NE UpdatesBarak UpdatesHappeningsBreaking News
প্রস্তুত এনআরসিকে মান্যতা দিতে কেন্দ্রের অসম্মতিতে ক্ষুব্ধ সিআরপিসিসি
ওয়েটুবরাক, ২৯ জুলাই : সংসদে কেন্দ্র সরকারের পক্ষ থেকে আসামের এন আর সি তালিকা সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করে এর মান্যতা দেওয়ার ক্ষেত্রে অসন্মতি প্রকাশ করার ঘটনাকে তীব্র ভাষায় নিন্দা জানায় নাগরিক অধিকার রক্ষা সমন্বয় সমিতি, আসাম। সমিতির এক সভা বৃহস্পতিবার শিলচরে অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সভাপতি ড. তপোধীর ভট্টাচার্য তাতে পৌরহিত্য করেন৷
সভায় উপস্থিত কিশোর ভট্টাচার্য, শিহাবউদ্দিন আহমেদ, নির্মল কুমার দাস, সুব্রত চন্দ্র নাথ প্রমুখ বলেন, আসামে কেন্দ্রীয় সরকারের তহবিল থেকে ১৬০০ কোটি টাকা খরচ করে লক্ষ লক্ষ ভাষিক ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু মানুষকে দিনের পর দিন নথিপত্র যাচাইয়ের নামে চরম দুর্ভোগের দিকে ঠেলে দিয়ে যে এনআরসি তালিকা তৈরি করা হয়েছিল তাকে মান্যতা দিতে অস্বীকার করার অর্থই হচ্ছে আসামের উগ্র-প্রাদেশিকতাবাদী শক্তির কুচক্রান্তকে বাস্তবায়িত করতে সাহায্য করা।
সাধন পুরকায়স্থ ও আইনজীবী আলি রাজা ওসমানি রাজ্যের ২৮ লক্ষ নাগরিকের আধার কার্ড তৈরির ক্ষেত্রে সৃষ্ট জটিলতা নিরসনে সম্প্রতি আরজিআইর সাথে সাক্ষাতের বিবরণ সভায় তুলে বলেন, আরজিআই বলেছেন, এব্যাপারে তাঁর কিছুই করার নেই৷ কারণ সুপ্রিম কোর্টে বিষয়টি আটকে রয়েছে। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় যে, রাজ্যের তিন কোটি এগারো লক্ষ এনআরসি তালিকাভুক্ত এবং উনিশ লক্ষ এনআরসি-ছুট নাগরিকদের মধ্যে কাউকে বিদেশী নোটিশ প্রদান না করা এবং এনআরসি তালিকা-ছুট নাগরিকদের রিজেকশন স্লিপ দ্রুত প্রদান করে তাদের নাগরিকত্ব যাচাই বিতর্কিত ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের পরিবর্তে পূর্ণাঙ্গ ন্যায়িক আদালতে সম্পন্ন করে এনআরসি’র চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করার দাবিতে আগামীতে সংগঠনের পক্ষ থেকে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। সংগঠনের পক্ষ থেকে হিল্লোল ভট্টাচার্য জানান, প্রথমে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, আরজিআইর নিকট স্মারকপত্র প্রদান করা হবে।
সভায় সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতির সম্মুখীন হওয়া জনগণের প্রতি কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বৈষম্যমূলক আচরণের তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, ১৯২৯ সালের পর এরকম ভয়াবহ বন্যা শিলচর সহ কাছাড় জেলার জনগণ প্রত্যক্ষ করেননি, অথচ এই প্রলয়ঙ্করী বন্যার ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে প্রধানমন্ত্রী সহ কোনও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শিলচরে আসেননি। শুধু তাই নয়, জেলার লক্ষ লক্ষ জনগণ সাম্প্রতিক বন্যায় প্রায় সর্বস্ব হারালেও আসাম সরকারের পক্ষ থেকে নামমাত্র সাহায্য প্রদান করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। তাতেও চরম দুর্নীতির ঘটনা প্রকাশ্যে আসছে, সরকার কার্যত নির্বিকার। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের চরম উদাসীনতা ও ব্যর্থতাকে ঢাকা দিতে মুখ্যমন্ত্রী সহ দু’এক রাজ্য সরকারের মন্ত্রী এখানে এলেও এখন পর্যন্ত বন্যা নিয়ন্ত্রণে কোনও বিজ্ঞানসন্মত পরিকল্পনা ঘোষণা হয়নি।
সিআরপিসিসি, আসাম এর পক্ষ থেকে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এধরনের আচরণ বন্ধ করে ক্ষতিগ্রস্ত নাগরিকদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ সহ নদী বাঁধ নির্মাণ, বাঁধের উচ্চতা বৃদ্ধি, মহিষাবিলের জমাজল নিষ্কাশনে রাঙ্গিরখালকে দখলমুক্ত করে খনন সহ বন্যা সমস্যার স্থায়ী সমাধানে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের দাবি উত্থাপন করা হয়।