Barak UpdatesHappeningsBreaking News
নাগরিক পরিষেবা থেকে শিলচরবাসী বঞ্চিত, ধরনায় সংগ্রাম পরিষদ
ওয়েটুবরাক, ২৮ এপ্রিলঃ নাগরিক পরিষেবা থেকে শহরবাসী বঞ্চিত, এই অভিযোগ এনে শুক্রবার শহিদ ক্ষুদিরামের মূর্তির পাদদেশে দুই ঘণ্টার ধরনায় বসে নাগরিক স্বার্থরক্ষা সংগ্রাম পরিষদ। তাঁরা বলেন, রাঙ্গিরখাল সহ শহরে যে সব নালা-নর্দমা-ফুটপাত নির্মাণের কাজে হাত দেওয়া হয়েছে, সেগুলি অত্যন্ত ধীরলয়ে চলছে। তাতে একদিকে বন্যার আশঙ্কায় ভুগছেন মানুষ, অন্যদিকে দৈনন্দিন চলাফেরায় দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছেন। তাঁদের দাবি, জনদুর্ভোগের অবসানে দ্রুত সে সব কাজ শেষ করতে হবে। যে সব কাজ চলছে, সেই প্রকল্পসমূহের রূপায়নের সময়সীমা এবং অন্যান্য জ্ঞাতব্য বিষয় জনসমক্ষে বিজ্ঞাপিত করতে হবে।
পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হরিদাস দত্ত বলেন, চারমাসে রাঙ্গিরখাল প্রকল্পে গার্ডওয়াল নির্মাণ হয়েছে ১৪০ মিটার। ৩৭২০ মিটার খালের দুইদিকে গার্ডওয়াল তৈরি হবে মোট ৭৪৪০ মিটার। চারমাসে ১৪০ মিটারের হিসেবে পুরো কাজ শেষ করতে সময় নেবে ২১২ মাস বা ১৮ বছর। তিনি আরও এক সমস্যার দিকে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। রাঙ্গিরখালের পারের বসতবাড়িগুলির স্যানিটারি লেট্রিন থাকলেও নেই সেপটিক ট্যাঙ্ক। মলমূত্র সোজা খালে পড়ছে। তাতে শ্রমিকরা কাজ করতে পারছেন না। এই সমস্যার সমাধানেও পুর প্রশাসন বা জেলা প্রশাসনের কোনও উদ্যোগ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। জনপ্রতিনিধিরাও নীরব।
প্রাক্তন পুর কমিশনার অতনু ভট্টাচার্য বলেন, গত বছরের বন্যার পরে বহু মানুষ নষ্ট হয়ে যাওয়া লেপ-তোষক ড্রেনে ভাসিয়ে দিয়েছিলেন। সে গুলি স্থানে স্থানে জমা হয়ে রয়েছে। পুরসভা বা জেলা ্প্রশাসন সেগুলি সরানোর ব্যাপারে এক বছরেও উদ্যোগ নেয়নি। ফলে সামান্য বৃষ্টি হলেই নালার জল মানুষের বাড়িঘরে ঢুকে পড়ছে। তাঁর কথায়, যখন নালাগুলির গভীরতা বাড়ানোর কথা, সে সময় সেগুলি লেপ-তোষক আর আবর্জনায় ভরে রয়েছে।
সুব্রত নাথ জানান, গত বছরের এপ্রিলে বিবেকানন্দ রোডে ড্রেন কাম ফুটপাত নির্মাণ শুরু হয়েছিল। এক বছর ধরে কাজ অর্ধসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। নালার সঠিক মাপ বার করতে গিয়ে বহু মানুষের বাড়ির পাচিল, ঘরের অংশবিশেষ ভাঙা পড়েছে। কিন্তু ঠিক কোন জায়গায় তাদের সীমানা তা নির্ধারণ করে দেয়নি। এর দরুন তাঁরা বাড়ির পাচিল তৈরি করতে পারছেন না। ফলে অনেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
সুরজিত সোম নচিকেতার গানের অংশবিশেষ উল্লেখ করে আক্ষেপ ব্যক্ত করেন, আমরা গাধাতেই পরিণত হয়েছি। কারও কোনও প্রতিবাদী সত্ত্বা নেই। আশু পাল বিস্ময় ব্যক্ত করেন, সেদিন মাত্র গোটা শহরবাসী জলে আক্ষরিক অর্থেই হাবুডুবু খেয়েছেন, এখনই সবাই সে সব করুণ অভিজ্ঞতা ভুলতে বসেছেন।
ধরনাস্থলে অন্যান্যদের মধ্যে প্রদীপ দত্তরায়, অজয় রায়, দীপঙ্কর চন্দ প্রমুখও বক্তব্য রাখেন। উপস্থিত ছিলেন তমাল বণিক, চিত্রভানু ভৌমিক, কমল চক্রবর্তী, উপল পুরকায়স্থ, গৌরী দত্তবিশ্বাস, মধুসূদন রায়, অমিত দত্ত, জয়দীপ ভট্টাচার্য প্রমুখ।