Barak UpdatesHappeningsBreaking News

জলসম্পদ অফিসে বসেই বেতুকান্দি বাঁধ কাটার ষড়যন্ত্র হয়েছিল, রাজ্যপালের দ্বারস্থ জেলা কংগ্রেস

ওয়েটুবরাক, ৪ জুলাই:  “কনস্ট্রাকশন অফ ফ্লাড এম্বেকমেন্ট এলং লেফ্ট ব্যাঙ্ক অফ রিভার বরাক ফ্রম উত্তর কৃষ্ণপুর টু তারাপুর এট বেথুকান্দি এরিয়া অফ শিলচর টাউন ইনক্লুডিং প্রটেকশন ওয়ার্ক ২০১৯-২০” নামের ১০ কোটি টাকার কাজের কাজ অর্ধেকটাও এখনও সম্পন্ন হয়নি৷ অথচ জলসম্পদ বিভাগের কাছাড় জেলার তৎকালীন এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার অসিত দেব গত ফেব্রুয়ারি মাসেই কন্ট্রাক্টর রাজীব লোহিয়া ৭৫ শতাংশ অর্থ খরচ করা হয়ে গেছে। কাছাড় জেলা কংগ্রেসের এক প্রতিনিধি দল সোমবার কাছাড়ের অতিরিক্ত জেলাশাসক মনসুর আহমেদের সঙ্গে দেখা করে রাজ্যপালের উদ্দেশে একটি স্মারকলিপি প্রদান করে এই অভিযোগ জানান৷

তাঁরা বলেন, জাতীয় কংগ্রেসের কর্মীরা নিজস্ব অনুসন্ধানের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন যে, বেতুকান্দির ওই প্রটেকশনের অর্ধসমাপ্ত কাজও অত্যন্ত নিম্নমানের হয়েছে৷ অথচ বহু অতিরিক্ত পেমেন্ট করা হয়ে গেছে৷ এর তদারকিতে রয়েছেন বিভাগীয় এসডিও দেবব্রত পাল এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার ভাস্কর রায়। পরবর্তীতে ওই নিম্নমানের প্রটেকশনের কাজ গত মে মাসের বন্যায় যখন ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তখন ওই প্রটেকশনের উপর চাপ কমিয়ে দেওয়ার জন্য, প্রটেকশন পর্যন্ত জল পৌঁছানোর আগের কোনও একটি জায়গায় বাঁধ কাটার ব্লু প্রিন্ট রচনা করা হয়৷ তাও শিলচর ওয়াটার রিসোর্স ডিপার্টমেন্টের অফিসে বসে। বাঁধ কাটার অন্যতম অভিযুক্ত নাজির লস্কর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বিভাগের ক্লাস ওয়ান কন্ট্রাক্টর৷ তার সঙ্গে দহরম মহরম রয়েছে বিভাগীয় ইঞ্জিনিয়ার থেকে শুরু করে সাব-ইঞ্জিনিয়ার সবার।

তাই বাঁধের কেটে দেওয়া অংশ দিয়ে জল যখন দ্রুত শহরে প্রবেশ করছিল, তখন জল সম্পদ বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার কন্ট্রাক্টর নাজির লস্করকে স্থানীয় নার্সিংহোমে ভর্তি করাতে তৎপর হয়েউঠেছিলেন৷ ফলস্বরূপ নাজির নার্সিংহোমে ভর্তি হয়েছিল৷ উদ্দেশ্য ছিল, তাঁকে অসুস্থ দেখিয়ে গ্রেফতারি এড়ানো। নাজিরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বিভাগীয় অনেক অফিসার কর্মীর নাম বেরিয়ে আসতে পারে। এতসব অনিয়ম নিশ্চিতভাবেই সরকারকে অন্ধকারে রেখে করা হয়নি বলে অভিমত ব্যক্ত করেছে কাছাড় জেলা কংগ্রেস৷ যেহেতু মানব সৃষ্ট এই বন্যায় ক্ষতি হয়েছে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী সহ বিভিন্ন পেশায় থাকা লক্ষাধিক মানুষের, পরিবারের প্রিয়জনদের হারিয়েছেন বহু পরিবার তাই বাঁধ কাটার দোষীদের প্রকৃত বিচার যাতে হয়, দোষীরা যাতে কঠোর থেকে কঠোরতর শাস্তি পায় সেটা নিশ্চিত করার জন্য সরাসরি রাজ্যপালের হস্তক্ষেপ দাবি করেছে কংগ্রেস।

তাঁরা আরও বলেছে, নাজির সহ যে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাঁদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জলসম্পদ বিভাগের যেসব কর্মীর নাম  উঠে আসবে তাঁদেরও বিচার বিভাগীয় হেফাজতে নিয়ে তদন্ত করে কঠিন শাস্তি দিতে হবে। কংগ্রেস সরকারকে মনে করিয়ে দিয়ে বলেছে, যে চারজন বাঁধ কেটে লক্ষ লক্ষ মানুষের সর্বনাশ করেছে বলে পুলিশ রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে, তারা দোষী হলে অবশ্যই তাঁদেরকে কঠিনতম শাস্তি দেওয়া হোক৷ কিন্তু তাঁদের পিছনে পর্দার আড়ালে যারা রয়ে গেছেন, তারা যেন কোনওভাবেই ছাড় না পায় এবং  শাসকদল ঘনিষ্ট নেতার আত্মীয় ব্যক্তিরাও তাতে জড়িত আছেন, তাঁদের নামও প্রকাশ্যে এনে তাঁদেরও বিচার করতে হবে। বিচারের নামে প্রহসন করে মূল পরিকল্পনাকারীদের আড়াল করার চেষ্টা করা হলে, যেসব লক্ষ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাঁদের সাথে নিয়ে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি তমালকান্তি বণিক।

কংগ্রেসের প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন কিশোর ভট্টাচার্য, আশিস আচার্য, রাজদীপ বণিক, ভাস্কর দাস, আনিস আহমেদ আনসারী প্রমুখ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker