Barak UpdatesHappeningsBreaking News
বাজপেয়ীর নামে উৎসর্গ কাছাড়ের বায়ো-ডাইভার্সিটি পার্কBio-diversity park in Cachar dedicated in the memory of Vajpayee
১০ জানুয়ারিঃ ধলাইয়ে নবনির্মিত বায়ো-ডাইভারসিটি পার্কটি দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত অটলবিহারী বাজপেয়ীর নামে উৎসর্গ করলেন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল। রবিবার সন্ধ্যায় নিজের হাতে পার্কটি উদ্বোধন করেছেন তিনি।
বন বিভাগের উদ্যোগে এই পার্ক গড়ে তোলা হয়েছে৷ সেখানে এক হাজারের বেশি বহু মূল্যবান গাছপালা রোপন এবং সংরক্ষণ করা হচ্ছে। গতমাসে মহাসড়কের জিরো পয়েন্টে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর মূর্তি বসানো হয়েছিল, সেটাই ছিল উত্তর-পূর্ব ভারতে বাজপেয়ীর প্রথম মূর্তি স্থাপনের নিদর্শন। এবার বায়ো-ডাইভারসিটি পার্ক অটল বিহারী বাজপেয়ীর নামে উৎসর্গ করা হলো।
CM Shri @sarbanandsonwal speaking at the public meeting after inaugurating Dholai PS and Sahitya Manishi Upavan in Cachar district. https://t.co/bVSz0hNOr1
— Chief Minister Assam (@CMOfficeAssam) January 10, 2021
মুখ্যমন্ত্রী ধলাই সহ বরাক উপত্যকার প্রত্যেক ব্যক্তির কাছে আবেদন জানান, তারা যেন পার্ককে নিজের সন্তানের মত স্নেহ করতে শেখেন। তিনি বলেন, সরকারের তরফে অনেক যত্ন করে পার্কটি বানানো হয়েছে, তবে এতে বনবিভাগের আধিকারিক সহ অনেকের অবদান রয়েছে। অনেক বিরল প্রজাতির গাছপালা সংগ্রহ করে এখানে নিয়ে আসা হয়েছে এবং তাদের পর্যাপ্ত রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে শুধু সরকারি আধিকারিকরা চাইলেই এগুলো রক্ষা করা যাবে না, সাধারণ মানুষকে এগিয়ে এসে সাহায্য করতে হবে। অসম তথা উত্তর-পূর্বের প্রাকৃতিক সম্পদ নিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এই পার্কের মাধ্যমে জানতে পারবেন সাধারণ মানুষ। গাছগুলো যেন নষ্ট না হয় এবং পার্কের সৌন্দর্য বজায় থাকে সে দিকে এলাকাবাসীকে নজর রাখতে হবে। সোনোয়ালের অনুরোধ, “ভবিষ্যতে দেশ-বিদেশের মানুষ এই পার্কে ঘুরতে আসবেন, তারা যেন আপনাদের অতিথি হয়ে আসেন এবং যাবার সময় প্রশংসা করেন, এই দায়িত্ব আপনাদের।”
আনুষ্ঠানিকভাবে পার্ক উন্মোচন করার পর মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল বলেন, শুধুমাত্র সময় কাটানো বা ঘুরে দেখার জন্য এই পার্কটি বানানো হয়নি। রাজ্যের প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ এবং এর সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তোলাই হচ্ছে পার্কের মূল উদ্দেশ্য। নিজেদের ঘরের সদস্যদের, বিশেষ করে যারা পড়াশোনা করছে, তাদের এই পার্কে নিয়ে যেতে পরামর্শ দেন তিনি এবং এখানে যেসব বিরল গাছপালার সংরক্ষণ হচ্ছে সেগুলো নিয়ে আলোচনা করতে বলেন৷ তিনি পার্কটি ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত অটলবিহারী বাজপেয়ীর নামে উৎসর্গ করেন। বলেন, “বাজপেয়ী সারাজীবন দেশের সেবায় কাজ করে গেছেন এবং তার জন্যই আজ শিক্ষিত যুব সমাজ রাজনীতিবিদদের শ্রদ্ধা করতে শিখেছে। আমরা যদি সবাই মিলে এই বায়ো-ডাইভারসিটি পার্ককে একটি শিক্ষাকেন্দ্রের মতো শ্রদ্ধা করতে পারি এবং সমাজে পরিবেশ নিয়ে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়া যায়, তবে সবথেকে বেশি খুশি হবেন প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী। অন্তত আমি এমনটাই বিশ্বাস করি।”
মুখ্যমন্ত্রী এদিন সভায় বসে বনমন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্যর কাজের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, “ফরেস্ট সার্ভে অফ ইন্ডিয়া অসম রাজ্যের বন-সংরক্ষণ কার্যকলাপকে বিশেষভাবে সাধুবাদ জানিয়েছেন। বন-সংরক্ষণের পাশাপাশি বন্য জীবজন্তুর অবস্থা আগে থেকে অনেক সংরক্ষিত এবং সুন্দর হয়েছে। বিশেষ করে অসমে বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি হওয়ায় সারাদেশের কাছে আমাদের মাথা উঁচু হয়েছে। অবশ্যই বনমন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্যের সদিচ্ছা এবং অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলেই এটা সম্ভব হয়েছে। আমরা তার তত্ত্বাবধানে আগামীতে বন সংরক্ষণের ক্ষেত্রে সারা পৃথিবীর কাছে এক নজির রাখতে সমর্থ হবে বলেই বিশ্বাস করি আমি।”
বন মন্ত্রী জানান, অর্কিড থেকে শুরু করে বেশকিছু বহু মূল্যবান গাছ এই বায়ো-ডাইভারসিটি পার্কে রোপণ করা হয়েছে এবং সেগুলো সংরক্ষণ করা হবে। উত্তর-পূর্ব ভারতের অনেকগুলো বিরল গাছ যেগুলো প্রায় শেষ হওয়ার পথে, সেগুলোর চারা এখানে লাগিয়ে সংরক্ষণ করা হবে, পাশাপাশি যুবসমাজকে এগুলো দেখানো হবে। তিনি বলেন, “শুধুমাত্র একটা পার্কের মাধ্যমে আমরা বিরল প্রজাতির গাছপালা সংরক্ষণ করতে পারব না। বর্তমান প্রজন্ম অনেক বেশি সচেতন, তাদেরকে বুঝিয়ে বলতে পারলে শুধুমাত্র বরাক উপত্যকা নয়, সারা উত্তর-পূর্বে বিরল গাছগুলো তারাই রক্ষা করবে।
আগামীতে কাছাড় জেলায় একটি চিড়িয়াখানা গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে পরিমলবাবুর। জানান, এই বছরেই এর কাজ শুরু হবে।