NE UpdatesBarak UpdatesHappeningsBreaking News

কাছাড় ওএনজিসিতে ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছে বিডিএফ

ওয়েটুবরাক, ১৭ জুন: কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষের অনুমোদন থাকা সত্ত্বেও অয়েল এন্ড ন্যাচারাল গ্যাস কর্পোরেশনের বরাক উপত্যকার দায়িত্বপ্রাপ্ত স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কোনও নতুন প্রকল্প চালু করছেন না৷ উপরন্তু যেসব পরীক্ষণ প্রকল্পের কাজ শেষ পর্যায়ে ছিল, সেগুলোকে বিভিন্ন অজুহাতে বন্ধ করছেন৷ এই অভিযোগ এনে এ সবের পিছনে বৃহৎ ষড়যন্ত্রের আভাস দিল বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট। তাঁরা ক্ষোভ প্রকাশ করে এই ব্যাপারে বরাকের জনপ্রতিনিধিদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

বিডিএফ এর মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় বলেন, বিগত ২০১১ সালে দিল্লি থেকে আগত বিশিষ্ট ভূতত্ত্ববিদ পি কে নন্দী বরাক সফরে এসে এই উপত্যকায় যে তেল ও গ্যাসের বিশাল ভান্ডার রয়েছে তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিলেন। প্রদীপবাবু বলেন, তেল এবং গ্যাস ক্ষেত্রে এই উপত্যকার  সম্পদের যথাযথ ব্যবহার হলে বরাক উপত্যকার চেহারাই বদলে যেতে পারে। কারণ যে কোনও ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্পের জন্য শক্তির প্রয়োজন, যা এখান থেকেই উপলব্ধ হতে পারে । তার ফলে স্থানীয় স্তরে গড়ে উঠতে পারে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, সিএনজি প্ল্যান্ট, স্টিল-রড-ইট শিল্প। এছাড়া চা বাগান ও অন্যান্য যেসব শিল্পে বর্তমানে কয়লা ব্যবহৃত হচ্ছে তারও বিকল্প হতে পারে এই ক্ষেত্র।

প্রদীপবাবুর কথায়, ওএনজিসি কাছাড় ফরোয়ার্ড বেস আগে আসাম আ্যসেটের অধীনে থাকায় বৈষম্যের শিকার হতো৷ পরে ইউনিয়ন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তিবর্গের যৌথ প্রচেষ্টায় ২০১৭ সালে এটি ‘আসাম আরাকান ফল্ট বেল্ট এক্সপ্লোরেটরি আ্যসেট’-এ উন্নীত হয় এবং দিল্লি তথা হেড কোয়ার্টারের সাথে প্রত্যক্ষ যোগাযোগের ফলে কাজে অগ্রগতিও আসে। গত ২০১৯ -র এপ্রিলে নতুন আ্যসেট ম্যানেজার দায়িত্ব নেবার পর থেকেই রহস্যজনক ভাবে কাজে ঢিলেমি দেওয়া হচ্ছে, যা বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অঙ্গ বলে তাঁরা মনে করছেন। উদাহরণস্বরূপ কিছুদিন আগে পাঁচগ্রামের নিকটে সম্ভাবনাময় বিপি -২ তৈলক্ষেত্রের খননকাজ শেষ করে অকাল বন্যার দোহাই দিয়ে প্রোডাকশন টেস্টিং না করে রিগ তুলে নেওয়া হয়েছে এবং উৎপাদনশীল তৈলক্ষেত্রটির গর্ভহত্যা করে বরাক উপত্যকাকে একটি সম্ভাবনাময় তৈলক্ষেত্র থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। একইভাবে হেড কোয়ার্টার থেকে ১৯ টি ড্রিলসাইট প্রস্তুতির অনুমোদন দেওয়া সত্ত্বেও ‘এনভারনমেন্ট ক্লিয়ারেন্স’ না পাওয়ার অজুহাত দেখিয়ে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ নতুন কোনও ড্রিলিং  করাচ্ছে না৷ উল্টে কর্মরত দুটি রিগকে অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা আশঙ্কা করছি যে এমন চললে আগামীতে উৎপাদনহীনতাকে কারণ দেখিয়ে বরাকের এই ‘ এ এএফবি এক্সপ্লোরেটরি অ্যাসেট’ কেই বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে। বিডিএফ মুখ্য আহ্বায়ক বলেন, এ কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না এবং  এখন থেকেই এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলা প্রয়োজন৷

বিডিএফের আরেক আহ্বায়ক পার্থ দাস বলেন,  সোনাবাড়িঘাটে ইতিমধ্যে বিশাল আকারের গ্যাস কন্ট্রোলিং টাওয়ার গড়ে তোলা হয়েছে যার মাধ্যমে শিলচর শহরের বাড়িতে বাড়িতে ২৫০/৩০০ টাকা মাসিক হারে পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহ সম্ভব। এছাড়া বাঁশকান্দি, আদমটিলা ইত্যাদি বেস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে রাজ্য সরকারের কাছে বিক্রি করারও সুযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কেন এইসব প্রচেষ্টা নিচ্ছেন না তা অজ্ঞাত।

বিডিএফ যুব ফ্রন্টের মুখ্য আহ্বায়ক কল্পার্নব গুপ্ত ও আহ্বায়ক ইকবাল নাসিম চৌধুরী বলেন,  আসাম আ্যসেটের অধীনে না থাকা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় স্তরে লবিবাজি করে ও বরাকে ওএনজিসির বিভিন্ন পদে স্থানীয় প্রার্থীদের বঞ্চিত করে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা থেকে প্রার্থী নিয়োগ করে পাঠানো হচ্ছে। বর্তমান ম্যানেজার বাঙালি হওয়া সত্ত্বেও এসবের কোনও প্রতিবাদ করেন না । এও জানা গেছে,  ইদানীং কর্মীদের একদিনের বেতন কর্তন করে প্রথা অনুযায়ী কেন্দ্রীয় রিলিফ ফান্ডে না পাঠিয়ে তিনি রাজ্য সরকারকে টাকা পাঠিয়েছেন। অবিলম্বে এই সমস্ত ব্যাপারে সমাধান না হলে যুব ফ্রন্ট  মাঠে নামবে বলে হুমকি দিয়েছেন তারা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker