Barak UpdatesHappeningsBreaking News
নজরকাড়া মডেলে উজ্জ্বল রামানুজ বিদ্যামন্দিরের প্রদর্শনী
ওয়ে টু বরাক, ১৭ আগস্ট ঃ রামানুজ বিদ্যামন্দিরে পড়ুয়াদের দুদিনের বিজ্ঞান ও শিল্পকলা প্রদর্শনী বেশ সাড়া ফেলেছে। বুধবার উদ্বোধনী পর্বেরই পরই বিশিষ্টজনদের প্রশংসা শহর জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে বৃহস্পতিবার শেষদিনে স্কুলের অভিভাবকদের অনেকেই প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন। গিয়েছেন শিল্প, কলা, বিজ্ঞানের বোদ্ধাজনেরাও। তাঁরা পড়ুয়াদের উদ্ভাবনী চিন্তাধারার প্রশংসা করেছেন।
দু’দিনের প্রদর্শনীতে প্রায় পাঁচশ পড়ুয়া অংশ নিয়েছে। বিজ্ঞান শাখায় শতাধিক মডেল ছিল। সঙ্গে ছিল চারশ’র বেশি কলা ও শিল্প সামগ্রী। মূলত শিলচরের বিশিষ্ট চিকিৎসক রাহুল গুপ্তের সপ্তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষেই এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছিল। এমন প্রদর্শনী আগেও স্কুলে আয়োজন করা হয়। কিন্তু কোভিড মহামারির জন্য কয়েক বছর বন্ধ ছিল। এ বার নতুন করে এই প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। বুধবার সকালে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন রামানুজ গুপ্ত মেমোরিয়াল চ্যারিটেবল ট্রাস্টের সভাপতি রুদ্রনারায়ণ গুপ্ত। উদ্বোধনের পর তিনি বলেন, তাঁর বাবা প্রয়াত রাহুল গুপ্ত চাইতেন, পড়ুয়ারা পড়াশোনার পাশাপাশি অন্য প্রতিভাও মেলে ধরুক, যা তাঁদের আগামী জীবনে সহায়তা করবে। এই ভাবনা থেকেই বাবাকে স্মরণ করে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। তিনি জানান, আগামী বছরগুলোতেও এমন প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে।
প্রসঙ্গত, এই প্রদর্শনীতে পড়ুয়ারা এমন সব মডেল তুলে ধরেছে, যা নাগরিক জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে শিলচর শহরকে জমা জল থেকে কীভাবে মুক্তি দেওয়া যায়, সে ব্যাপারে একটি মডেল সকলের প্রশংসা কুড়িয়েছে। তাছাড়া দুটি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ কীভাবে আটকানো যায়, বা বৃষ্টির জল কীভাবে সংরক্ষণ করা যাবে, এইসব দেখিয়েছে পড়ুয়ারা। বিজ্ঞান বিভাগে যেমন আগ্নেয়গিরি থেকে কী কারণে লাভা নির্গত হয়, মানবদেহে কিডনি কীভাবে কাজ করে, জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের মতো জটিল বিষয়গুলোকে সহজে তুলে ধরেছে, তেমনি শিল্পকলা বিভাগে মানব সভ্যতার যাত্রা সম্পর্কে ধারণা দিয়েছে রামানুজ বিদ্যামন্দিরের ছাত্রছাত্রীরা। ষষ্ঠ-সপ্তম শ্রেণির ছাত্রদেরও ইংরেজি, বাংলা বাচনভঙ্গি ছিল আকর্ষণীয়। যে কোনও প্রশ্নের চটপট দিয়েছে সবাই। অতিথিরা বিস্মিত হন, মাধ্যমিক অনূর্ধ্ব স্কুল পড়ুয়ারা তৈরি করে নিয়েছে বিছানার চাদর, শাড়ি ! প্রদর্শনীর সঙ্গে একটি কক্ষে ছিল বিক্রিরও ব্যবস্থা। বৃহস্পতিবার দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ শিল্পসামগ্রী, মনোহারি জিনিসের গায়ে সোল্ট আউট স্টিকার সাঁটা। ছাত্রছাত্রীদের হাতে তৈরি হলেও ওই সব জিনিস এতটাই গুণমান সম্পন্ন যে, মানুষ সেগুলি কিনে নিয়েছেন।
ছাত্রছাত্রীদের এই ভাবে এগিয়ে দেওয়ার জন্য সকলে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ভূয়সী প্রশংসা্ করেন। অধ্যক্ষ দীপ্তিমান বিশ্বাস বলেন, দুদিনের প্রদর্শনী সফল করে তুলতে বেশ কিছু দিন ধরে ছাত্রছাত্রীরা তো বটেই, শিক্ষক-শিক্ষিকারাও অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। তিনি স্কুল পরিচালন ট্রাস্টের প্রতিও এই ধরনের সুযোগ প্রদানের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।