India & World UpdatesHappeningsBreaking News
কৃষি বিষয়ক বিল পাশ, রাজ্যসভার উপাধ্যক্ষের বিরুদ্ধেই অনাস্থা আনলেন বিরোধীরা
২০ সেপ্টেম্বরঃ অধ্যক্ষের অবর্তমানে তাঁর হাতেই থাকে রাজ্যসভার অধিবেশন পরিচালনার দায়িত্ব। রবিবার সেই উপাধ্যক্ষের বিরুদ্ধেই অনাস্থা প্রস্তাব আনার দাবি জানাল বিরোধী দলগুলি। তাও হরিবংশ নারায়ণ সিংহ সবেমাত্র পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন। বিরোধীদের অভিযোগ, তিনি বিতর্কিত কৃষি বিল পাশ করানোর জন্য অনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।
কৃষি বিষয়ক তিনটি বিল লোকসভায় পাশ হয়ে গিয়েছে। সেগুলি হল ‘অত্যাবশ্যক পণ্য আইন’ সংশোধন, ‘কৃষি পণ্য লেনদেন ও বাণিজ্য উন্নয়ন’ এবং ‘কৃষিপণ্যের দাম নিশ্চিত করতে কৃষকদের সুরক্ষা ও ক্ষমতায়ন চুক্তি’ সংক্রান্ত বিল। রবিবার ‘কৃষিপণ্য লেনদেন ও বাণিজ্য উন্নয়ন’ এবং ‘কৃষিপণ্যের দাম নিশ্চিত করতে কৃষকদের সুরক্ষা ও ক্ষমতায়ন চুক্তি’ সংক্রান্ত বিল রাজ্যসভায় ধ্বনিভোটে পাশ হয়ে যায়।
বেলা ১টা ২০ মিনিটে বিলদুটি উত্থাপিত হতেই বিরোধীরা তীব্র আপত্তি জানান। ফলে অধিবেশন কিছু্ক্ষণের জন্য স্থগিত রাখা হয়। পরে ১টা ৪১ মিনিটে অধিবেশন পুনরায় বসতেই উপাধ্যক্ষ বিল দুটি ধ্বনিভোটে দেন এবং পাশ হয়ে যায়।
প্রবীণ কংগ্রেস নেতা আহমেদ প্যাটেল বলেন, উপাধ্যক্ষের দায়িত্ব হল গণতন্ত্রকে মজবুত করা। কিন্তু এ দিন জেডিইউ সাংসদ হরিবংশ সিংহ উপাধ্যক্ষ হিসেবে গণতন্ত্র ধ্বংস করেছেন। তাই তাঁরা তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন বলে প্যাটেল জানান। তৃণমূল কংগ্রেস নেতা ডেরেক ব্রায়েন জানান, অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বিলটি পাশ করিয়ে নিলেও তারা এ নিয়ে সংসদের বাইরে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
আন্দোলন অবশ্য শুরু হয়ে গিয়েছে। এ দিন রাজধানী দিল্লি সহ উত্তর ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে কৃষিক্ষেত্রে সংস্কার সংক্রান্ত তিনটি বিলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়েছে বিরোধী দল এবং বিভিন্ন কৃষক সংগঠন। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, এ সংক্রান্ত তিনটি বিলে কৃষকদের স্বার্থ উপেক্ষা করে বড় ব্যবসায়ী এবং কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে একতরফা ভাবে ফসলের দাম নির্ধারণ এবং মজুতদারির অধিকার দেওয়া হয়েছে।
যদিও এদিন সকালে বিরোধীদের তুমুল প্রতিবাদের মধ্যে রাজ্যসভায় বিল পেশ করে কেন্দ্রীয় কৃষি উন্নয়ন, কৃষক কল্যাণ ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমর বলেন, ‘‘কৃষকদের ফসলের ন্যায্য দাম পাওয়ার পথে এই বিল কোনও প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে না।’’ বিল পাশ হওয়ার পরে বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডার মন্তব্য, ‘‘ভারতীয় কৃষকেরা ৭০ বছরের বঞ্চনা থেকে মুক্তি পেলেন।’’
অন্যদিকে কংগ্রেসের অভিযোগ, এই বিল আসলে ‘কৃষকদের মৃত্যু পরোয়ানা’। বিতর্কে অংশ নিয়ে ডিএমকে সাংসদ টি কে এস ইলানগোভানের মন্তব্য, ‘‘ওই কৃষি বিল ফের চাষিদের ক্রীতদাসে পরিণত করবে।’’ এমনকী, বিজেপির সবচেয়ে পুরনো সহযোগী শিরোমণি অকালি দলের সাংসদ নরেশ গুজরাল কেন্দ্রকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, ‘‘পঞ্জাবের কৃষতদের দুর্বল ভাবার ভুল করবেন না। তাঁরা এই কৃষক-বিরোধী বিল মেনে নেবেন না।’’