Barak UpdatesHappeningsBreaking News
কোভিডে প্রয়াত বরাকের সংগ্রামী ব্যক্তিত্ব তারামণি চৌধুরী
ওয়েটুবরাক, ১৮ মেঃ দেড়দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন রাজনীতি থেকে। এমনকী সমাজজীবনেও গুটিয়ে ছিলেন। অথচ এই অঞ্চলে ভাষা আন্দোলন হোক বা উদ্বাস্তুদের সুরক্ষার প্রশ্ন আসুক, কিংবা জনতা দলের শক্তিবৃদ্ধি কি ইউএমএফ প্রতিষ্ঠা–তারামণি চৌধুরী ছিলেন প্রথম সারিতে। নিজে কখনও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি। কিন্তু অনেকের নির্বাচনে জেতার পেছনে তিনিই ছিলেন মুখ্য ভূমিকায়। এ জায়গায় গোলাম ওসমানির কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করতে হয়। ১৯৭৭ সালে বড়খলা থেকে জনতা দলের টিকিটে বিধায়ক হওয়া, মন্ত্রিত্বে সুযোগ পাওয়া, এমনকি বরপেটায় কংগ্রেস সাংসদ হিসেবে জেতা সবেতেই তারামণিবাবু ছিলেন নেপথ্যের কারিগর।
তিনি আজ মঙ্গলবার সকালে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। রেখে গিয়েছেন স্ত্রী, দুই পুত্র ও তিন মেয়ে সহ অগণিত স্বজন-শুভানুধ্যায়ীদের। গত রবিবার দুপুরে তাঁকে শিলচরের ভ্যালি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। জ্বর, সর্দি, শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। সোমবার দিনরাত কোভিডের সঙ্গে লড়াই করেন। মঙ্গলবার সকাল আটটায় আর পারেননি, হেরে গেলেন অতিমারির কাছে।
তারামণি চৌধুরীর পিতা গাভরুমিয়া চৌধুরী ছিলেন এই অঞ্চলের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। পেশাগত জীবনে তারামণিবাবু পারিবারিক ব্যবসাই দেখভাল করেছেন। উদ্বাস্তুদের সুরক্ষায় তাঁর সক্রিয়া ভূমিকা দীর্ঘকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে। বাংলাদেশ থেকে আসা উদ্বাস্তুদের জন্য নিজের বাড়িতে ক্যাম্প খুলে দিয়েছিলেন। সেই সময়ে এমন অসাম্প্রদায়িক মানসিকতার জন্য তিনি সকল অংশের মানুষের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন। একসময় কৃষক আন্দোলনেও নেতৃত্ব দিয়েছেন। ভূমিহীন কৃষকদের ভূমি পাইয়ে দিতে বহু খাটাখাটুনি করেছেন।
তাঁর মৃত্যুতে বরাক উপত্যকায় আজ গভীর শোক পরিলক্ষিত হয়।