India & World UpdatesHappeningsBreaking News
দুদিন আগে ঘর থেকে ভোটদান, প্রয়াত দেশের প্রথম ভোটার শ্যামশরণ নেগি
৫ নভেম্বর : ঘর থেকে ভোটদানের ঠিক দু’দিন পর প্রয়াত হলেন দেশের প্রথম ভোটার শ্যামশরণ নেগি। ১০৫ বছর বয়সি নেগিকে রাজকীয় সম্মানে অন্তিম সংস্কার করা হয়েছে। পুলিশ ও হোমগার্ড বাহিনী শূন্যে গুলি ছুড়ে তাঁকে অভিবাদন জানান। কিন্নোরের ডিসি আবিদ হোসেন প্রয়াতের ঘরে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন ও তাঁর অন্তিম যাত্রায় শামিল হন। ঘর থেকে শ্মশানঘাট পর্যন্ত প্রায় ১৬ কিলোমিটারের অন্তিম যাত্রায় হাজার খানেক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
স্বাধীন ভারতের প্রথম ভোটদাতা শ্যামশরণ নেগি গত বুধবার তাঁর ঘর থেকেই ১৪তম হিমাচল প্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনের ভোটদান করেছিলেন। তাঁর শরীর হঠাত করে খারাপ হয়ে যাওয়ায় তিনি ব্যালট পেপারে ভোটদানের ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন। গত বুধবার তিনি ৩৪ বার ভোটদান করেন। নির্বাচন কমিশনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বেসেডর নেগি প্রতিটি নির্বাচনে ভোটদান করেন। তিনি অন্যদেরও ভোটদানে উতসাহিত করতেন। কিন্নোরের কল্পা বুথে তাঁকে নিয়ে গিয়ে ভোটদানের ব্যবস্থা করার কথা ছিল নির্বাচন কমিশনের। রেড কার্পেট বিছিয়ে তাঁকে স্বাগত জানানোর পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু হঠাত করে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁর বাড়িতে এসেই কমিশন ভোটগ্রহণ করে। এরপর শনিবার ভোরে তিনি প্রয়াত হন। ভোট দেওয়ার পর শ্যামশরণ বলেন, ভোট গণতন্ত্রের মহান উৎসব। আমাদের সকলকে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে হবে।
শ্যামশরণ নেগির বর্ণনায়, ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারিতে দেশে প্রথম লোকসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু কিন্নোরে ভারী তুষারপাতের কারণ ১৯৫১ সালের সেপ্টেম্বরে পাঁচ মাস আগে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তিনি বলেন, ‘স্বাধীন ভারতের প্রথম নির্বাচনের সময় আমি কিন্নর মুরাং স্কুলে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলাম। নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করছিলেন। ভোট দেওয়ার জন্য ব্যাপক উৎসাহ ছিল এবং দায়িত্ব ছিল শোংথং থেকে মুরাং পর্যন্ত, যখন আমার ভোট ছিল কল্পায়। তাই ভোরে ভোট দেওয়ার পর ডিউটিতে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে ভোটকেন্দ্রে পৌঁছাই।’
ওইদিন সকাল সোয়া ৬টায় ভোট গ্রহণকারী দল ভোটগ্রহণের দায়িত্বে পৌঁছায়। সেখানে গিয়ে শ্যামশরণ ভোটগ্রহণকারী দলকে তাড়াতাড়ি তাঁর ভোটগ্রহণের অনুরোধ জানান। এতে পোলিং পার্টি রেজিস্টার খুলে তাদের স্লিপ দেয়। ভোট দেওয়ার সময় দেশের প্রথম ভোটার হিসেবে তাঁর নাম নিবন্ধন করা হয়। ভোট দেওয়ার পর তিনি নিজ দায়িত্বে চলে যান। আগের রাউন্ডে সকাল ৭টা থেকে ভোট গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হতো।
শ্যামশরণ নেগি ১০ বছর বয়সে স্কুলে যান এবং কল্পায় পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। এরপর তিনি আরও পড়াশোনার জন্য রামপুরে যান। তিনদিন পায়ে হেঁটে রামপুর পৌছান। রামপুর থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। নানা কারণে দশম শ্রেণিতে ভর্তি হতে পারিনি। ১৯৪০ থেকে ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত তিনি বন বিভাগে বনপ্রহরী হিসাবে কাজ করেন। এরপর তিনি শিক্ষা বিভাগে গিয়ে কল্পা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন।