Barak UpdatesHappeningsBreaking News
পরিমল শুক্লবৈদ্যকে বয়কটের আহ্বান জানাল বিডিএফ
শিলচরে দাঁড়িয়ে বাঙালিবিরোধী আন্দোলনের প্রশংসা!
২৭ জানুয়ারি: শিলচরে আয়োজিত ৭২ তম প্রজাতন্ত্র দিবসের সরকারি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রথমেই আসাম আন্দোলনের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা এবং এই আন্দোলনের শহিদদের প্রতি সরকারের সমবেদনা ও সর্বতোভাবে সহযোগিতার আশ্বাস দিলেও একবারও বরাকের ভাষা আন্দোলন বা ভাষাশহিদদের কথা স্থান পেল না আবগারি ও বনমন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্যের ভাষণে। এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট৷ এর মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় বলেন, যে আন্দোলনের কর্মসূচি আদ্যন্ত বাঙালি তথা বরাকবিরোধী ছিল, বরাকে দাঁড়িয়ে তার জন্য এত সহানুভূতি প্রকাশের মাধ্যমে মন্ত্রী তাঁর নির্লজ্জ ও স্বার্থপর মনোভাবের প্রকৃষ্ট উদাহরণ রেখেছেন। প্রদীপবাবু বলেন, সুদেষ্ণা সিনহা সহ বরাকের ভাষাশহিদরা এখনও সরকারি স্বীকৃতি তো পায়ইনি , কোনও আর্থিক সাহায্যও জোটেনি তাদের পরিবার পরিজনের।অথচ মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য তার ভাষণে সবিস্তারে আসাম আন্দোলনের শহিদদের সরকারি তরফে সাহায্য সহযোগিতার কথা ফলাও করে প্রচার করলেন।
প্রদীপবাবু উল্লেখ করেন, এর আগেও বরাকের একটি সরকারি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য অসমিয়া ভাষায় ভাষণ দিয়েছিলেন৷ অথচ সে সভায় শ্রোতৃবৃন্দ প্রায় সবাই বাংলাভাষী ছিলেন। কাজেই এদিনের দীর্ঘ বক্তব্যে একবারও ভাষাশহিদদের কথা উল্লেখ না করা পরিমলবাবুর পক্ষে স্বাভাবিক ব্যাপার এবং এ সবই তাঁর চাটুকারিতা ও বাঙালি তথা বরাক বিরোধী মানসিকতার দৃষ্টান্ত। বিডিএফ নেতা আরও বলেন, মন্ত্রীর ভাষণে একবারও শোনা গেল না মিনি সচিবালয়, লজিস্টিক পার্ক, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উন্নয়ন কিংবা বরাকের বেকারদের প্রতি কোন আশ্বাস।
প্রদীপবাবু ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সম্প্রতি গ্রামোন্নয়ন বিভাগের ৭৫ টি শূন্যপদ পূরণ হয়েছে৷ একটিতেও সুযোগ পাননি বরাকের প্রার্থীরা। অথচ ৪৫টি শূন্যপদ রয়েছে বরাকে৷ ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা থেকে এভাবে বরাকের পদগুলিতে লোক পাঠিয়ে এই উপত্যকার অসমিয়াকরণের চক্রান্ত চলছে৷ এ ভাবেই তবাঙালি অধ্যুষিত গোয়ালপাড়া জেলার ভাষিক তথা সাংস্কৃতিক চরিত্রকে জোর জবরদস্তি বদলে দিয়েছিল উগ্র জাতীয়তাবাদী এবং তাঁদের পৃষ্ঠপোষক সরকার। বিডিএফের বক্তব্য, ইদানীং রাজ্যের খিলঞ্জিয়াদের জমির পাট্টা দিচ্ছে সরকার৷ সে কথা বড়াই করে উল্লেখ করেছেন মন্ত্রী৷ কিন্তু ক’জন বাঙালি জমির পাট্টা পেয়েছেন তা জনসমক্ষে জানান মন্ত্রী শুক্লবৈদ্য। তাঁদের কথায়, কারা এই রাজ্যের খিলঞ্জিয়া বা ভূমিপুত্র তাই এখনও ঠিক করতে পারেনি এই সরকার।আসাম চুক্তি অনুযায়ী অবৈধ নাগরিকদের ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানোর প্রয়াস নেওয়া হচ্ছে বলে উচ্ছসিত মন্ত্রীর কি একবারও মনে হয়নি, শিলচর রামনগরে তাঁর দলেরই প্রধানমন্ত্রীর ডিটেনশন ক্যাম্প নিয়ে কী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন!
পরিমলবাবু শুধু বরাকের নয়, সারা আসামের একমাত্র বাঙালি মন্ত্রী। কিন্তু তিনি জাতিস্বার্থের তুলনায় ব্যক্তিগত স্বার্থকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করে বিডিএফ পরিমল শুক্লবৈদ্যকে বয়কট করার ডাক দেয়৷ বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট মন্ত্রী শুক্লবৈদ্যের ভাষণের ধিক্কার জানায় এবং অবিলম্বে জনসমক্ষে এজন্য তাঁকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানায়৷