NE UpdatesBarak UpdatesHappenings
বড়দিনে উৎসব হচ্ছে না শিলচরের কোনও গির্জায়
২৩ ডিসেম্বরঃ ভিএইচপি-বজরং দলের হুমকিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না শিলচরের গির্জাগুলি৷ করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে নভেম্বরেই তাঁরা সবাই একযোগে সিদ্ধান্ত নেন, এ বার বড়দিন উপলক্ষে উৎসবের আয়োজন হবে না৷ শুধু ধর্মীয় পরম্পরাই রক্ষা করে প্রার্থনা হবে। তাও করোনা বিধি সম্পূর্ণ মেনে৷
শিলচর শহরে তিনটি প্রধান গির্জা৷ চার্চ রোডে প্রেসবিটেরিয়ান, অফিসপাড়ায় ব্যাপটিস্ট এবং সোনাই রোডে ক্যাথলিকদের প্রধান উপাসনাস্থল৷ তিন প্রধান গির্জার কোনওটিতে গান-বাজনার আয়োজন নেই এ বার৷
প্রেসবিটেরিয়ান গির্জার পাস্তর রেভারেন্ড বি জুবিয়াক্ত লোয়াঙ্গে জানান, কম্পাউন্ডের আবাসিক ছাড়া কেউ সে দিন ভেতরে প্রবেশ করতে পারবেন না। ব্যাপটিস্ট গির্জার পাস্তর ইশাক আহমেদ জানালেন, গির্জার ভেতরে প্রার্থনা একশোজনে সীমিত রাখা হবে। বাইরেও মঞ্চ হবে না। তবে একটি ভিডিও রেকর্ডিং করা হয়েছে। প্রজেক্টারের সাহায্যে সেটি মাঠে দেখানো হবে। কেউ চাইলে পারস্পরিক দূরত্ব মেনে বসে তা দেখতে পারবেন। ২৪ ডিসেম্বরের অনুষ্ঠানও অনেকটাই কাটছাঁট করা হয়েছে৷ সন্ধা ৬টায় শুরু হবে, দুই ঘণ্টায় শেষ হবে। আগে তা চলত রাত ১২টা পর্যন্ত৷
এ দিকে, ভিএইচপি-বজরং দলের হুমকির সূত্র শিলং রামকৃষ্ণ মিশনের এক কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া৷ তাই শিলচর রামকৃষ্ণ মিশন সেবাশ্রম এ বার বড়দিনে কী করে, সে দিকে নজর অনেকের৷
কিন্তু শিলচর রামকৃষ্ণ মিশন সেবাশ্রমের সম্পাদক স্বামী গণধীশানন্দ মহারাজ জানিয়ে দিয়েছেন, তাদের যীশুপূজা বড়দিনে নয়৷ ২৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয়৷ এ বারও তা যথারীতি হবে৷ তাঁর কথায়, এই দিনেই রামকৃষ্ণ সংঘের মূল ভিত্তি গড়ে উঠেছিল। স্বামী বিবেকানন্দ সহ অন্যান্য সন্ন্যাসীরা সে দিন সমস্ত লোভ, হিংসা, কামনা, বাসনা আগুনে বিসর্জন দিয়ে ত্যাগী হয়ে ওঠার সংকল্প নেন। সে সময় স্বামীজি প্রসঙ্গক্রমে যীশুর কথা বলছিলেন। ক্রুশবিদ্ধ হয়েও কেমন তিনি মানুষকে ভালবাসার কথা বলে গিয়েছেন! তখনই একজনের খেয়াল হয়, কিছুক্ষণ পরই বড়দিন। স্বামীজি বললেন, তাহলে যীশুই আমাদের মুখ দিয়ে এই সব কথা এতক্ষণ বলিয়ে নিলেন। সে থেকে রামকৃষ্ণ মঠ-মিশনে ২৪ ডিসেম্বর যীশু পূজা হয়। গণধীশানন্দ মহারাজ বলেন, সন্ধ্যার নিত্য প্রার্থনার পর শুরু হবে ক্যারল। পরে যিশু প্রসঙ্গে আলোচনা ও মন্দিরে যিশুর নামে কেক-চকলেট ইত্যাদিতে ভোগ নিবেদন।
শিলঙের ঘটনার প্রেক্ষিতে ভিএইচপি-বজরং দল হুমকি দিয়েছে, এ বার বড়দিনে কোনও হিন্দু গির্জায় গেলে পরিণাম ভয়াবহ হবে৷
গণধীশানন্দ মহারাজ বলেন, শিলঙে সামান্য ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। এখন ওখানে সব ঠিকঠাক চলছে। এ ছাড়া, যীশুপূজার সঙ্গে ওইসবের কোনও সম্পর্ক নেই।
পাস্তর জুবিয়াক্ত জানান, নভেম্বরেই শিলচরের গির্জাগুলি উৎসব না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ ফলে বজরং-ভিএইচপির হুমকির দরকারই ছিল না!