পাদক মিহির নন্দী। আজাদ হিন্দ ফৌজের জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে। সমস্ত অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ফাউন্ডেশনের মহাসচিব প্রণব রায়চৌধুরী।