NE UpdatesHappeningsBreaking News
গির্জাতেই প্রচার শেষ, মঙ্গলবার মিজোরামে বিধানসভার ভোট
ওয়েটুবরাক, ৬ নভেম্বর : নির্বাচনী প্রচারের শেষদিনে ব্যতিক্রমী দৃশ্যই দেখা গেল মিজোরামে। কোনও সভা-সমিতি, স্লোগানবাজি নেই। প্রার্থীরা সবাই ছুটেছেন এ গির্জায়, সে গির্জায়। রাজনৈতিক দলের নেতারাও গির্জাকেন্দ্রীক ঘোরাফেরাই করলেন সারাদিন। তবে ফাদার বা যাজকরা ভোটের ব্যাপারে কোথাও কোনও কথা বলেননি।
সরব প্রচারের শেষদিন রবিবার পড়ায় বড় সভা-সমিতি শনিবারই সেরে নিয়েছে সবাই। জেডপিএম সভাপতি লালডোহামা বলেন, এপ্রিল থেকে আমাদের নির্বাচনী কাজকর্ম চলছে, তাই শেষদিন নিয়ে আমাদের আলাদা কোনও পরিকল্পনা ছিল না। এমএনএফ নেতৃবৃন্দও তাঁদের প্রচারকার্য নিয়ে সন্তোষই প্রকাশ করলেন।
তবে বিজেপি এবং কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব শেষদিনে সামাজিক মাধ্যমকেই হাতিয়ার করলেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে ভিডিয়ো বার্তা পাঠিয়ে ভোট প্রার্থনা করেন।
এমএনএফকে দুর্নীতির জন্য এবং বিজেপিকে বিভাজনের রাজনীতির জন্য দোষারোপ করেন খাড়গে। তিনি বলেন, উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যের প্রতি শতবর্ষ প্রাচীন দলটির যে দায়বদ্ধতা তা বহুবার প্রমাণিত। বিদায়ী বিধানসভার প্রধান বিরোধী শক্তি জেডপিএমকেও ছেড়ে কথা বলেননি কংগ্রেস সভাপতি। তাঁর অভিযোগ, এমএনএফের মতো এরাও বিজেপির এজেন্ট। গেরুয়া দলটির কী দোষ। খাড়গে বলেন, আরএসএস-বিজেপি দেশের সংস্কৃতি, মূল্যবোধ, ধর্মীয় ভাবনায় বারবার আঘাত করছে। এখন মোদী সরকারের মূল লক্ষ্য, মিজোরামের জমি-জঙ্গল দখল করে শিল্পপতি বন্ধুদের হাতে তুলে দেওয়া।
মণিপুরের উদাহরণ টেনে খাড়গে বলেন, এ ভাবেই তারা সে রাজ্যে ঢুকেছিল, পরে রাজ্যবাসীর মধ্যে বিভাজন ঘটায়। এরই জেরে ছয়মাস ধরে মণিপুর জ্বলছে। হাজার হাজার জনজাতি মানুষকে মিজোরামে গিয়ে আশ্রয় নিতে হয়েছে। এরা উত্তর-পূর্বের সামাজিক সম্পর্কের জায়গাটাই ধ্বংস করে দিয়েছে।
১৯৮৬ সালে রাজীব গান্ধী মিজোরাম চুক্তি করেছিলেন, এরই সূত্র ধরে পরের বছর পূর্ণাঙ্গ রাজ্যের স্বীকৃতি মেলে। সে প্রসঙ্গ উল্লেখ করে খাড়গে বলেন, পরবর্তী কংগ্রেস সরকার সমূহ মিজোরামের শান্তি, সংস্কৃতি ও ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্রকে গুরুত্ব দিয়েছে। সে সব বিষয় মাথায় রেখে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে ভোটদানের আহ্বান জানান তিনি। শুধু বিজেপিকেই নয়, পরে যাঁরা বিজেপিকেই সমর্থন করবে, তাদেরও এ বার ভোট না দিতে পরামর্শ তাঁর।
এর আগে একই সুরে বার্তা পাঠিয়েছিলেন সোনিয়া গান্ধী। তিনিও বলেন, কংগ্রেস কোনও সময় বিজেপির সঙ্গে আপস করেনি, করবেও না। তবে প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁর ভিডিয়ো বার্তায় কাউকে দোষারোপ না করে বিজেপির জন্য ভোট চান। এমএনএফ, জেডপিএমের যেমন নাম নেননি, তেমনি একবারের জন্য কংগ্রেসের কথা উল্লেখ করেননি। এমনকী ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার আগে থেকে মণিপুর ইস্যুতে সবাই মিলে তাঁকে বিঁধতে থাকলেও এ দিন মোদী মণিপুর প্রসঙ্গই আনেননি তাঁর ভিডিয়ো বার্তায়। বারবার বলেন, “মারভেলাস মিজোরাম” তৈরির জন্য বিজেপি প্রার্থীদের জয়ী করুন। উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা, ব্রজগেজ সম্প্রসারণ, আয়ুষ্মান কার্ড, রেশন কার্ডে বিনামূল্যে চাল ইত্যাদিকে তাঁর সরকারের কৃতিত্ব বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী।
আগামী ৭ নভেম্বর চল্লিশ সদস্যের মিজোরাম বিধানসভার নির্বাচন। ভোট গণনা ৩ ডিসেম্বর।