Barak UpdatesHappeningsBreaking News
শিলচরের এমএলএ-এমপির ডিএনএ-তেই নেই সমাজসেবা, পুরকর বৃদ্ধি নিয়ে বিঁধলেন সুস্মিতা
ওয়েটুবরাক, ২ সেপ্টেম্বরঃ পুরকর অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধির পরিকল্পনায় যে সেলফ অ্যাসেসমেন্ট ফর্ম দেওয়া হচ্ছে, তাতে উদ্বিগ্ন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী, সাংসদ সুস্মিতা দেব। পশ্চিমবঙ্গের সাংসদ, ত্রিপুরার দলীয় ইনচার্জ সুস্মিতা শিলচরে এসেই এ নিয়ে খোঁজখবর শুরু করেন। শুক্রবার সকালেই দেখা করেন জেলাশাসক রোহনকুমার ঝা-র সঙ্গে। ঝা স্পষ্ট করেই তৃণমূল নেত্রীকে বলেন, এটা সরকারি সিদ্ধান্ত। এ নিয়ে তাঁর পক্ষে কিছু করা বা বলা সম্ভব নয়। এর পরই সুস্মিতা জেলার সদ্যনিযুক্ত অভিভাবক মন্ত্রী জয়ন্তমল্ল বরুয়াকে ফোন করেন। তাঁর কাছে শিলচর শহরবাসীর কথাগুলি পৌঁছে দেন। মন্ত্রী বরুয়া বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে তাঁকে আশ্বস্ত করেছেন। তিনি তাই মন্ত্রীকে এক সপ্তাহ সময় দিতে চান। বলেন আট সেপ্টেম্বরের মধ্যে আশ্বাস বাস্তবায়িত না হলে খেলা হবে। তৃণমূল কংগ্রেস এমন ঘোর অন্যায় কিছুতেই হতে দেবে না।
সুস্মিতা দেব বিরোধী সাংসদ, ভিন রাজ্য থেকে নির্বাচিত। এর পরও এতটা করতে পারলে শিলচরের সাংসদ-বিধায়করা কী করছেন? সাংবাদিকের মুখে এমন প্রশ্ন পেয়ে ওভার-বাউন্ডারি হাঁকাতে দেরি করেননি। বলেন, তাঁরা যে মানুষের জন্য কী করতে পারেন, তা বন্যার সময়েই দেখা গিয়েছে। এর পরই তাঁর মন্তব্য, তাঁদের ডিএনএ-তেই নেই সমাজসেবা। কোথায় আর এঁরা সমাজসেবা করে, এঁরা ব্যস্ত নিজ স্বার্থে।
সেলফ অ্যাসেসমেন্ট নিয়ে বিজেপি সরকারের প্রশাসনযন্ত্র মাইকিং করে ফর্ম পূরণের শেষ তারিখ দশ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জানিয়ে যাচ্ছে। তাঁর পুরনো দল বিভিন্ন সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে জোট গড়ে আহ্বান জানিযেছে, এই ফর্ম পূরণ করবেন না। চার সংগঠনের আরেক জোটও এই অনুরোধ জানিয়ে প্রচারে নেমেছে।
পুরসদস্য থেকে চেয়ারপার্সন, বিধানসভা, লোকসভা হয়ে এখন রাজ্যসভার সদস্য সুস্মিতাও বললেন, ফর্ম আমরা জমা করব না। কারণ ফর্মে সই দিয়ে জমা করার অর্থই হলো, সেলফ অ্যাসেসমেন্টের জন্য যে হার বেঁধে দেওয়া হয়েছে, তা মেনে নেওয়া। তাঁর কথায়, প্রয়োজনীয় তথ্য জানাতে শিলচরবাসীর আপত্তি নেই। কর দিতেও প্রত্যেকে রাজি রয়েছেন। কিন্তু ফর্ম সই করে ওই দরে অনুমোদনের প্রশ্নই ওঠে না। তাই তাঁর প্রস্তাব, পুরসভার তথ্যটাই যদি প্রয়োজনীয়, তবে তা সাদা কাগজে লিখে সই করে জমা করা হোক।
ব্যারিস্টার সুস্মিতা দেবের সহজ যুক্তি, সেলফ অ্যাসেসমেন্টের কিছু নীতিনিয়ম রয়েছে। তাতে প্রথমেই বলা হয়েছে, জেলা পর্যায়ের একটি কমিটিই আলোচনার মাধ্যমে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। আর জেলা পর্যায়ের কমিটিতে জেলাশাসক হবেন চেয়ারপার্সন। সঙ্গে পুরসভার সভাপতি ও উপসভাপতি সদস্য থাকবেন। এখন শিলচর পুরসভায় সভাপতি, উপসভাপতি নেই। ফলে জেলা পর্যায়ের কমিটিই গঠন করা যায় না। কমিটি না থাকলে সেলফ অ্যাসেসমেন্টের জন্য রিভ্যালুয়েশন কারা করল। ফলে গোটা ব্যাপারটাই নির্বাচিত পুরবোর্ড ছাড়া হতে পারে না। তাই তাঁর কথায়, তথ্য নিতে নিয়ে যান, কিন্তু রিভ্যালুয়েশন বা করের পরিমাণ চূড়ান্ত করার জন্য পুরবোর্ড গঠনের জন্য অপেক্ষা করতেই হবে।