NE UpdatesHappeningsCulture

গৌহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ে “বাঙালি ছাত্র সমাজ”-এর আগমনী উৎসব

গুয়াহাটি, ৪ অক্টোবর : মহালয়ার সাত-সকালে এক ঐতিহাসিক ক্ষণের সাক্ষী হয়ে রইল গৌহাটি বিশ্ববিদ্যালয়। এই প্রথম উত্তর-পূর্বের এই মর্যাদাপূর্ণ বিদ্যাতীর্থে মহা সমারোহে অনুষ্ঠিত হল “আগমনী উৎসব”। ‘বাঙালি ছাত্র সমাজ, গৌহাটি বিশ্ববিদ্যালয়’-এর পক্ষ থেকে আয়োজিত হয়েছিল এই বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান। বিশ্ববিদ্যালয়  চত্বরে আসুর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের পাশে কমিউনিটি হলে আয়োজিত এই আগমনী উৎসব অনুষ্ঠান আয়োজন করে অভূতপূর্ব নজির গড়ে বাঙালি ছাত্র সমাজ। এতে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিভিন্ন বিভাগের ছাত্র-ছাত্রী, অধ্যাপক, গবেষকবৃন্দ এতে স্বতঃফুর্তভাবে যোগদান করেন।

এ দিন নব পত্রিকার সম্মুখে প্রদীপ প্রজ্বলন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রাক্তন অতিথি অধ্যাপক তথা কটন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রাক্তন প্রধান ও “বাংলা সাহিত্য সভা”-র রাজ্য সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত চক্রবর্তী। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য অধ্যাপকরা। ছিলেন রূপশ্রী দেবনাথ, সঞ্জয় ভট্টাচার্য, বরুণকুমার সাহা, সমীর সরকার, রমা দাস, শ্যামাশ্যাম কৃষ্ণকিশোর চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন অসম সরকারের উন্নয়ন পর্ষদের সদস্য তথা কটননিয়ান ও তরুণ শিল্পপতি তুহিন কাশ্যপ দেব।

এ দিন অনন্য কণ্ঠে চণ্ডীপাঠের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন বাংলা বিভাগের বিদ্যার্থী বিউস ভাওয়াল। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা একে একে ধুনুচি নাচ, ভক্তিমূলক সংগীত ও নৃত্য পরিবেশন করে অনুষ্ঠানকে এক উৎসবে পরিণত করে তোলে। ঢাকের তালে ধুনুচি নাচ পরিবেশন করেন প্রীতম ভৌমিক, রাজশ্রী ভট্টাচার্য ও বিউশ ভাওয়াল। সবাইকে অবাক করে দিয়ে সমস্ত শিল্পীদের সাথে একেবারে পেশাগত ঢাকির মেজাজে ঢাক বাজিয়েছেন অধ্যাপক প্রশান্ত চক্রবর্তী। তাঁর ঢাক বাজানো দেখে আর থাকতে পারেননি রূপশ্রী দেবনাথ ও তুহিন কাশ্যপ দেব। তাঁরাও একেএকে ঢাক বাজিয়ে আসর গরম করে তোলেন। রূপশ্রী দেবনাথ এরপর একটি অসাধারণ আগমনীর গান গেয়ে শোনান।

অনুষ্ঠানে একক নৃত্য ও সংগীতে ছিলেন যথাক্রমে সংগীতা মণ্ডল, মৃগাংশী ঘোষ, বৈশালী দাস ও বিউস ভাওয়াল। অনুষ্ঠানের মুখ্য আকর্ষণ ছিল ছাত্র-ছাত্রীদের দ্বারা অভিনীত “মহিষাসুরমর্দিনী পালা”। পালা অভিনয়ে ছিলেন দুর্গা : অনুপমা রায়, মহিষাসুর : শিবা দাস, নৃত্যে : বিউশ ভাওয়াল, জয়দীপ নাথ, রাজশ্রী ভট্টাচার্য, বিশ্বজিৎ দাস, লিজা রায়, রিয়া দত্ত ও সংগীতা মণ্ডল।

এরপর ছিল আমন্ত্রিত অতিথি শিল্পীদের সংগীতানুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে কলকাতা থেকে আগত বিশিষ্ট কণ্ঠশিল্পী গোবিন্দ ঘোষের একের পর এক আগমনীর গান দর্শক-শ্রোতাদের মাতিয়ে তোলে। তাঁকে তবলাসংগত করেন তাঁরই ছেলে উদ্দালক। দ্বিতীয় পর্বে ছিলেন আমন্ত্রিত শিল্পী ছিলেন পাণ্ডুর বিশিষ্ট কণ্ঠশিল্পী সুমিতা পাল। সুমিতা আর প্রমিথিউস(অন্তর) চক্রবর্তীর “বলদে চড়িয়া শিবে শিঙায় দিলা হাঁক” অনুষ্ঠানকে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে দেয়। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে দলে দলে বিদ্যার্থী ও অধ্যাপকগণ ধুনুচি নাচ এবং সিঁদুর খেলার মাধ্যমে আনন্দ উৎসবে মেতে উঠেন। এখানেও ঢাক বাজিয়েছেন ড. প্রশান্ত চক্রবর্তী।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন সংযুক্তা সূত্রধর। সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বাঙালি ছাত্র সমাজ, ২০২৪-২৫ বর্ষের সভাপতি মঙ্গল শীল এবং সাধারণ সম্পাদক অঙ্কুশ বিশ্বাস।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker