NE UpdatesBarak UpdatesHappeningsBreaking News
মুসলমান বিধায়ক যাতে না বাড়ে, সেই লক্ষ্যেই সীমানা পুনর্নির্ধারণ, স্পষ্ট ইঙ্গিত হিমন্তের
ওয়েটুবরাক, ১ জানুয়ারি : শুধু বিধানসভা কেন্দ্র বা জেলার সীমানা পুনর্নির্ধারণ করলে সমস্যার সমাধান হবে না৷ বিধানসভাতেও জনবিন্যাসগত পরিবর্তন ঠেকাতে হবে৷ নতুন বছরের প্রথম দিনে এ ভাবেই জনবিন্যাসের বদল থামানোর সংকল্প শোনালেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা৷
মুসলমানদের কথা স্পষ্ট করে না বললেও তাদের বিধায়ক সংখ্যা যাতে না বাড়তে পারে, ওই লক্ষ্যেই যে চার জেলার অবলুপ্তি ঘটানো হয়েছে এবং সীমানা পুনর্নির্ধারণ সুপারিশে তাঁর মন্ত্রিসভার সায় মিলেছে, নানা উদাহরণ টেনে হিমন্ত তা বুঝিয়ে দেন৷ বলেন, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ বিধি না মেনে যারা অধিক সন্তানের জন্ম দেন, তাদের পুরস্কৃত করার যুক্তি থাকতে পারে না৷ সোজাসুজি ডিলিমিটেশন মেনে নিলে তাদেরই বিধায়ক সংখ্যা বাড়বে৷ তাতে জন্মনিয়ন্ত্রণ করার জন্য পুরস্কারের বদলে লোকসানই স্বীকার করতে হবে৷ তাঁর কথায়, অসম চুক্তি বা এনআরসি রাজ্যের জনবিন্যাসের পরিবর্তন ঠেকাতে পারেনি৷ তাই অসম ও অসমিয়াদের বাঁচানোর রাস্তা হতে পারে সীমানা পুনর্নির্ধারণ৷ নতুন বছরের প্রথম দিনে এ ভাবেই জনবিন্যাসের বদল থামানোর সংকল্প শোনালেন মুখ্যমন্ত্রী৷
শনিবারই অসম মন্ত্রিসভা তামুলপুর, হোজাই, বজালি ও বিশ্বনাথ চারটি জেলার অবলুপ্তি ঘটায়৷ এর দরুন এরা পুরনো জেলাতেই সংযুক্ত হল৷ আরও কিছু জেলা ও বিধানসভা আসনের সীমানা পরিবর্তন হয়৷ তাতে রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে৷ তা প্রশমনে হিমন্ত রবিবার ওই সব সিদ্ধান্তের কারণ ব্যাখ্যা করেন৷
তিনি বলেন, সীমানা পুনর্নির্ধারণ অসম ও অসমিয়া জাতি বাঁচানোর শেষ চেষ্টা। অসম চুক্তি ওই উদ্দেশ্য পূরণে সফল হয়নি, এনআরসিতেও হয়নি। তাই রাজ্য ও বিধানসভার জনকাঠামোর বদল রুখতেই হবে। জেলার সীমানা আবেগ নয়, যুক্তি দিয়ে করতে হবে বলে তিনি গোড়াতেই আন্দোলন ঠেকানোর কাজ শুরু করে দিলেন। মুখ্যমন্ত্রী শোনান, ওই সব নিয়ে মামলা-মোকদ্দমা হলেও আবেগ থেকে যুক্তি প্রখর হলে আদালতে জয় আসবে। সে সব ভেবেই কড়া পদক্ষেপ নিতে হয়েছে৷ আবেগ ও বিবেকে ভারসাম্য লাগবে। পাশাপাশি তিনি এ কথাও শুনিয়ে রাখেন, নিজের দাবির জন্য সাধারণ মানুষকে কষ্ট দেওয়া ঠিক নয়।
হিমন্ত দাবি করেন, অসম এখন আত্মনির্ভরশীল রাজ্য৷ রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের বেতন দিতে যে ২৫০০ কোটি টাকা লাগে তা রাজ্যের কর-রাজস্ব থেকেই দিতে সক্ষম৷ এটা সম্ভব হয়েছে আন্দোলন ও বনধ হীন বছর কাটানোর দরুন, বলেন হিমন্ত৷ সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে আন্দোলন দানা বাঁধার আশঙ্কায় তিনি বৈদ্যুতিন মাধ্যমকে নিজের পাশে পেতে চান৷ আন্দোলনের ভিডিয়ো না তোলার পরোক্ষ আর্জি জানিয়ে বলেন, ক্যামেরা নিয়ে না গেলে, টিভিতে ওইসব না দেখালে আন্দোলন একেবারে শূন্য হয়ে যাবে, অসমের উন্নয়ন আরও ত্বরান্বিত হবে৷
জঙ্গিরা এখন আর তাঁর কাছে কোনও সমস্যা নয়৷ এমনকী আলফা স্বাধীনও এখন আর মাথাব্যথা নয়৷ হিমন্তের বক্তব্য, “পরেশ বরুয়ার সঙ্গে আলোচনা বা কথা বলা সমস্যা নয়, সেই যোগসূত্ৰ আছে৷ সে জন্যই বড় সমস্যা হচ্ছে না৷ তাঁকে নিয়ে একটাই সমস্যা, তা হল, তিনি স্বাধীনতা বাদে কথা বলতে রাজি নন৷ আমি স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা করতে পারি না।” তাঁর আশা, অসমের মানুষ যদি বোঝায় আমাদের স্বাধীনতা লাগবে না, মানুষ তাঁকে বিশ্বাসঘাতক ভাববে না, এই ভরসা পেলে তিনি ফিরবেন। তাই নতুন বছরের প্রথম দিনে মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বান, সব বুদ্ধিজীবী ও সংগঠন যাতে আলোচনা করে জানায় যে, স্বাধীনতা লাগবে না৷ পরেশ বরুয়া তাহলে অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন বলে আশা করছেন হিমন্ত।