Barak UpdatesHappeningsBreaking News
ডলু : ফের আন্দোলনে নামছে আসাম মজুরি শ্রমিক ইউনিয়ন
ওয়েটুবরাক, ৫ নভেম্বর : গত ২ নভেম্বর আসাম মজুরি শ্রমিক ইউনিয়নের বরাক জোনাল কমিটির এক সভা শিলচর পেনশনার্স ভবনে অনুষ্ঠিত হয়। মৃণাল কান্তি সোম, নুমান আহমেদ ও মানস দাসকে নিয়ে গঠিত সভাপতিমণ্ডলী এই সভা পরিচালনা করেন। শুরুতে ইউনিয়নের হাইলাকান্দি জেলা কমিটির সভাপতি প্রয়াত হরিশচন্দ্র কৈরী, কাছাড় জেলার কর্মকর্তা প্রয়াত সাইরুদ্দিন বড়ভূঁইয়া ও নেত্রী হাজি ছায়া বেগম এবং শ্রমিক-কৃষক আন্দোলনের শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সংগ্রামী অভিবাদন জানিয়ে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
ডলু চা-বাগানের সরকার অধিগৃহীত ২৫০০ বিঘা ফসলি জমি শ্রমিকদের ফিরিয়ে দেওয়ার তীব্র দাবি জানান সভায় উপস্থিত সদস্যরা। এই দাবিতে ৯ নভেম্বর ডলু চা-বাগানের ময়নাগড় ডিভিশনের খেলার মাঠে সমাবেশ ও ১০ নভেম্বর ডলু চা-বাগানের চারটি ডিভিশনে বনধ পালনের সিদ্ধান্ত নেয় মজুরি শ্রমিক ইউনিয়ন। এছাড়াও, ১০ নভেম্বর চা-বাগানের মহিলা শ্রমিকরা অধিগৃহীত ২৫০০ বিঘা জমিতে থাকা হাজার হাজার ছায়াগাছে সিঁদুরের টিপ লাগিয়ে ঐ গাছগুলো রক্ষা করার সংকল্প ঘোষণা করবেন।
২৫০০ বিঘা জমির প্রায় ৩০ লক্ষ চা গাছ উপড়ে ফেলার পর শ্রমিকরা অবর্ণনীয় সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। প্রতিদিন সকালে ট্র্যাক্টরে করে বাইরের বাগানে কাজে পাঠানো হচ্ছে স্থায়ী শ্রমিকদের৷ কারণ ডলু চা- বাগানের সেকশনগুলোতে কাজ দিতে পারছে না ম্যানেজমেন্ট। যারা বাগানে কাজ পাচ্ছেন তারাও নিরিখের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছতে পারছেন না। ফলে অনুপাতিক হারে মজুরি কম পাচ্ছেন। ক্যাজুয়েল মহিলা-পুরুষ শ্রমিকরা নিয়মিত কাজ পাচ্ছেন না। নীলিমা ভূমিজ, অঞ্জলি তন্তুবায়, গৌতম গোয়ালা, কমলজিৎ তেলী, লক্ষীন্দর তেলীদের দৃঢ়সংকল্প — বাগান বাঁচাতে ফসলি জমি রক্ষায় তারা চূড়ান্ত লড়াই চালিয়ে যেতে প্রস্তুত রয়েছেন৷
চা-শ্রমিক সহ সবধরণের ফ্যাক্টরি শ্রমিক, বিভিন্ন স্কিম ওয়ার্কার — অঙ্গনওয়াড়ি, রাঁধুনি, আশাকর্মী সহ পরিষেবামূলক কাজে নিয়োজিত শ্রমিক, নির্মাণ ও পরিবহণ শ্রমিক, এনরেগা শ্রমিক অর্থাৎ সবগুলো কর্মক্ষেত্রে ন্যূনতম মজুরি আইন কার্যকর করার জোরালো দাবি ওঠানো হয় সভায়। প্রতিটি পঞ্চায়েতে গ্রামসভার মাধ্যমে জবকার্ডধারীদের এনরেগার কাজ দেওয়ার আন্দোলন তীব্র করারও প্রস্তাব গৃহীত হয়।
অসম মজুরি শ্রমিক ইউনিয়নের জোনাল কমিটির বর্ধিত সভায় ডলু চা-বাগানের অধিগৃহীত জমি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি সহ উপরোল্লিখিত দাবিসমূহের ভিত্তিতে বরাক উপত্যকার বিভিন্ন প্রান্তে আগামী ৯ নভেম্বর প্রতিবাদী কর্মসূচী পালনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সভায় বক্তব্য রাখেন অরূপ বৈশ্য, ধরিত্রী শর্মা, পারভেজ খসরু লস্কর, শান্তনু দাস, অরিন্দম দেব, নূরুল হক, বলরাম বিশ্বাস, বিশ্বজিৎ দাশ, প্রদীপ নাথ, ফরিদ আহমেদ বড়ভূঁইয়া, বিশ্বজিৎ নাথ, আতিউল্লা, হীরণ মুণ্ডা প্রমুখ।