Barak UpdatesHappeningsBreaking News

দক্ষিণ আসাম প্রান্ত জুড়ে আরএসএস-এর সঞ্চলন দিবস

ওয়ে টু বরাক, ২৪ জানুয়ারি : রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের দক্ষিণ আসাম প্রান্তের ব্যবস্থাপনায় সোমবার বিভিন্ন অঞ্চলে অনুষ্ঠিত হলো প্রান্তীয় সঞ্চলন দিবস। এতে দক্ষিণ আসাম প্রান্তের মধ্য কাছাড় জেলা, দক্ষিণ কাছাড় জেলা, পশ্চিম কাছাড় জেলা, শ্রীভূমি জেলা, হাইলাকান্দি জেলা, রামকৃষ্ণ নগর জেলা, লক্ষীপুর জেলা, উমরাংশু জেলা এবং ডিমা হাসাও জেলার ৯টি স্থানে সঞ্চলন অনুষ্ঠিত হয়।

এ দিন প্রতিটি স্থানে ভারতমাতার প্রতিকৃতির সামনে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন সহ দেশনায়ক নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভারম্ভ হয়। সঞ্চলনে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের চিরাচরিত বাদ্যযন্ত্র ঘোষের তালে তালে পা মেলান ১৬৫১ জন স্বয়ংসেবক। সঞ্চলন চলাকালে বিভিন্ন স্থানে পুরুষ ও মহিলারা শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনি সহ ফুল ছিটিয়ে গৈরিক ধ্বজ ও স্বয়ংসেবকদের বরণ করেন। বিভিন্ন স্থানে আয়োজিত সঞ্চলনে স্বয়ংসেবকদের উদ্দেশ্যে মধ্য কাছাড়ে বিমান বিহারি নাথ, দক্ষিণ কাছাড়ে ডঃ অভিজিৎ নাথ, পশ্চিম কাছাড়ে অসিত চক্রবর্তী, লক্ষীপুরে নির্মলেন্দু দেব, শ্রীভূমিতে ক্ষৌনিশ চন্দ্র চক্রবর্তী, রামকৃষ্ণনগরে গৌরাঙ্গ রায়, হাইলাকান্দিতে জ্যোৎস্নাময় চক্রবর্তী, উমরাংশুতে রাজু মল্লিক এবং ডিমাহাসাও জেলায় সুভাষ চন্দ্র নাথ বৌদ্ধিক প্রদান করেন।

কার্যকর্তারা বৌদ্ধিক প্রদানকালে বলেন, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর অবদান অনস্বীকার্য। তিনি ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। যার পরাক্রমে ব্রিটিশদের ভিত নড়বড়ে করে দিয়েছিল। নেতাজি যে ভারতের কল্পনা করতেন সেভাবে স্বাধীন হয়নি। নেতাজিকে ভারতবাসী কখনও ভুলতে পারবেন না। এছাড়াও বৌদ্ধিক দাতারা সংঘ সম্পর্কে বলেন, পৃথিবীর সর্ববৃহৎ সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ। শতবর্ষের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে সংগঠন। প্রতিটি গ্রামে সংঘের কাজ পৌঁছে দিতে স্বয়ংসেবকদের আহ্বান জানান বৌদ্ধিক দাতারা।

তারা আরও বলেন, অনেকে বাইরে থেকে দেখে সংঘকে বিচার করেন। কিন্তু রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য হল ভারতকে পরম বৈভবশালী করে বিশ্বগুরুর আসনে প্রতিষ্ঠিত করা। এছাড়াও কার্যপদ্ধতি হল হিন্দু সংস্কৃতি ও হিন্দু ধর্মের আধারে চরিত্রবান স্বয়ংসেবক সংঘের দৈনন্দিন শাখায় নির্মাণ করা। শাখায় ব্যক্তি নির্মাণ হয় অর্থাৎ স্বয়ংসেবক নির্মাণ হয়। স্বপ্রেরণায়, স্বইচ্ছায়, নিঃস্বাৰ্থভাবে, তন-মন-ধন দিয়ে দেশমাতৃকার সেবা করা অর্থাৎ দেশ, ধর্ম, সংস্কৃতি এবং সমাজের সংরক্ষণ এবং সংবর্ধনের জন্য কাজ করা। ভারতবর্ষকে বিশ্বগুরুর আসনে প্রতিষ্ঠিত করা আমাদের কাছে কোনও নতুন কাজ নয়। ভারত বিশ্বগুরু ছিল। যার এক গৌরবশালী ইতিহাস রয়েছে। হিন্দু রীতি, নীতি, সংস্কার সবকিছুই বিজ্ঞানসম্মত জীবন পদ্ধতি।

এছাড়াও আরও বলেন, হিন্দুত্ব বিশ্বভাতৃত্বের একমাত্র দর্শন। হিন্দুদের অন্য কোনো দেশ আক্রমণের কোন ইতিহাস নেই। বিদেশে গেছে কেবল জ্ঞান, বিজ্ঞান, খাদ্য বিতরণ করতে। বিদেশি আক্রমণকারীদেরও নিজেদের সংস্কৃতি দ্বারা নিজেদের মধ্যে স্ংস্পৃক্ত করে নিয়েছে। আন্দোলন, বিরোধিতা, উগ্ৰতা, ভাষণবাজি ইত্যাদি সংঘের পদ্ধতি নয়। নিজে কাজ করে উদাহরণ প্রস্তুত করাই সংঘের পদ্ধতি। মাতৃভাষায় প্রায় কুড়ি হাজার বিদ্যালয় সংঘের স্বয়ংসেবকদের দ্বারাই পরিচালিত হচ্ছে। সেবাকাজ, সমরসতা, স্বদেশী, পর্য্যাবরন সুরক্ষা, পরিবার প্রবোধন, গো-পালনের কথা তারা তুলে ধরেন। তারা সমাজের প্রতি আহ্বান জানান সংঘকে জানা ও বুঝার জন্য সংঘকাজে প্রত্যক্ষ যুক্ত হওয়ার।

সংঘ সমাজে কোন আলাদা গ্রুপ তৈরি করতে চায় না। সমগ্ৰ হিন্দুসমাজকেই সংগঠিত করতে চায়। সর্বব্যাপী প্রতিগ্ৰামে শাখা ও প্রত্যেক ঘরে স্বয়ংসেবক তৈরি কারার কাজ করে যাচ্ছে সংঘ। সর্বস্পর্শী প্রত্যেক শ্রেণির হিন্দু যেমন চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, কৃষক, মজদুর, ধনি, নির্ধন, কমশিক্ষিত, বেশি শিক্ষিত ইত্যাদি সকলের মধ্যে সংঘের কাজ বিস্তার। উপস্থিত সবাইকে সংঘ অথবা কোনও না কোনও পরিবার সংগঠন অথবা সেবাকার্যে জড়িত হওয়ার আহ্বান জানান বৌদ্ধিক দাতারা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker