NE UpdatesIndia & World UpdatesHappeningsBreaking News
পরিবহনের জন্য বাংলাদেশের নৌপথ ব্যবহার করা যেতে পারে, ঘোষণা খালিদ মাহমুদের
ওয়েটুবরাক, ১৩ এপ্রিল: জলপথের সামগ্রিক বিকাশের মাধ্যমে প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে শক্তিশালী ব্যবসায়িক সম্পর্ক স্থাপন করার ডাক দিলেন কেন্দ্রীয় বন্দর, নৌপরিবহন, জলপথ এবং আয়ুষ মন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল। মঙ্গলবার তিনি জলপথ কনক্লেভ ২০২২-এর উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তব্য রাখছিলেন। ভারত সরকারের বন্দর, নৌপরিবহন ও জলপথ মন্ত্রক এবং ভারতীয় অভ্যন্তরীণ জলপথ কর্তৃপক্ষ, ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান চেম্বার অফ কমার্সের সঙ্গে যৌথ আয়োজন ছিল দুদিনের এই অনুষ্ঠান।
মন্ত্রী বলেন, দুই হাজার কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে আটশো মিলিয়নের সম্মিলিত জনসংখ্যা সহ বেশ কয়েকটি বড় শহর রয়েছে। ফলে এই জলপথ তরুণ উদ্যোগীদের বড় সুযোগ প্রদান করতে পারে৷
মন্ত্রী সোনোয়াল জলপথ সেক্টরে সরকারের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে অংশীদার হওয়ার জন্য এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আত্মনির্ভর ভারত গঠনের জন্য শিল্পমহলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
বাংলাদেশের জলপথের সম্ভাবনা তুলে ধরে, বাংলাদেশ সরকারের নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “বাংলাদেশে সাতশোটি নদী রয়েছে৷ এর মধ্যে ৫৪টি বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তে অবস্থিত। বাংলাদেশের নৌ-পথের প্রায় ৮৪৮০ কিলোমিটার বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল এবং ভুটানের মধ্যে পণ্য পরিবহন ও বিতরণের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।
মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা জানান, যাত্রীদের নিরাপদ এবং সুবিধাজনক ফেরি পরিষেবা প্রদানের জন্য ৭৭০ কোটি টাকার অভ্যন্তরীণ জল পরিবহন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে রাজ্য সরকার।
উত্তর-পূর্বে জলপথের গুরুত্ব সম্পর্কে বলতে গিয়ে শর্মা বলেন, ব্রহ্মপুত্র অববাহিকা ভারতের জলসম্পদ সম্ভাবনার প্রায় ৩০ শতাংশ ধারণ করে এবং জলপথের মাধ্যমে কার্গো চলাচল উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়লে সড়কপথের জন্য নির্ভরতা হ্রাস পাবে। তাছাড়া নৌপথে নিয়মিত কার্গো চলাচলের ফলে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং সাশ্রয়ী পরিবহনের মাধ্যমে স্থানীয় পণ্যের জন্য আন্তর্জাতিক বাজার উন্মুক্ত হবে।
এদিকে লজিস্টিক দক্ষতা অর্জনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে ভারত সরকারের সড়ক পরিবহন মন্ত্রী নিতিন গড়করি তার ভার্চুয়াল বক্তব্যে বলেন, পণ্যের লজিস্টিক খরচ ৮ থেকে ১০% চীনে, ১০-১২% ইউরোপীয় দেশগুলিতে এবং প্রায় ১২% মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এবং ১৬% ভারতে। মন্ত্রী বলেন যে, সড়ক ও রেলপথের তুলনায় নৌপথ হল পরিবহনের সবচেয়ে সাশ্রয়ী মাধ্যম।
ভারত সরকারের যোগাযোগ, ইলেকট্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেন, আমাদের দেশের রেল, সড়ক ও জলপথের সমন্বয়ে লজিস্টিক মিশ্রণ অত্যন্ত লাভজনক। এক লিটার জ্বালানিতে এক টন সামগ্রী সড়কপথে যায় ২৪ কিলোমিটার, রেলপথে ৯৫ কিলোমিটার এবং নৌপথে ২১৫ কিলোমিটার।
উত্তর-পূর্বের জলপথের অপার সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে ভারতের অভ্যন্তরীণ জলপথ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান সঞ্জয় বন্দোপাধ্যায় বলেছেন, “আমরা কেবল প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গেই নয়, এই অঞ্চলের এক রাজ্য থেকে আরেক রাজ্যের সঙ্গেও সংযোগ করার চেষ্টা করছি৷ উত্তর প্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশা পর্যন্ত বিস্তৃত তা করা হবে।
নৌপথ সেক্টরে অর্জিত অসংখ্য মাইলফলকের প্রতি ইঙ্গিত করে, বিভাগীয় সচিব সঞ্জীব রঞ্জন বলেন, বাংলাদেশ-ভারত প্রোটোকল রুটের অধীনে সাড়ে চার মিলিয়ন টন রেকর্ড পণ্য চলাচল হয়েছে।
ভুটানের অর্থনৈতিক বিষয়ক মন্ত্রী লিয়নপো লোকনাথ শর্মা বলেছেন, ভুটান এবং ভারতের মধ্যে বাণিজ্য বাড়ছে৷ স্টেকহোল্ডারদের আসাম ও পূর্ব ভুটানের মধ্যে সংযোগ বাড়ানোর জন্য কাজ করার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তিনি৷ জানান, অর্থনীতির ক্ষেত্রে এর বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে।
ভারত সরকারের পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস প্রতিমন্ত্রী রামেশ্বর তেলি বলেছেন , ১১১টি জলপথকে জাতীয় জলপথ হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে৷ উত্তর-পূর্বের জলপথ শিলিগুড়ি অঞ্চলের বিকল্প হবে, যা সাধারণত দেশের চিকেন নেক হিসাবে পরিচিত।
ভারত সরকারের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের উন্নয়ন (ডোনার) মন্ত্রী জি কিশান রেড্ডিও ভার্চুয়ালি ভাষণ দেন। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী রাজকুমার রঞ্জন সিং, আসাম সরকারের পরিবহন, শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী চন্দ্রমোহন পাটোয়ারি মণিপুর সরকারের জলসম্পদ এবং ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী আওয়াংবো নিউমাইও সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।