India & World UpdatesHappeningsBreaking News
অপূরণীয় ক্ষতি ! কোভিড কেড়ে নিল কবি শঙ্খ ঘোষকেও
ওয়েটুবরাক, ২১ এপ্রিলঃ চলে গেলেন কবি শঙ্খ ঘোষ। বেশ কিছুদিন ধরে বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন কবি। এর মধ্যে গত ১৪ এপ্রিল করোনায় সংক্রমিত হন। বাড়িতেই নিভৃতবাসে ছিলেন। চিকিৎসা চলছিল।কিন্তু মঙ্গলবার রাতে আচমকা তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। বুধবার সকালে তাঁকে ভেন্টিলেটরে দেওয়া হয়। কিন্তু সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে বেলা সাড়ে ১১টায় শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর৷
দীর্ঘ সাহিত্যজীবনে একাধিক সম্মানে সম্মানিত হয়েছেন শঙ্খ ঘোষ। ১৯৭৭ সালে ‘বাবরের প্রার্থনা’ কাব্যগ্রন্থটির জন্য তিনি সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার পান। ১৯৯৯ সালে কন্নড় ভাষা থেকে বাংলায় ‘রক্তকল্যাণ’ নাটকটি অনুবাদ করেও সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার পান তিনি। একই বছরে দেশিকোত্তম সম্মানে ভূষিত করা হয় তাঁকে। ২০১১ সালে পান পদ্মভূষণ সম্মান। ২০১৬ সালে পান জ্ঞানপীঠ পুরস্কার। এ ছাড়াও রবীন্দ্র পুরস্কার, সরস্বতী সম্মান পেয়েছেন।
Shri Shankha Ghosh will be remembered for his contributions to Bengali and Indian literature. His works were widely read and admired. Saddened by his demise. Condolences to his family and friends. Om Shanti.
— Narendra Modi (@narendramodi) April 21, 2021
‘দিনগুলি রাতগুলি’, ‘বাবরের প্রার্থনা’, ‘মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে’, ‘গান্ধর্ব কবিতাগুচ্ছ’, ‘পাঁজরে দাঁড়ের শব্দ’, ‘মূর্খ বড় সামাজিক নয়’ তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ। রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ হিসেবেও তিনি প্রসিদ্ধ।
শঙ্খ ঘোষ কর্মজীবনে বঙ্গবাসী কলেজ, সিটি কলেজ, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন। পড়িয়েছেন বিশ্বভারতী এবং দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়েও। কেন্দ্র হোক বা রাজ্য সরকার, যে কোনও জনবিরোধী নীতি বা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বরাবরই সোচ্চার হয়েছেন তিনি। শঙ্খ ঘোষের প্রয়াণে শোক জ্ঞাপন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গান স্যালুট ছিলকবির অপছন্দের, তাই নীরবে শেষকৃত্য সম্পন্ন হোক, এমনটাই চাইছে পরিবার-পরিজনেরা।
আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক তপোধীর ভট্টাচার্য কবি শঙ্খ ঘোষকে ‘অনমনীয় মেরুদণ্ড ও চিরজাগ্রত বিবেক কবি ও পথপ্রদর্শক ভাবুক’ বলে অভিহিত করেন৷ তাঁর প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করে তপোধীরবাবু বলেন, “পিশাচ-দানব ও তাদের প্রেতসেনার তাণ্ডবে বাংলা যখন আত্মবিস্মৃতির অন্ধকারে নিমজ্জমান, কোথাও কোনো বাতিঘর রইল না৷”
বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নীতীশ ভট্টাচার্য বলেন, “শঙ্খ ঘোষ প্রয়াত হওয়া আমাদের সামগ্রিক বাংলা ভাষা- সংস্কৃতির সমূহ ক্ষতি। ভাষাশহিদ স্মারক সমিতি কলকাতা, বঙ্গ সংস্কৃতি উৎসব সমিতির সভাপতির পাশাপাশি সর্বভারতীয় বঙ্গভাষী সমন্বয় সমিতিরও আমৃত্যু সভাপতি ছিলেন তিনি। বাংলা ভাষা-সংস্কৃতির মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য সতত সোচ্চার ছিলেন। আসামের জাতীয় নাগরিক পঞ্জীর বৈষম্য, ঝাড়খণ্ড এবং আন্দামানে বাংলা ভাষায় শিক্ষার বৈষম্য নিয়ে অকপটে বক্তব্য রেখেছিলেন। আমরা হারালাম অভিভাবক ও পরম সুহৃদকে।”