Barak UpdatesHappeningsBreaking News
মণ্ডপে বাংলা ব্যানার খুলে ফেলার প্রতিবাদে ফোরাম ফর সোশ্যাল হারমনির বিক্ষোভ
ওয়েটুবরাক, ২৫ অক্টোবর : নগাঁও, বিশ্বনাথ চারিয়ালি ও ডিব্রুগড়ের দুর্গামণ্ডপের বাংলায় লেখা ব্যানার জোরজবরদস্তি খুলে ফেলার ঘটনার প্রতিবাদে ফোরাম ফর সোশ্যাল হারমনি’র শিলচরের সদস্যরা গত ২৩ নভেম্বর শারদোৎসবের নবমীর দিনে রাঙ্গিরখাড়ির ভাষাশহিদ স্মারকের সামনে জমায়েত হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন । লাচিত সেনা ও আসু’র সমালোচনা করে তাঁরা বলেন, এমন ভূমিকা ভাষাপ্রেমের লক্ষণ নয়, এরা নির্বাচনী ও ব্যবসায়িক স্বার্থের ফুট-সোলজার হিসাবে অসামাজিক কাজে ব্যবহৃত শক্তি। ভাষাভিত্তিক রাজ্য গঠনের অঙ্গ হিসাবে অসমে অসমিয়া ভাষা রাজ্যের ভাষা হিসাবে বহাল থাকবে এবং আইনানুসারে বরাকে বাংলা প্রশাসনিক ভাষা হিসাবে যে স্বীকৃত থাকবে, এব্যাপারে কারও কোনও দ্বিমত থাকতে পারে না। কিন্তু আসামেে বহুভাষিক বৈচিত্রকে অস্বীকার করে ভাষা-বিদ্বেষ ছড়ানো ন্যস্তস্বার্থের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ভাষা-ধর্মের নামে ভয়ভীতি ও বিদ্বেষ ছড়ানো অসামাজিক আগ্রাসী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করতে হবে। শ্রমিক, কৃষক, মধ্যবিত্তদের উপর যে দুর্যোগ নেমে এসেছে, তাকে প্রতিহত করতে এই ঐক্য গড়ে তোলা জরুরি। ফোরাম ফর সোশ্যাল হারমনি বাংলা ব্যানার খুলে নেওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার শিলচর রাঙ্গিরখাড়ি নেতাজী মূর্তির পাদদেশে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে এবং জনমত গঠন করতে পূজা মণ্ডপগুলিতে পোস্টার লাগায়। প্রতিবাদী সভায় ব্যানার খুলে নেওয়ার ঘটনাকে ধিক্কার জানিয়ে বক্তব্য রাখেন ফোরাম ফর সোশ্যাল হারমনির আহ্বায়ক ফারুক লস্কর ও অরিন্দম দেব।
তাঁরা বলেন, পৃথিবীর সব মানুষের বিভিন্ন মুখের ভাষার মধ্যে মানব প্রজাতির ইতিহাস লুকিয়ে থাকে। মানুষের মুখের ভাষার বৈচিত্রের যারা সম্মান জানাতে পারে না, তারা মানব সমাজের কলঙ্ক। রাষ্ট্র, প্রশাসন ইত্যাদি পরিচালনায় ভাষার ব্যবহার মানব সভ্যতার বিকাশের একটি প্রয়োজনীয় স্তর মাত্র। আধুনিকতার সেই স্তরে যারা ভাষা-চেতনার নামে ভাষাজঙ্গি ও ভাষা-ধর্মকে ব্যবহার করে রাষ্ট্রবাদী হয়ে ওঠে, তারা মানব সভ্যতাকে পেছনের দিকে টেনে নিয়ে যায়, নিজ সমাজ ভাষা ও জাতির অপূরণীয় ক্ষতি সাধন করে। মানুষের মুখের ভাষার সামাজিক অভিব্যক্তির উপর অবদমন ও আগ্রাসন নামিয়ে আনার প্রতিক্রিয়াশীল সামাজিক আচরণকে প্রতিহত করতে হবে – সেই ভাষাজঙ্গিদের মুখের ভাষা যা’ই হোক না কেন, এরা মানব সভ্যতার কলঙ্ক।
তারা আরও বলেন যে “আমরা এধরনের সব আচরণের বিরোধিতা ভাষা নিরপেক্ষভাবে সর্বত্র করে আসছি।”
একই সঙ্গে নগাঁও, বিশ্বনাথ চারিয়ালি ও ডিব্রুগড়ের দুর্গামণ্ডপের বাংলায় লিখা সাইনবোর্ড ভাঙার ঘটনাকেও তীব্র ধিক্কার জানান তাঁরা।