India & World UpdatesHappenings
বিষণ্ণ কীর্ণাহার, পুজো হচ্ছে শুধু নেই প্রণববাবু
২৩ অক্টোবর : কীর্ণাহারে মিরাটির মুখার্জি ভবনের পুজোয় এ বার আর পরিবারের কেউ চণ্ডীপাঠ করবেন না। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির মৃত্যুর পর এমনটাই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পরিবারের সকলে। দাদু, বাবার পর পারিবারিক ঐতিহ্য মেনে প্রণববাবু চণ্ডীপাঠ করতেন প্রতি বছরই। শত ব্যস্ততার মধ্যেও দিল্লি থেকে প্রতি বছর নিয়ম করে ষষ্ঠীর দিন এসে বাড়ির পুজোয় যোগ দিতেন।
ইন্দিরা গান্ধী প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন আর প্ল্যানিং কমিশনের ডেপুটি চেয়্যারমান থাকার সময় দেশের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য বিদেশে ছিলেন। তাই পুজোতে আসতে পারেননি। এই দু’বছর বাদ দিলে বাড়ির পুজোয় প্রণববাবু যোগ দিয়েছেন, চণ্ডীপাঠও করেছেন। এমনকী রাষ্ট্রপতি থাকার সময়েও এসেছেন। বাবার মৃত্যুর পর ছেলে অভিজিত্ মুখার্জি পুজোর দায়িত্ব সামলালেও কিছু নিয়মের পরিবর্তন ঘটিয়েছেন বাধ্য হয়ে। চণ্ডীপাঠ প্রসঙ্গে অভিজিতের পরিষ্কার স্বীকারোক্তি, ‘আমি পারি না, তাই এ বার থেকে পরিবারের আর কেউ চণ্ডীপাঠ করবে না।’ তিনি আরও জানান, এ বার বাড়ির ঠাকুর ১২৫ বছরে পা দিল। বাবা দেখে যেতে পারলে খুব ভাল লাগত।
প্রণববাবু এলে গোটা গ্রামজুড়ে হইচই পড়ে যেত। প্রতিবছর ষষ্ঠীর বিকেলেই ঢুকতেন তিনি। ছোটবেলার বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতেন। গ্রামের বাড়িতে পা দিলেই কেমন যেন বদলে যেতেন। প্রণববাবুর ছেলে অভিজিতের আক্ষেপ, ‘এ বার পুজোয় বাবা আসবেন ধরে নিয়ে নতুন বাথরুম করা হয়েছিল। ছোট ঘরটা সংস্কারও করেছিলেন। কিন্তু তাঁর আর আসা হল না।’ তিনি বলেন, ‘বাবার যখন আসা হলই না, তখন ওই ঘর আর কেউ ব্যবহার করবে না। এমনটাই ভাবা হয়েছে।’ পুজোর জন্য ৪৫ দিনের মাথায় বাবার বাত্সরিক শ্রাদ্ধ করেছেন। যাতে পুজোয় কোন ব্যাঘাত না ঘটে।
ষষ্ঠীর দিন সন্ধেয় কীর্ণাহারে দিদির বাড়ি থেকে গ্রামের বাড়িতে আসতেন প্রণববাবু। ষষ্ঠীর পুজোয় অংশ নিতেন। স্বাভাবিক ভাবেই ষষ্ঠীর সন্ধে থেকেই সাজ সাজ রব তৈরি হত গোটা এলাকাজুড়ে। বিশাল পুলিশের কনভয় নিয়ে তিনি বাড়ি আসতেন। এমনটাই দেখে অভ্যস্ত মিরাটি গ্রাম। এবার সেই মুখার্জি বাড়ি, দুর্গাপুজো, সবকিছু থাকলেও শুধু প্রণববাবু নেই। তাতেই মিরাটি গ্রামে নেমে এসেছে বিষণ্ণতা।