Barak UpdatesHappeningsBreaking News
বরাকের কোনও দাবি গুরুত্ব পায়নি অজন্তার বাজেটে, ক্ষুব্ধ বিডিএফ
ওয়েটুবরাক, ১৭ জুলাই : বাজেট পরিকল্পনা ও অন্তর্ভুক্তির জন্য রাজ্যের জনগণের তরফে প্রয়োজনীয় প্রস্তাব চেয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী এবং সেই অনুযায়ী বরাকের উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ২০টি দাবি অর্থমন্ত্রীর কাছে পেশ করেছিল বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট। তার একটিও ২০২১-২২ বাজেট প্রস্তাবে অন্তর্ভুক্ত না হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে মুখ খুল বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট।
মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় বলেন, এই বাজেট আমাদের আশাহত করেছে৷ একমাত্র মিনি সচিবালয় ছাড়া এই বাজেটে আর কোনও প্রকল্পের উল্লেখ নেই, যা বরাকের বাসিন্দাদের আশা আকাঙ্ক্ষাকে কিছুটা হলেও পূরণ করতে পারে। তিনি বলেন, বিডিএফ-এর পাঠানো প্রস্তাবগুচ্ছের মধ্যে শিলচর মেডিকেল কলেজকে সুপার স্পেশালিটি স্তরে উন্নীত করা এবং করিমগঞ্জ মেডিকেল কলেজ স্থাপনের প্রস্তাব ছিল। তিনি বলেন, প্রতিটি বরাকবাসী জানেন, এই দুই বিষয় কতটা গুরুত্বপূর্ণ৷ এ তাদের জীবন-মরণের সাথে জড়িত। কিন্তু এবারের বাজেটে রাজ্যে নতুন আরও পাঁচটি মেডিকেল কলেজ স্থাপনের প্রস্তাব থাকলেও বরাকের বহুদিনের এই দুই দাবিকে গুরুত্ব দেওয়া হল না৷ একে দুর্ভাগ্যজনক বলে উল্লেখ করে প্রদীপবাবু বলেন, কাছাড় কাগজ কলের পুনরুজ্জীবনের ব্যাপারেও সরকারের কোনও পরিকল্পনা নেই৷ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী এবং পেট্রোপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি কমাতেও এই বাজেটে কোনও প্রস্তাব রাখা হয়নি৷
তাঁর কথায়, শিলচরের জন্য একটি চিড়িয়াখানার প্রস্তাব রাখা হয়েছে, তা কী কাজে লাগবে বোধগম্য হচ্ছে না। এর চেয়ে বরং শিলচর শ্মশানে একটি বৈদ্যুতিক চুল্লীর জন্য অর্থবরাদ্দ করলে তাতে এক বৃহৎসংখ্যক মানুষ উপকৃত হতেন।
বিডিএফ এর অপর দুই আহ্বায়ক পার্থ দাস ও জহর তারণ বলেন, ক্ষুদ্রঋণ মকুব বা অরুণোদয় প্রকল্পে ভাতাবৃদ্ধি এসব করে কখনই রাজ্যের স্থায়ী সম্পদ বা স্বনির্ভরতা বৃদ্ধি হবে না। এসব শুধু আগামী লোকসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে সরকারের জনমোহিনী উদ্যোগ। তারা বলেন, শিলচর শহরের যানজট সমস্যা দিনে দিনে ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। বিডিএফ সেজন্য বৃহত্তর শিলচরের চারদিক দিয়ে একটি রিংরোড নির্মাণ ও প্রস্তাবিত উড়াল পুল নির্মাণের দাবি জানিয়েছিল। বাজেটে পাঁচটি নতুন রাস্তা নির্মাণের প্রস্তাব থাকলেও এই দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরের জ্বলন্ত সমস্যাকে ধর্তব্যের মধ্যেই আনেননি বর্তমান অর্থমন্ত্রী। এছাড়া, তিনটি জেলায় সিভিল হাসপাতালের উন্নতিকল্পে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দেওয়া সত্ত্বেও এই ব্যাপারেও নীরব থেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁরা আরও বলেন, শিলচর এবং করিমগঞ্জ শহরের মাস্টার ড্রেনেজ প্রকল্প বা বিশুদ্ধ পানীয় জলের বন্দোবস্ত করতে সরকারের যে আগ্রহ নেই, তাও বোঝা গেল এই বাজেট প্রস্তাব থেকে।
বিডিএফ সদস্যরা এদিন বলেন, যেহেতু বাজেটের ব্যাপারে পূর্বনির্ধারিত সিদ্ধান্ত নেওয়া ছিল, তাই এভাবে মতামত চেয়ে বরাক তথা অন্য প্রান্তের সচেতন নাগরিকদের হেনস্থা ও অপমান করার কোনও প্রয়োজন ছিল না। তারা আরও বলেন যে এইভাবে ক্রমাগত বঞ্চিত হতে হতে হতে বরাকের বাসিন্দারা যদি অন্য কোনো বিকল্পের কথা ভাবে তাতে তাদের মোটেই দোষ দেওয়া যায় না। এর জন্য প্রকারান্তরে দিশপুরের বৈষম্যমূলক মনোভাবই ১০০ শতাংশ দায়ী।