Barak UpdatesHappeningsCultureBreaking News
ভাবীকালের ‘কোর্ট মার্শাল’ : সবাই তাক লাগিয়ে দেবার মতোই কাজ করেছেন, লিখেছেন রূপরাজ ভট্টাচার্য
//রূপরাজ ভট্টাচার্য//
‘কোর্ট মার্শাল’ নাটকটা অনেকবারই দেখেছি, নানা নাট্যদলের প্রযোজনায়। কোনো একবার বাংলাদেশের একটি নাট্যদলের দ্বারাও নাটকটি জেলা গ্রন্থাগারে মঞ্চস্থ হয়েছিলো। দেখেছি কোলকাতায়ও। একটি নাটককে একই নাট্যদল যখন দুয়েকবার মঞ্চে নিয়ে আসে, তখনই যেখানে নিজেদের আগে এবং পরের কাজের মধ্যেই তুলনা এসে যায়, সেখানে যখন বিভিন্ন থিয়েটার গ্রুপ সেই একই নাটক মঞ্চস্থ করে, তখন তুলনা তো স্বাভাবিক ভাবেই আসতে বাধ্য। তবুও বলবো এবারের নাটকের পৌষ পরবে ভাবীকালের প্রযোজনাটি ছিলো তুলনারহিত উপস্থাপনা। তবে আমি এবেলা প্রযোজনা বা নির্দেশনা নিয়ে কিছুই বলবো না। আমি কেবল চারজন তরুণ অভিনেতার অসাধারণ অভিনয় নিয়ে আমার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত কোরবো। হ্যাঁ, এই দলে অনেক বয়সে ও অভিজ্ঞতায় প্রবীণ অভিনেতারা আছেন এবং তাঁদের চরিত্র নির্মাণ এমন ভাবে হয়েছে, যেখানে নিজেদের অভিনয় প্রতিভা দেখাবারও যথেষ্টের থেকে বেশি সুযোগ ছিলো; আর যা তাঁরা সকলেই অক্ষরে অক্ষরে কাজে লাগিয়েছেন। এককথায় সবাই তাক লাগিয়ে দেবার মতোই কাজ করেছেন। এ বলে আমায় দ্যাখ, ও বলে আমায়।
কিন্তু বন্দুক হাতে স্টেজের কোণায় চোখে না পড়ার দূরত্বে দাঁড়িয়েছিল যে সৈনিক, সেই গৌরব রবিদাসকে এড়িয়ে যাই কী করে? কবুল করছি, প্রথম দিকটায় তাকে প্রায় চোখেই পড়েনি, মানে তার দিকে তাকাইই নি। অথচ নাটকের কেবলমাত্র দুটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে গৌরবের চমকে দেবার মতো অভিনয় আমাকে মুগ্ধ করেছে বৈকি। তার কণ্ঠের দার্ঢ্য আর বিশেষ মুহূর্তে আঙ্গিক অভিনয় গৌরবের শক্তিকে প্রমাণ করেছে প্রবল ভাবে। তাছাড়া, জাজের ভূমিকায় সারাক্ষণ চেয়ারে বসে থেকে, যেখানে শারীরিক সঞ্চালনের সুযোগ নেই, সেখানে কেবলমাত্র কণ্ঠ আর মুখের অভিব্যক্তিতে অভিভূত করলো শুভময় চন্দ। আরেকজন পল্লব ভট্টাচার্য, তারও অনেকটা সময় ঠায় বসে থাকা ছাড়া কিছুই করার ছিলো না। কিন্তু এই অভিনেতার আরও অভিনয় দেখেছি, সবসময়ই তার ভাগের নির্দিষ্ট চরিত্রের গভীরে ডুবে যাবার কৌশল সে জানে। এবেলায়ও সে চরিত্রের যন্ত্রণা, রাগ ও ঘৃণাকে মূর্ত করে তুলেছিলো সহজ সাবলীলতায়। আর সব শেষে যার কথা না বললেই নয়, সে দ্রোহদীপ ভট্টাচার্য। যাকে বলে দাপুটে অভিনেতা; দ্রোহদীপ আক্ষরিক অর্থে তাই। ফাইটিং সিকোয়েন্সে তার দুর্দান্ত অভিনয়ে একা আমি নই, প্রেক্ষাঘরের অনেকেই মোহিত হয়েছিলো। একবার মনে হয়েছিলো মুহূর্তটা আবার যদি টেপ রেকর্ডার বা সিডি-র মতো ফিরে দেখার সুযোগ থাকতো। দ্রোহদীপের সপ্রতিভ অভিনয় আশার সঞ্চার করে অবশ্যই। স্মার্ট ও মেধাবী এই চার অভিনেতাকে স্যালুট।