NE UpdatesBarak UpdatesHappeningsBreaking News

ডিলিমিটেশন : গণ-আপত্তি পাঠানোর আর্জি বরাক বঙ্গের নাগরিক সভায়

ওয়েটুবরাক, ৫ জুলাই : নির্বাচন কমিশন আসামের নির্বাচন কেন্দ্র পুনর্বিন্যাসের যে খসড়া প্রকাশ করেছে, তার প্রতিবাদে আজ শিলচর বঙ্গভবনে এক নাগরিক সভা অনুষ্ঠিত হয়৷ বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের কাছাড় জেলা সমিতি আয়োজিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের জেলা সভাপতি সঞ্জীব দেবলস্কর৷ বক্তাদের মধ্যে ছিলেন আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য তপোধীর ভট্টাচার্য, বিশিষ্ট শল্য চিকিৎসক কুমার কান্তি দাস, বরাক বঙ্গের সাধারণ সম্পাদক গৌতম প্রসাদ দত্ত, শিলচর বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নীলাদ্রী রায়, বিডিএফ নেতা প্রদীপ দত্তরায়, সিপিএম জেলা সম্পাদক দুলাল মিত্র, রক্তদান আন্দোলনের মুখ মহীতোষ পাল প্রমুখ৷ বরাক বঙ্গের পক্ষ থেকে ডিলিমিটেশনের বিরোধিতার কারণ ব্যাখ্যা করে সবাইকে নির্বাচন কমিশনে আপত্তি জানানোর অনুরোধ করা হয়েছে৷
শুরুতে সঞ্জীবদেব লস্কর ও গৌতম প্রসাদ দত্তের বক্তৃতার পরে নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে তৈরি আপত্তি-পত্র পাঠ করে শোনান অবসরপ্রাপ্ত কলেজশিক্ষক কবীর হোসেন৷
বড়োদের বন্ধু বলে উল্লেখ করে প্রদীপ দত্তরায় বলেন, “তাঁদের প্রাপ্তি নিয়ে আমাদের আক্ষেপ নেই৷ কিন্তু যুক্তি-পরিসংখ্যানের কথায় তুলনাটা চলে আসে৷ বড়োরা অসমের মোট জনসংখ্যার মাত্র ৫ শতাংশ, বাঙালিরা ৩০ শতাংশ৷ বড়োল্যান্ডে বিধানসভার আসন ১৬ থেকে ১৯ হয়েছে৷ বরাক উপত্যকায় ১৫ থেকে কমিয়ে ১৩ করা হলো৷”
নীলাদ্রি রায়ের বক্তব্য, ডিলিমিটেশন হয় ডিলিমিটেশন আইন অনুসারে৷ কিন্তু আসামে ডিলিমিটেশন হচ্ছে জনপ্রতিনিধিত্ব আইন মেনে৷ এটা হতে পারে না৷ এ ছাড়া, ২০২৬ সালে দেশজুড়ে ডিলিমিটেশন হবে৷ এখন শুধু আসামে করার কী অর্থ, জানতে চান তিনি৷

বক্তাদের অনেকে সাম্প্রদায়িক বক্তব্যের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনায় মুখর হন৷ স্মরণ করিয়ে দেন, জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে কাজ করবেন বলেই শপথ নিয়েছিলেন তিনি৷

কংগ্রেস নেতা কিশোর ভট্টাচার্য পরিসংখ্যান তুলে ধরে জানান, অযৌক্তিক ভাবে রাজ্যের ভোটারদের এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে৷ তাঁর দেওয়া পরিসংখ্যান অনুসারে, এই সময়ে করিমগঞ্জ জেলার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিমিতে ৫৫৭ জন৷ পশ্চিম কার্বি আংলঙে তা মাত্র ৭৮ জন৷ সেখানে আসন বেড়েছে, আর কমানোর কথা চলছে করিমগঞ্জ, হাইলাকান্দিতে৷ তিনি ডিলিমিটেশন প্রক্রিয়াটাকেই এই সময়ে স্থগিত রাখার আর্জি জানান৷

এখনও বরাক উপত্যকার মানুষ একসুরে কথা বলতে পারছেন না, এ নিয়ে আক্ষেপ ব্যক্ত করেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু সেবা সংস্থার সভাপতি ডা. কুমারকান্তি (লক্ষণ) দাস৷ তিনি বলেন, ১৫ থেকে আসন কমে ১৩ হয়েছে, নিজেদের জেলায়ও এক আসন কমে গিয়েছে৷ অথচ করিমগঞ্জবাসী এ নিয়ে চর্চা করছে না৷ সেখানে চর্চা শুধু, লোকসভা আসনটি সংরক্ষিত থাকবে নাকি উঠে যাবে, ওই এক ব্যাপারে৷

বারবার আসামকেই কেন পরীক্ষাগার বানানো হয়, প্রশ্ন করেন মহীতোষ (আশু) পাল৷ তিনি জানান, এনআরসি কোনও রাজ্যে হলো না৷ কিন্তু আসামের ১৯ লক্ষ মানুষকে অহেতুক ঝুলিয়ে রাখা হলো৷ ডিলিমিটেশনও যখন অন্য কোথাও হচ্ছে না, সে সময় আসামকে শুরু হয়ে গেল! তিনি বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করার পরামর্শ দেন৷

এ ছাড়াও বক্তব্য রাখেন বনানী রায়চৌধুরী, দিলীপ সিং, কল্পার্ণব গুপ্ত, শরিফুজ্জামান লস্কর, বিশ্বজিৎ দাস, দুলাল মিত্র, কার্তিক রায়, রূপক চক্রবর্তী, রফিক আহমেদ প্রমুখ৷

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker