Barak UpdatesHappeningsBreaking News
কাঁটাতারের ও পারের বাসিন্দাদের এ পারে আনতে উদ্যোগ, করিমগঞ্জে নোটিশ জারি
ওয়েটুবরাক, ১৭ জুন : করিমগঞ্জ জেলায় কাঁটাতারের ও পারে বসবাসকারী পরিবারগুলিকে এ পারে নিয়ে আসতে সরকারি তরফে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে৷ আন্তর্জাতিক সীমান্ত ঘেষা নয়টি কাঁটাতার ঘেরা গ্রামে দেড়শো পরিবার রয়েছে৷ আগামী ৩০ জুনের মধ্যে সব কটি বাড়িতে নোটিশ পাঠিয়ে জেলাশাসকের অফিসে গিয়ে নাম লেখাতে বলা হয়েছে৷ সঙ্গে প্রয়োজনীয় নথি জমা দিতে করতে হবে৷
দুর্যোগ মোকাবিলা দফতরের প্রধান সচিব জ্ঞানেন্দ্র দেও ত্রিপাঠি জানিয়েছেন, এ নিয়ে কয়েক দিন ধরে রাজ্য সরকার দফায় দফায় বৈঠক করে চলেছে৷
কাঁটাতারের ওপারে মানুষেরা বিভিন্ন ধরনের নাগরিক পরিষেবা থেকে বঞ্চিত৷ এরা সরকারি সুবিধাগুলি ঠিকঠাক পান না, সঙ্গে রয়েছে নিরাপত্তার সমস্যা৷ বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের সীমানা পুরো উন্মুক্ত৷ তাই বাংলাদেশি দুর্বৃত্তরা প্রায়ই চুরি-ডাকাতির জন্য ঢুকে পড়ে৷ বিশেষ করে লকডাউনের সময় তাদের চরম দুর্বিসহ জীবন কাটাতে হয়েছে৷ আন্তর্জাতিক সীমান্ত পুরো সিল করে দেওয়ায় দীর্ঘদিন মূল ভূখণ্ডে আসতে পারেননি তাঁরা৷ গেট খোলেনি বিএসএফ৷ অধিকাংশ গৃহকর্তা দিনমজুর৷ গেট পেরিয়েই তাদের উপার্জন৷ রুজি বন্ধ হওয়ায় তাদের ত্রাণ নির্ভর দিন কাটাতে হয়েছে৷ এ ছাড়া, ও পারে নেই স্কুল, নেই কোনও হাসপাতাল৷ বিএসএফের বেঁধে দেওয়া সময়ে গেট পেরোতে হয় বলে তারা দিনমজুরের কাজেও পুরো মজুরি পান না৷ ছেলে-মেয়ের বিয়ে দিতেও সমস্যা দেখা দেয়৷
তাই তাদের এ পারে নিয়ে আসার চেষ্টা শুরু হয়েছে৷ বুধবার এ নিয়ে রাজ্য সরকার বিএসএফ সহ বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেছে৷ এ পারে এনে ওইসব পরিবারগুলিকে জমি দিয়ে কতটা সাহায্য করা যায়, তা খতিয়ে দেখা হয়৷
ত্রিপাঠি জানিয়েছেন, তাদের এ পারে আনার ক্ষেত্রে কোনও ধরনের প্রতিবন্ধকতা দেখা দিলে প্রতিটি গ্রামকে আরও এক প্রস্থ কাঁটাতারে ঘিরে দেওয়া হবে৷ বাংলাদেশ থেকে পুরোপুরি পৃথক করা হবে৷ এই কথা বিএসএফের ইন্সপেক্টর জেনারেল মৃদুলকুমার সোনোয়ালও কয়েক মাস আগেই জানিয়েছিলেন৷ গ্রামবাসীদের নিরাপত্তার স্বার্থে প্রত্যেকটি গ্রামকে সম্পূর্ণ কাঁটাতারে ঘিরে ফেলা হোক, তারা সরকারের কাছে প্রস্তাব জানিয়েছেন৷
লাফাশাইল, ঝরাপাতা, গোবিন্দপুর প্রভৃতি গ্রামের মানুষ নোটিশ পেয়ে আনন্দে আত্মহারা নন৷ কারণ এই উদ্যোগকে এখনই পুরোপুরি ভরসা করতে পারছেন না৷ এই ধরনের চেষ্টা আগেও কয়েকবার নেওয়া হয়েছে৷ ফল মেলেনি৷ তবে সরকার তাদের বাড়ি বানিয়ে দিয়ে মূল ভূখণ্ডে আনার জন্য প্রকৃতই উদ্যোগ নিলে তাঁরা সব ধরনের সহায়তা করবেন বলেই জানিয়েছেন৷ তবে কাঁটাতারে সম্পূর্ণ ঘেরার প্রস্তাব যে তাঁদের মোটেও সহায়ক হবে না, তা তাঁরা জেলা প্রশাসনকে জানিয়ে দেবেন৷